বিএনএ,নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়(এনএসইউ): “মানবতাবাদ, নীতি, ও কূটনীতি” বিষয়ে সেন্টার ফর পিস স্টাডিজ (সিপিএস) ১০ সপ্তাহের একটি সার্টিফিকেট কোর্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আতিকুল ইসলাম এ কথা বলেন। সিপিএস নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাউথ এশিয়ান ইন্সটিটিউট অফ পলিসি এন্ড গভার্নেন্স (এসআইপিজি)র অধীনে শান্তি প্রতিষ্ঠা বিষয়ক গবেষণা ও এ্যডভোকেসি কার্যক্রম নিয়ে কাজ করে আসছে ২০১৯ সাল থেকে।
শনিবার(৬ ফ্রেবুয়ারি) কোর্স সমন্বয়কারী ড. ক্যাথরিন লির সঞ্চালনায় আয়োজিত উদ্বোধনী পর্বে এসআইপিজি ও সিপিএস এর পরিচালক ড. এস কে তৌফিক এম হক কোর্সটি আয়োজনের প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন। বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অফ পিস সাপোর্ট অপারেশন ট্রেইনিং (বিপসট) এর সাথে পার্টনারশিপে আয়োজিত এ কোর্সটি বাংলাদেশে আয়োজিত প্রথম কোর্স যা মানবতাবাদ, নীতি, ও কূটনীতি বিষয়ে আলোচনার উদ্যোগ নিয়েছে।
কোর্সের উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করছেন রাষ্ট্রদূত এম শহীদুল হক এবং কোর্স সমন্বয়কারী হিসেবে রয়েছেন সিপিএস এর উপদেষ্টা ড. ক্যাথরিন লি। ৬ ফেব্রুয়ারি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আতিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে, আমেরিকান দূতবাসের রাষ্ট্রদূত আর্ল আর মিলার এবং বিপসট-প্রধান মেজর জেনারেল আবদুল কাইয়ুম মোল্লাহ, এনডিসি, পিএসসি এর উপস্থিতিতে জুমে এ কোর্সের উদ্বোধনী হয়। আমেরিকান দূতবাসের রাষ্ট্রদূত জনাব মিলার তাঁর উদ্বোধনী বক্তব্যে বলেন, আমেরিকান দূতাবাস সবসময়ই মানবতাবাদের পক্ষে কাজ করে যাচ্ছে। বিশেষ করে রোহিঙ্গা সংকটে সহায়তা প্রদানসহ মানবিক কার্যক্রমের বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমরা বাংলাদেশের পাশে আছি।
বিপসট-প্রধান মেজর জেনারেল আবদুল কাইয়ুম মোল্লাহ, এনডিসি, পিএসসি, উল্লেখ করেন, মানবতার বিরুদ্ধে সংকট ও চ্যালেঞ্জগুলো ক্রমশ: বদলে যাচ্ছে। একটা নিরাপদ ও শান্তিময় পরিবেশ নিশ্চিত করাই আমাদের লক্ষ্য। আমি বিশ্বাস করি, এ কোর্সে যারা অংশ নিচ্ছেন, তারা ভবিষ্যতে মানবতাবোধ বিপন্নকারী বিষয়গুলো প্রতিহত করা ও শান্তি রক্ষায় ভূমিকা রাখতে সাহায্য করবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতি উপাচার্য অধ্যাপক আতিকুল ইসলাম তাঁর বক্তব্যে বলেন, জ্ঞান লাভে, জ্ঞান বিতরণে এবং তা মানবতাবাদে কাজে লাগানো বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব। সেই অবস্থান থেকে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় সব সময় সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে। মানবতাবাদের মূল নীতিগুলো – মৌলিক অধিকার পূরণ, শান্তিময় পরিস্থিতিতে বসবাস ইত্যাদি – বাস্তবায়ন আমাদেরই দায়িত্ব। রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে তাই আমেরিকান দূতাবাসসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে আরো সক্রিয় হতে হবে। এ কোর্সে অংশ নিচ্ছেন বাংলাদেশ, কানাডা, জাপান, ও ইতালি থেকে শিক্ষকতা, সাংবাদিকতা, সরকারি-বেসরকারি ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ব্যক্তিবৃন্দ। ৩০জনের জন্যে কোর্সটি ডিজাইন করা হলেও চল্লিশের অধিক আবেদনপত্র পাওয়া গিয়েছে আগ্রহী অংশগ্রহণকারীদের কাছ থেকে।
কোর্সের প্রশিক্ষকবৃন্দ অংশ নেবেন বাংলাদেশ, অষ্ট্রেলিয়া, আমেরিকা, থাইল্যান্ড প্রভৃতি দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, জাতিসংঘ ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকে। এ কোর্সে যেসব বিষয়ে অংশগ্রহণকারীদেরকে ধারণা দেয়া হচ্ছে সেগুলোর মধ্যে মানবতাবাদের ধারণা, নীতি ও এ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর ইতিহাস, উৎপত্তি, বিকাশ, ও কাজের ব্যাপ্তি, দ্বন্দ্ব নিরসন ও মানবতামূলক উদ্যোগ, জলবায়ু পরিবর্তন ও বাস্তুচ্যুতিতে মানবতামূলক কার্যক্রম, মানবতাবাদের সংকটে মানবাধিকার ও লিঙ্গ, মানবতাবাদের প্রেক্ষাপটে রুয়ান্ডা, দারফুর ও সোমালিয়ার কেস স্টাডি, মানবিক কূটনীতি, মানবতাবাদের ভবিষ্যত ইত্যাদি।
অনলাইনে আয়োজিত হলেও শরণার্থীদের জন্যে মানবতাবাদের দৃষ্টান্ত কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবিরে কোর্সে অংশগ্রহণকারীদের সশরীরে পরিদর্শন এ কোর্সের অন্যতম উল্লেখযোগ্য দিক। বাংলাদেশ সময় প্রত্যেক শনিবার বিকেলে ৪ ঘন্টাব্যাপী এ কোর্স এপ্রিলের ১০ তারিখ পর্যন্ত চলবে।