বিএনএ, কুমিল্লা: কুমিল্লার যুবক আহাম্মদ উল্লাহ ইমতিয়াজ অপুর (৩২) হাত ধরে প্রেমের টানে বাংলাদেশে এসেছেন নাজিফা মুনজারিন সিনতা (২৫) নামে ইন্দোনেশিয়ার এক তরুণী। শুক্রবার (৪ অক্টোবর) দুপুরে কুমিল্লা নগরীর ঝাউতলা এলাকার হোটেল এলিট প্যালেসের কনভেনশন হলে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা হয়েছে তাদের। বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) রাতে কুমিল্লা নগরীর বাগিচাগাঁও এলাকার উইন্ড কনভেনশন সেন্টার ও পার্টি সেন্টারে তাদের গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান করা হয়।
নাজিফা মুনজারিন সিনতা মালয়েশিয়ায় অপুর সঙ্গে একই কম্পানিতে চাকরি করতেন। সেখান থেকে দুই বছর আগে দুইজনে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। গত ২৭ সেপ্টেম্বর অপুর সঙ্গে মালয়েশিয়া থেকে বাংলাদেশে আসেন ওই তরুণী।
বর আহাম্মদ উল্লাহ ইমতিয়াজ অপু কুমিল্লা নগরীর রেসকোর্স এলাকার শামসুদ্দিন আহাম্মদ ও ফরিদা ইয়াসমিনের ছেলে। নাজিফা মুনজারিন সিনতা ইন্দোনেশিয়ার মেডান রাজ্যের তেবিংতিংগি এলাকার বাসিন্দা উইলিয়াম সিনাগা ও মাসনিয়ার ডুলকর মেয়ে।
সিনতা বাংলাদেশে প্রবেশের পর ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। শুক্রবার মুসলিম ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী তাদের বিয়ের কাজ সম্পন্ন হয়।
বর আহাম্মদ উল্লাহ ইমতিয়াজ অপু জানান, দীর্ঘদিন ধরে মালয়েশিয়ায় প্রবাসজীবনে আছেন তিনি। সেখানে একটি কম্পানিতে চাকরির সুবাদে পরিচয় হয় একই কম্পানিতে কাজ করা সিনতার সঙ্গে। একপর্যায়ে ভালো বন্ধুত্ব হয় দুজনের। পরে ভালোবাসার সম্পর্কে জড়ান দুজন। সেই ভালোবাসাকে সত্যিকারের রূপ দিতে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন তারা।
তিনি বলেন, সিনতা মালয়েশিয়া থাকলেও তার পরিবার ইন্দোনেশিয়ায় বসবাস করেন। সে তার পরিবারকে জানিয়েই বাংলাদেশে এসেছে এবং পরিবারের সম্মতিতেই আমাকে বিয়ে করেছে। কয়েক দিন বাংলাদেশে থাকার পর ইন্দোনেশিয়ায় ফিরব আমরা। সেখানে গিয়ে সে দেশের রীতি অনুযায়ী আবার বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা পালন করা হবে তার পরিবারের পক্ষ থেকে।
আহাম্মদ উল্লাহ ইমতিয়াজ অপু আরো বলেন, সিনতা খুবই ভালো মেয়ে। তার সঙ্গে আমার দুই বছরের প্রেমের সম্পর্ক। তাকে জীবনসঙ্গীনি হিসেবে পেয়ে আমি খুবই ধন্য। আমরা যেন দাম্পত্য জীবনে সুখী হতে পারি সে জন্য সবার দোয়া চাই।
নাজিফা মুনজারিন সিনতা ইন্দোনেশিয়ার ভাষায় বলেন, বাংলাদেশের মানুষ খুবই আন্তরিক। আমি তাদের আতিথেয়তায় ভীষণ মুগ্ধ হয়েছি। এখানকার সবাই আমাকে আপন করে নিয়েছে। অপু পুরুষ হিসেবে অসাধারণ। সে অনেক কেয়ারিং একটা মানুষ। আমি ধন্য যে তাকে পেয়েছি।
আহাম্মদ উল্লাহ ইমতিয়াজ অপুর মা ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, আমার মনেই হয় না আমার ঘরে নতুন বউ এসেছে, মনে হচ্ছে আমার একটি মেয়ে ঘরে এসেছে। আমার তিনটা ছেলে, কোনো মেয়ে নেই। আজকে থেকে সিনতা আমার মেয়ে হয়ে থাকবে। আল্লাহর কাছে শোকর যে তিনি আমার মনের মতো একটি মেয়ে মিলিয়ে দিয়েছেন।
তিনি বলেন, বিদেশি মেয়েদের মনমানসিকতা এত সুন্দর হয়, এত আন্তরিক হয় সিনতাকে না দেখলে বুঝতে পারতাম না। সে আমার পুরো পরিবারের সঙ্গে মিশে গেছে।
বিএনএনিউজ/ বিএম