বিএনএ, চট্টগ্রাম: বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে নগরের বিভিন্ন স্থানে চট্টগ্রাম ওয়াসার সরবরাহকৃত পানিতে অতিরিক্ত লবণাক্ততার খবর পাওয়া গেছে। তবে তা মুসলমানদের পবিত্র রমজান মাসেও অব্যাহত থাকায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে অতিদ্রুত এ সমস্যার সমাধানের দাবি জানিয়েছে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম।
বুধবার (৫ মার্চ) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়।
বিবৃতিতে ক্ষোভপ্রকাশ করে নেতৃবৃন্দ বলেন, ক্যাব চট্টগ্রাম পবিত্র মাহে রমজানে নিরবচ্ছিন্ন পানি, গ্যাস ও বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের আগাম প্রস্তুতির দাবি করে আসলেও কর্তৃপক্ষ সে বিষয়ে কর্ণপাত করছে না। উল্টো বিগত সরকারের আমলের মতো ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে সবকিছু স্বাভাবিক আছে বলে প্রতিবেদন দিয়ে বাহবা নিয়েছে। আর সংকটে পড়েছেন সেবাগ্রহীতারা।
তারা বলেন, নগরের হালদা ও কর্ণফুলী নদীতে প্রতি লিটারে ২ হাজার ৫০০ মিলিগ্রাম পর্যন্ত লবণাক্ততা দেখা দিয়েছে, যার সহনীয় মাত্রা হলো ২৫০ মিলিগ্রাম। শুকনা মৌসুম শুরু হওয়ার সময় থেকে বেশ কয়েক বছর ধরে এ সমস্যা দেখা দিচ্ছে। লবণাক্ততার কারণে ওয়াসার চার প্রকল্পে পানির উৎপাদন ছয় কোটি লিটার পর্যন্ত কমেছে। এ কারণে রমজান মাসে পানি সংকটে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন নগরের গ্রাহকরা। এমনিতেই নগরের এক-চতুর্থাংশ এলাকায় সরবরাহকৃত পানিতে ময়লা ও ঘোলা পানি এবং লাইনে পানি না থাকার মতো চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে রমজানে বিভিন্ন মসজিদের মুসল্লিদেরকে টিউবওয়েল থেকে পানির জোগান দিতে হচ্ছে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, এ বছরে বৃষ্টি কম হওয়ায় নদীতে সাগরের পানি ঢুকছে। জোয়ারের পাশাপাশি অমাবস্যা-পূর্ণিমায় এ সমস্যা বহুগুণ বেড়ে যায়। কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে পর্যাপ্ত পানি না ছাড়ায় জোয়ারের সময় লবণাক্ত পানি ওপরের দিকে উঠে যাচ্ছে। এছাড়া কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে পর্যাপ্ত পানি ছাড়া হচ্ছে না। সেই সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বৃষ্টিও হচ্ছে না। কাপ্তাই বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে পর্যাপ্ত পানি ছাড়া হলে এবং বৃষ্টিপাত হলে লবণাক্ত পানি নদীতে প্রবেশ হতো না। আর এ সমস্যাটি বেশ কয়েক বছর ধরে প্রকট হলেও চট্টগ্রাম ওয়াসা নানা তালবাহনায় কিছুই না করে নানা প্রকল্প নিয়ে ব্যস্ত দিন কাটাচ্ছেন।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ওয়াসার দুর্নীতিবাজ ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফয়জুল্ল্যাহ বিতাড়িত হলেও তার দোসররা বহাল তবিয়তে আছে। যারা নানা কৌশলে বর্তমান সরকারের আশির্বাদ নিতে নানা ফন্দিফিকির করছেন। সেকারণে ফজলুল্ল্যার আমলে সংঘটিত মহাজালিয়াতির কোনো তদন্ত পর্যন্ত হয়নি। ফলে অনিয়মই চট্টগ্রাম ওয়াসার নিয়মে পরিণত হয়েছে। বিভিন্ন নামে বেনামে প্রকল্প তৈরী করে জনগণের করের টাকায় সরকারি তহবিল আত্মসাৎ সাধারণ রীতিতে পরিণত হয়েছে।
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী,নগর সভাপতি জেসমিন সুলতানা পারু, সাধারণ সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু, যুগ্ম সম্পাদক মো. সেলিম জাহাঙ্গীর, দক্ষিণ জেলা সভাপতি আবদুল মান্নান, যুব ক্যাবের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি চৌধুরী কেএনএম রিয়াদ ও নগর সভাপতি আবু হানিফ নোমান, পলিসি ইনফ্লুয়েন্স গ্রুপ চট্টগ্রামের সভাপতি কলামিস্ট মুসা খান, সদস্য সচিব আবু মোশারফ রাসেল, যুগ্ম সদস্য সচিব সাঈদুর রহমান মিন্টু প্রমুখ।
বিএনএনিউজ/ নাবিদ