বিএনএ, ঢাকা : চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে সারাদেশে ১৫৯টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ঘটেছে। এসব দুর্ঘটনায় মারা গেছে ১৬৮ জন। গত বছর একই সময়ে মোটর সাইকেল দুর্ঘটনা হয়েছিল ৮৯টি যেগুলোতে প্রাণ হারিয়েছিল ১০৩ জন।
শনিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) রোড সেফটি ফাউন্ডেশন থেকে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। ফাউন্ডেশন সাতটি জাতীয় দৈনিক, পাঁচটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমের তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে বলে জানিয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, তুলনামূলক চিত্রে গত বছরের তুলনায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা বেড়েছে ৭৮ শতাংশ এবং প্রাণহানি বেড়েছে ৬৩ শতাংশ। রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের হিসাবে, ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে। এ বিভাগে ১১২টি দুর্ঘটনায় ১২৮ জন নিহত হয়েছেন। সবচেয়ে কম দুর্ঘটনা ঘটেছে সিলেট বিভাগে। এই বিভাগে ৩২টি দুর্ঘটনায় ২৭ জন নিহত হয়েছেন। একক জেলা হিসেবে ঢাকা জেলায় সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে। ঢাকায় ৩১ দুর্ঘটনায় ৩৬ জন নিহত হয়েছেন। আর সবচেয়ে কম দুর্ঘটনা ঘটেছে ঝালকাঠি জেলায়। এ জেলায় দুটি দুর্ঘটনায় একজন নিহত হয়েছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জানুয়ারি মাসে দেশে মোট সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৪২৭টি। নিহত ৪৮৪ জন এবং আহত ৬৭৩ জন। নিহতের মধ্যে নারী ৯২, শিশু ৪৭। ১৫৯ টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত ১৬৮ জন, যা মোট নিহতের ৩৪.৭১ শতাংশ। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ৩৭.২৩ শতাংশ। দুর্ঘটনায় ১৪৬ জন পথচারী নিহত হয়েছে, যা মোট নিহতের ৩০.১৬ শতাংশ। যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৫৩ জন, অর্থাৎ ১০.৯৫ শতাংশ।
এই সময়ে ৪টি নৌ-দুর্ঘটনায় ৭ জন নিহত, ৪ জন আহত এবং ৬ জন নিখোঁজ হয়েছে। ১১টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ১৪ জন নিহত এবং ৬ জন আহত হয়েছে।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বলছে, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ১৫৩টি (৩৫.৮৩%) জাতীয় মহাসড়কে, ১০৭টি (২৫.০৫%) আঞ্চলিক সড়কে, ৯৭টি (২২.৭১%) গ্রামীণ সড়কে, ৫৯টি (১৩.৮১%) শহরের সড়কে এবং অন্যান্য স্থানে ১১টি (২.৫৭%) সংঘটিত হয়েছে।
দুর্ঘটনাসমূহের ৮৮টি (২০.৬০%) মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১৩৯টি (৩২.৫৫%) নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে, ১৪৪টি (৩৩.৭২%) পথচারীকে চাপা/ধাক্কা দেয়া, ৪৭টি (১১%) যানবাহনের পেছনে আঘাত করা এবং ৯টি (২.১০%) অন্যান্য কারণে ঘটেছে।
দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে দায়ী- ট্রাক-কাভার্ডভ্যান-পিকআপ ২৪.৭৫ শতাংশ, ট্রাক্টর-ট্রলি-লরি ৩.৬৫ শতাংশ, মাইক্রোবাস-প্রাইভেটকার-অ্যাম্বুলেন্স-জিপ ৩.২৩ শতাংশ, যাত্রীবাহী বাস ১১.৬৭ শতাংশ, মোটরসাইকেল ২৩.০৬ শতাংশ, থ্রি-হুইলার (ইজিবাইক-সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান-টেম্পু-লেগুনা-মিশুক) ২০.৮১ শতাংশ, নসিমন-ভটভটি-আলমসাধু-মাহিন্দ্র-বোরাক-টমটম ৮.২৯ শতাংশ, রিকশা-রিকশাভ্যান, বাই-সাইকেল ২.৮১ শতাংশ এবং অন্যান্য (পুলিশের পিকআপ, কোস্টগার্ডের ট্রাক, হ্যান্ড ট্রলি, হ্যালোবাইক, মিকচার মেশিন, মাটিকাটার ভেকু মেশিন গাড়ি, ডিসিসি’র ময়লাবাহী ট্রাক) ১.৬৮ শতাংশ।
বিএনএনিউজ/এইচ.এম।