বিএনএ ডেস্ক : চট্টগ্রামের কর্ণফুলী থানা এলাকায় এস.আলম সুগার মিলের আগুনের আঁচ লেগেছে চিনির বাজারে। ব্যবসায়ি সিন্ডিকেট চিনির দাম বাড়িয়ে দিয়েছে কেজি প্রতি ৫ থেকে ১০ টাকা। কারণ হিসাবে চিনির সুগার মিলে অগ্নিকান্ডের ঘটনাকে দায়ী করছেন তারা।
এস আলম গ্রুপের মানবসম্পদ বিভাগের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ ফয়সাল বলেছেন, এস আলম সুগার মিলে আমদানি করা কাঁচামাল পরিশোধনের মাধ্যমে চিনি তৈরি করা হয়। মিলটিতে চার লাখ মেট্রিকটন চিনি উৎপাদনের সক্ষমতা আছে। কারখানার ১ নম্বর গুদামে আগুন লেগেছে। সেখানে এক লাখ মেট্রিক টন অপরিশোধিত চিনি ছিল। সেগুলো সব পুড়ে গেছে। রমজানের জন্য চিনিগুলো আমদানি করা হয়েছিল। গোডাউন সংলগ্ন মুল কারখানায় আগুন ছড়িয়ে পড়লে রমজানে আমাদের পক্ষে বাজারে চিনি সরবরাহ দেওয়া সম্ভব হবে না।
এদিকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, দেশে প্রতি মাসে কম-বেশি ১ দশমিক ৩৫ লাখ টন চিনির চাহিদা রয়েছে। তবে শুধু রমজান মাসে চাহিদা দ্বিগুণ বেড়ে ৩ লাখ টন হয়ে যায়। এ থেকে বোঝা যায় সাধারণ এক মাস এবং রমজান মাসের প্রায় আধা মাসের চিনি এই আগুনে পুড়েছে।
চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেছেন, অগ্নিকান্ডে পরিশোধিত- অপরিশোধিত চিনি পুড়ে যাওয়ার কারণে রমজানের বাজারে অবশ্যই এর প্রভাব পড়বে এতে সন্দেহ নেই।
প্রসঙ্গত, ৪ মার্চ সোমবার বিকেল পৌনে ৪টার দিকে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী থানার ইছানগর এলাকায় এস. আলম সুগার মিলের একটি গোডাউনে আগুন লাগে। আগুন নিয়ন্ত্রণে ৪টা থেকে একে একে কর্ণফুলী মডেল ফায়ার সার্ভিস স্টেশন, লামা বাজার, আগ্রাবাদ, চন্দনপুরাসহ বিভিন্ন স্টেশনের ১৫টি ইউনিট কাজ করে। তার সঙ্গে রাতে যুক্ত হয় কোস্টগার্ড, বিমান, নৌ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা। ঘটনার পরপরই পুলিশ, র্যাব সদস্যরাও ঘটনাস্থলে ছুটে যান।
অগ্নিকাণ্ডের পর প্রথমে আগুনের লেলিহান শিখা ও ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে চিনি কারখানার গোডাউন। ফায়ার সার্ভিসের লোকজন সেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রাণপণ চেষ্টা চালান। আগুনের লেলিহান শিখায় আশেপাশের এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
সূত্র জানায়, আগুন লাগার সময় কারখানাটি চালু ছিল। সেখানে প্রায় সাড়ে ৫০০ শ্রমিক-কর্মচারী কাজ করছিলেন। কারখানায় মোট ৫টি গুদাম রয়েছে। প্রতিটি গুদামের ধারণ ক্ষমতা ৬০ হাজার মেট্রিক টন। সুগার মিলের পাশে একটি গুদামে আগুন লাগে। চিনি পুড়ে পুরো এলাকায় দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে। অপরিশোধিত চিনি গুদামে নেওয়ার সময় বেল্টের ঘর্ষণে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে শ্রমিকরা জানায়। ৫ মার্চ সকাল ১০টা পর্যন্ত গুদামে আগুন জ্বলতে দেখা যায়। তবে হতাহতের কোন সংবাদ পাওয়া যায়নি।
এ দিকে রাতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার আনোয়ার পাশা জানান, ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। কমিটির প্রধান করা হয়েছে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে।
বিএনএ/ শামীমা চৌধুরী শাম্মী, ওজি/এইচমুন্নী