বিশ্ব ডেস্ক: ফ্রান্সের নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মিশেল বার্নিয়ের নাম ঘোষণা করেছেন প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ। দেশটির সাম্প্রতিক জাতীয় নির্বাচনের পর দেখা দেওয়া রাজনৈতিক অচলাবস্থার মধ্যে এই ঘোষণা এসেছে। জাতীয় পরিষদে কোনো দলই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায়, বার্নিয়ের জন্য এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে দেশকে এই বিভক্ত অবস্থা থেকে বের করে একটি কার্যকর সরকার গঠন করা।
৭৩ বছর বয়সী বার্নিয়ে, যিনি আল্পসের হাউত-সাভোয়া অঞ্চল থেকে আসেন, ১৯৭০-এর দশকে মাত্র ২৭ বছর বয়সে ফ্রান্সের সংসদ সদস্য হন এবং ১৯৯০-এর দশকের মাঝামাঝিতে প্রয়াত প্রেসিডেন্ট জ্যাক শিরাকের অধীনে প্রথমবার সরকারের দায়িত্বে যোগ দেন।
তিনি বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী গ্যাব্রিয়াল আতালের দ্বিগুণেরও বেশি বয়সী। যেখানে আতাল ছিলেন আধুনিক ফ্রান্সের ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী, সেখানে বার্নিয়ে হচ্ছেন সবচেয়ে বয়স্ক।
মিশেল বার্নিয়ে ফ্রান্সের রাজনীতিতে সুপরিচিত এক নাম। তিনি ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) হয়ে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে ব্রেক্সিট আলোচনার প্রধান মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ২০১৬ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি ফ্রান্সের রিপাবলিকান পার্টির (এলআর) সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং ফ্রান্স ও ইইউয়ের বিভিন্ন জ্যেষ্ঠ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন।
গত জুন ও জুলাইয়ে অনুষ্ঠিত আগাম নির্বাচনের পর ফ্রান্সের পার্লামেন্ট কার্যত তিনটি বৃহৎ রাজনৈতিক ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে, যার ফলে সরকার গঠন করা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। এই জটিলতা কাটিয়ে একটি স্থিতিশীল সরকার গঠন এখন বার্নিয়ের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব হবে।
বার্নিয়ে ফ্রান্সের ইতিহাসে ১৯৫৮ সালে নতুন প্রজাতন্ত্র ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার পর সবচেয়ে প্রবীণ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন। এর আগে তিন বছর আগে তিনি নিজেই প্রেসিডেন্ট মাখোঁকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে প্রেসিডেন্ট হতে চেয়েছিলেন। অভিবাসন নিয়ন্ত্রণের পক্ষে জোরালো বক্তব্য দিয়ে আলোচিত হলেও, সেবার তিনি তাঁর দলের মনোনয়ন পাননি।
মিশেল বার্নিয়ে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী গ্যাব্রিয়াল আতালের স্থলাভিষিক্ত হবেন। আতাল চলতি বছরের শুরুতে মাখোঁর দ্বারা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন এবং জুলাই থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন।
অন্যদিকে, মাখোঁর এই সিদ্ধান্ত নিয়ে ইতিমধ্যে সমালোচনা শুরু হয়েছে বামপন্থী জোট নিউ পপুলার ফ্রন্ট (এনএফপি)-এর পক্ষ থেকে। তাদের অভিযোগ, নির্বাচনে তারা সবচেয়ে বেশি আসন পেলেও একজন ডানপন্থী রাজনীতিককে প্রধানমন্ত্রী করা হচ্ছে, যা একটি ডানপন্থী সরকার গঠনের ইঙ্গিত বহন করছে।
বিএনএ, এসজিএন