বিএনএ, বিশ্ব ডেস্ক: তালেবানরা একদিকে পুরোপুরি দখল নিতে পাঞ্জশির প্রদেশে প্রচন্ড যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে অন্যদিকে নীরবে সরকার গঠনের কাজও। পাকিস্তানের দি নিউজ রোববার(৫সেপ্টেম্বর) তালেবান আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের প্রতিনিধিদের সাথে আলাপ করে ভবিষ্যত আফগান সরকারে কে কোন পদে থাকতে পারেন সে সম্পর্কে একটি সম্ভাব্য তালিকা তৈরি করেছে। তালেবানরা আফগানিস্তানের নতুন নামকরণ করেছে ইসলামিক এমিরাটস অব আফগানিস্তান। সূত্র জানিয়েছে, তালেবান আফগানিস্তানের আমীর হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা ইসলামিক এমিরাটস অব আফগানিস্তান এর রাষ্ট্রপ্রধান হতে যাচ্ছেন।
Haibatullah to head new Taliban govt শীর্ষক প্রতিবেদনে জানানো হয়, আমীর হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা, যাকে শায়খুল হাদীসও বলা হয়( যিনি নবী করিম(স.) এর বাণী হাদিস সম্পর্কে অভিজ্ঞ) তিনি ভবিষ্যত সরকারে আফগান সেনাবাহিনীর কমান্ডার ইন চিফও হবেন।
আফগানিস্তান সেনাবাহিনী ও মার্কিন বাহিনীর ফেলে যাওয়া বিপুল অস্ত্রের মালিক এখন আফগান সরকার। যেগুলো বর্তমানে তালেবানদের হেফাজতে রয়েছে।
১৯৯৬-২০০১ সালে যখন তালেবানরা প্রথম সরকার গঠন করে তখনকার আমীর মোল্লাহ মোহাম্মদ ওমর ছিলেন একাধারে রাষ্ট্রপ্রধান ও কমান্ডার অব আফগান আর্মি বা তালেবান আর্মি।
হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা ব্যক্তিগতভাবে মোল্লাহ ওমরের খুব কাছের লোক ছিলেন। ওমর ২০১৩সালে মার্কিন ও ন্যাটো বাহিনীর অভিযানে আত্ম গোপনে থাকা অবস্থায় নিহত হন। মোল্লাহ ওমর নিহত হলে মোল্লাহ আখতার মনসুর তালেবানের নতুন আমীর এবং হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা উপ আমীর নিযুক্ত হন। ২০১৫সালের ২৯জুলাই পাকিস্তানের বেলুচিস্তানে ড্রোন হামলায় নিহত হন মোল্লাহ আখতার মনসুর। এর পরে শায়খুল হাদীস হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদাকে তালেবানের আমীরের দায়িত্ব দেয় দলের কেন্দ্রীয় শূরা কমিটি।
তখন থেকে হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদাকে খুব বেশি মানুষ প্রকাশ্যে দেখে নি।সাধারণ তালেবান সদস্যরাও তার সাক্ষাত পান না। একটি মাত্র ছবি ছাড়া নতুন আমীরের আর কোন ছবিও প্রকাশ করে নি তালেবান।
শায়খুল হাদীস হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদাই আফগানিস্তানে নতুন তালেবান সরকারের মূল ব্যক্তি। তার সিদ্ধান্তই সবকিছু চূড়ান্ত হয়ে থাকে। তার তিনজন উপপ্রধান রয়েছেন। এরা হলেন, মোল্লাহ আবদুল গনি বারাদার, মোল্লাহ ইয়াকুব ( তালেবান প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা ওমরের পুত্র) এবং সিরাজুদ্দিন হাক্কানী( জালালুদ্দিন হাক্কানীর পুত্র)।
মোল্লাহ আবদুল গনি বারাদার গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে আমীর এবং সরকার প্রধান হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদাকে সরকার পরিচালনায় সহযোগিতা দেবেন।
সূত্র জানায়, নতুন তালেবান সরকারের দুটি গুরুত্বপূর্ণ পদ অর্থ ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রাণালয় কে পাচ্ছেন তা নিশ্চিত হওয়া যায় নি। তবে সিরাজুদ্দিন হাক্কানী( জালালুদ্দিন হাক্কানীর পুত্র) অর্থমন্ত্রাণালয় পদ পেতে খুব আগ্রহী। যদিও পদটিতে মোল্লাহ গুল আগাকে অস্থায়ীভাবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তালেবানের শূরা কমিটি বিষয়টি নিয়ে ভাবনায় রয়েছে।
বর্তমানে মোল্লাহ ইয়াকুব তালেবানের সেনা প্রধান হিসেবে কাজ করছেন। কিন্ত মোল্লাহ জাকির পদটির ব্যাপারে খুবই আগ্রহী। খলিল হাক্কানীকে শান্তি(পিস) বিষয়ক মন্ত্রী এবং সরদার ইব্রাহিমকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নতুন সরকারে দেখা যেতে পারে।
নতুন কাবুল সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রী হতে যাচ্ছেন শের মোহাম্মদ আব্বাস। তিনি বর্তমানে বিদেশি প্রতিনিধিদের সাথে আলাপ আলোচনার জন্য কাতারের রাজধানী দোহায় অবস্থান করছেন।
আগামী বৃহস্পতিবারের আগে নতুন সরকারের ঘোষণা আসছে না। এমনটাই জানিয়েছে তালেবান সূত্র।
বিএনএনিউজ২৪ডটকম, জিএন