বিএনএ, ময়মনসিংহ : ময়মনসিংহের নান্দাইলে মাদ্রাসাছাত্রকে বলাৎকারের অভিযোগে খলিলুল্লাহ্ (২৭) নামে এক শিক্ষককে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে উত্তেজিত জনতা। অভিযুক্ত শিক্ষক খলিলুল্লাহ্ (২৭) মাদরাসাতুল মাদীনা ক্যাডেট মাদ্রাসায় মুহতামিম। একই ইউনিয়নের কামালপুর গ্রামের মো. লাল মিয়ার ছেলে তিনি।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) সন্ধ্যার পরে উপজেলার মোয়াজ্জেমপুর ইউনিয়নের বেলালাবাদ দত্তপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
এই ঘটনায় মধ্যরাতে শিক্ষার্থীর বাবা বাদী হয়ে নান্দাইল থানায় মামলা দায়ের করেছেন বলে জানিয়েছে উপ-পরিদর্শক (এসআই) হামিদুর রহমান কাশেম।
তিনি বলেন, এ ঘটনায় মামলা দায়েরের পর আজ সকালে (শুক্রবার) আদালতে পাঠানো হয়েছে। বলাৎকারের শিকার ওই শিক্ষার্থীকে শনিবার (৬ জুলাই) ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হবে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, দুই বছর আগে কামালপুর গ্রামের লাল মিয়ার বড় ছেলে মাওলানা কেফায়েত উল্লাহ্ ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কের পাশে বেলালাবাদ দত্তপুর গ্রামে মাদরাসাতুল মাদীনা ক্যাডেট মাদ্রাসা স্থাপন করেন। সেখানে তার ছোট ভাই মাওলানা খলিলুল্লাহ্ মাদ্রাসার মুহতামিম হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
ওই শিক্ষক মাদ্রাসার নূরানী শাখার এক ছাত্রকে তিনবার যৌন নির্যাতন করেন। গতকাল বৃহস্পতিবার বিষয়টি ছাত্রের বাবা জানতে পেরে মাদ্রাসায় উপস্থিত ছাত্রদের কাছে জিজ্ঞেস করে সত্যতা পান। পরে মুহতামিম খলিলুল্লাহ্কে জিজ্ঞেস করলে প্রথমে বিষয়টি এড়িয়ে গেলেও তোপের মুখে স্বীকার করে। একপর্যায়ে উত্তেজিত জনতা খলিলুল্লাহ্কে গণপিটুনি দিয়ে একটি দোকানে আটকে রাখেন।
পরে নান্দাইল থানায় খবর দিলে পুলিশ গিয়ে খলিলুল্লাহ্কে থানায় নিয়ে যায়। এরপর পরেই মাদ্রাসার ছাত্ররা মাদ্রাসা থেকে যার যার বাড়িতে চলে যায়।
ভিক্টিম শিক্ষার্থীর বাবা বলেন, ছেলেকে হাফেজ বানাব বলে মাদ্রাসায় দিছি। ছেলে কান্নাকাটি করে বলছে হুজুর আমার সঙ্গে তিন দিন খারাপ কাজ করছে। আমি মাদ্রাসায় গিয়ে ছাত্রদের জিজ্ঞেস করলে সবাই বলছে হুজুর খারাপ কাজ করে।
মাদ্রাসা পরিচালক মাওলানা কেফায়েত উল্লাহ বলেন, আমি তো মাদ্রাসায় থাকি না। শিক্ষার্থীর বাবা মাদ্রাসায় আসলে ছেলের মুখে ঘটনা শুনে স্থানীয়দের নিয়ে মারধর করে স্থানীয় লোকজন ভাইকে মারধর করছে। এখন ঘটনা সত্য না হলেও তো সত্য।
নান্দাইল মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল মজিদ বলেন, মাদ্রাসা ছাত্রকে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষককে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার পর ওই শিক্ষককে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
বিএনএনিউজ/হামিমুর রহমান হামিম/এইচ.এম/ হাসনা