বিএনএ বিশ্ব ডেস্ক: আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের দখল নিতে লড়াই শুরু করেছে তালেবান। কাবুলের অতি সুরক্ষিত গ্রিনজোনে বিক্ষিপ্ত বন্দুকযুদ্ধের পর শক্তিশালী বিস্ফোরণ ঘটেছে। অঞ্চলটিতে সরকারি ভবন ও বিদেশি দূতাবাস রয়েছে।
দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী বিসমিল্লাহ মোহাম্মাদির বাসার কাছেই বিস্ফোরণে হতাহতের দায় স্বীকার করেছে জঙ্গি সংগঠনটি। এক বিবৃতিতে তালেবান জানায়, গত বুধবারের হামলার মধ্য দিয়ে কাবুল শহর নিয়ন্ত্রণে নিতে লড়াই শুরু হলো।
সংবাদ মাধ্যমগুলো জানিয়েছে, ইতোমধ্যে দেশটির কয়েকটি জেলা দখলে নিয়েছে তালেবান।ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ে হেরাত প্রদেশে অবস্থান করছে তারা। বুধবার (৪ আগস্ট) প্রদেশটিতে তালেবান সদস্যদের লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়ে আফগান সেনা বাহিনী। এর আগে হেলমান্দের প্রাদেশিক রাজধানী লস্কর গাহ’র অধিকাংশ এলাকার নিয়ন্ত্রণ নেয়ার জবাবে রাতভর তালেবানের বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা চালায় মার্কিন ও আফগান বাহিনী।হেরাত প্রদেশে সাম্প্রতিক সংঘাতে দুই শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। এরমধ্যে অধিকাংশই বেসামরিক নাগরিক। এখনো হাসপাতালগুলোতে অনেক রোগী ভর্তি আছে। কর্তৃপক্ষ তাদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছে।
তালেবানের দাবি, ইতোমধ্যে আফগানিস্তানের প্রায় অর্ধেক এলাকায় নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে তারা। যার একটি বড় অংশ গ্রামীণ এলাকা। এখন গুরুত্বপূর্ণ প্রাদেশিক শহরগুলোর দিকে নজর দেয়া হয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় কান্দাহার, হেলমান্দ ও নানগরহার প্রদেশে সরকারি সেনা এবং সরকার সমর্থক গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে তাদের তুমুল লড়াই চলছে।
মার্কিন ও ন্যাটো সেনাদের আফগানিস্তান ছাড়ার পর দিন দিন তালেবানের আধিপত্য জোরালো হচ্ছে। আর তাদের প্রতিহত করতে গিয়ে সংঘর্ষের বলি হচ্ছে সাধারণ মানুষ। লস্কর গাহতে অবরুদ্ধ হয়ে পড়া কয়েক লাখ বেসামরিক নাগরিকের নিরাপত্তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ।বাড়িঘরের পাশাপাশি বিভিন্ন স্থাপনা ও হাসপাতালে হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে সংস্থাটি।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নেড প্রাইস বলেছেন, দোহায় অনুষ্ঠিত শান্তি আলোচনা লঙ্ঘন করেছে তালেবান। এভাবে চালিয়ে যেতে থাকলে আন্তর্জাতিকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে তারা।
এদিকে, আফগানিস্তানের চলমান সহিংসতা মধ্য এশিয়াতেও ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।এ অবস্থায় আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী উজবেকিস্তানের সেনা সদস্যদের নিয়ে যৌথ সামরিক প্রশিক্ষণে অংশ নিয়েছে রাশিয়া। সীমান্তবর্তী অঞ্চলে যে কোনো পরিস্থিতিতে নিজেদের সক্ষমতা যাচাইয়ের জন্যই এই মহড়ার আয়োজন করা হয়েছে বলেও জানানো হয়।
অন্যদিকে, তালেবানের হামলার ঝুঁকিতে থাকা আফগান নাগরিকদের তৃতীয় কোনো দেশ বিশেষ করে তুরস্কে পুনর্বাসনে যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পনার তীব্র সমালোচনা করেছে আঙ্কারা। তুর্কি সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, ওয়াশিংটনের এ ধরনের পরিকল্পনা অঞ্চলটিতে অভিবাসন সমস্যা তীব্রতর করবে।
২০ বছরের আগ্রাসন শেষে ৩১ আগস্টের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে সেনা সরিয়ে নেয়ার লক্ষ্য যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর। গত মে মাসে এই প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর থেকে আফগানিস্তানে সরকারি বাহিনীর ওপর হামলা ও বিভিন্ন এলাকায় নিজেদের নিয়ন্ত্রণ পুনঃপ্রতিষ্ঠায় অভিযান জোরদার করে তালেবান।
বিএনএনিউজ/আরকেসি