বিএনএ, চট্টগ্রাম : চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলা একসময় পটিয়ার অংশ ছিল। ১৯৭৬ সালে পটিয়া থেকে আলাদা করে চন্দনাইশ থানার সৃষ্টি হয়। ১৯৮৩ সালের ২রা জুলাই চন্দনাইশ থানাকে উপজেলায় উন্নীত করা হয়। কথিত আছে এই অঞ্চলে চন্দন কাঠের বাগান ছিল। সেখান থেকে চন্দনাইশ নামকরণ হয়েছে।
চন্দনাইশের আয়তন হচ্ছে ২০১.৯৯ বর্গ কিলোমিটার। এর উত্তরে পটিয়া ও রাঙ্গুনিয়া উপজেলা, দক্ষিণে সাতকানিয়া উপজেলা, পূর্বে বান্দরবান সদর ও সাতকানিয়া উপজেলা, পশ্চিমে আনোয়ারা। সাঙ্গু নদী বিধৌত চন্দনাইশে ৮টি ইউনিয়ন ও ২টি পৌরসভা রয়েছে।
ব্যবসা-বাণিজ্যের দিক থেকে চন্দনাইশের যথেষ্ট ঐতিহ্য ও সুনাম রয়েছে। এ অঞ্চলের উৎপাদিত পেয়ারা ও সবজির ঐতিহ্য রয়েছে। বিশেষ করে কাঞ্চননগরের পেয়ারা অতি সুস্বাদু ও জনপ্রিয়। চন্দনাইশের শঙ্খ নদীর চরে বিপুল পরিমাণ বালি পাওয়া যায়। তাছাড়া পাহাড়ী কাঠ দেশের আসবাবপত্র তৈরিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করছে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো চন্দনাইশ উপজেলায় এবারও ভোট বর্জনে আছে বিএনপি ও এলডিপি । তাদের প্রার্থী হিসেবে কারো নাম এই মুহূর্তে আলোচনায় নেই। আওয়ামীলীগ ও জাতীয় পার্টি সমর্থিত প্রার্থীই ভোটের মাঠে আছে। তবে উপজেলা নির্বাচনে দলীয় প্রতীক না থাকায় প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সংখ্যা বাড়তে পারে।
আওয়ামী লীগের ১০ জন নেতা প্রতিদ্বন্দ্বিতার আগ্রহ প্রকাশ করলেও চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত দলীয় ফোরাম থেকে আসতে পারে। প্রার্থীরাও এ সিদ্ধান্ত মেনে কাজ করবেন বলে জানিয়েছেন।
চন্দনাইশ উপজেলা পরিষদের টানা তিনবারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান হচ্ছেন আবদুল জব্বার চৌধুরী । ২০২৩ সালের ২৮ নভেম্বর উপজেলা চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করেন তিনি। এরপর সদ্য সমাপ্ত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। সংসদ নির্বাচনে ৩৬ হাজার ৮৮৪ ভোট পেয়ে আবদুল জব্বার চৌধুরী দ্বিতীয় অবস্থানে ছিলেন। এ আসনে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী নজরুল ইসলাম চৌধুরী।
সংসদ নির্বাচনে পরাজিত আব্দুল জব্বার এবার উপজেলা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। সেকারণে ভোটারদের সাথে যোগাযোগ বাড়িয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন উপায়ে জানান দিচ্ছেন নিজের অবস্থান।
এবার উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ১০ জন, জাতীয় পার্টির ১ জনসহ ১১ জনের নাম শোনা যাচ্ছে। এদের মধ্যে রয়েছেন দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মোহাম্মদ কাশেম, চন্দনাইশ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. জাহিদুল ইসলাম জাহাঙ্গীর, সাধারণ সম্পাদক আবু আহমদ চৌধুরী জুনু, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক বরকল ইউপি চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহিম চৌধুরী, চন্দনাইশ উপজেলা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও জেলা পরিষদের সদস্য এড. কামেলা খানম রূপা, কেন্দ্রীয় যুবলীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মীর মো. মহিউদ্দিন, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা লায়ন নজরুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাবেক সদস্য মো. গিয়াস উদ্দীন সুজন, গাছবাড়িয়া সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি শেখ টিপু চৌধুরী, উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক মোহাম্মদ তৌহিদুল আলম । জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি সোনা মিয়া চৌধুরী।
চট্টগ্রাম-১৪ আসনে টানা তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী। আবদুল জব্বার চৌধুরীও উপজেলা চেয়ারম্যান পদে হ্যাট্রিক করেছেন। ডিগবাজ নেতা উপাধি প্রাপ্ত আব্দুল জব্বার ছাত্রলীগের সঙ্গে যুক্ত থাকলেও পরে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন। পরে এলডিপিতে যোগ দেন।
গতবারের উপজেলা নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। আওয়ামী লীগের নেতা হলেও তার সঙ্গে জামায়াত ইসলামীর সখ্যতা রয়েছে। বরাবরই জামায়াতের ভোটে জিতেছে জব্বার। তবে এবার খুব সহজে নির্বাচনে জয়ী হতে পারবেন এমনটা মনে করছেন না ভোটাররা। লড়াই করেই জব্বারকে জিততে হবে।
বিএনএ/ শামীমা চৌধুরী শাম্মী, ওজি/ হাসনা