বিএনএ কক্সবাজার: ঘূর্ণিঝড় ‘জাওয়াদের’ প্রভাবে সাগর উত্তাল থাকায় টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে প্রশাসন। এ অবস্থায় সেখানে আটকা পড়েছেন নয় শতাধিক পর্যটক।
শনিবার (৪ ডিসেম্বর) বিকেলে এ তথ্য জানিয়েছেন টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পারভেজ চৌধুরী। তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ শক্তিশালী হয়ে উপকূলের দিকে অগ্রসর হওয়ায় রোববার (৫ ডিসেম্বর) সকাল থেকে সোমবার (৬ ডিসেম্বর) পর্যন্ত টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথে জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে আবহাওয়া স্বাভাবিক হলে পরদিন জাহাজ চলাচল শুরু হওয়ার সম্ভাবনা আছে। সেটি আবহাওয়ার পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করবে বলে জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
তিনি জানান, শনিবার পর্যটকবাহী যেসব জাহাজ সেন্টমার্টিন গেছে, সেগুলো ফিরে এসেছে। যেসব পর্যটক টিকিট ক্রয় করেছিলেন, তাদের টাকা ফেরত দিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। দ্বীপে রাত্রিযাপনকারী পর্যটকরা যাতে হয়রানির শিকার না হন, সে ব্যাপারেও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
সেন্টমার্টিন ইউপি চেয়ারম্যান নুর আহমদ বলেন, ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের কারণে সমুদ্র উত্তাল থাকায় জাহাজ চলাচল বন্ধ করেছে প্রশাসন। দ্বীপে এক হাজারের বেশি পর্যটক অবস্থান করছেন। তারা ভালো আছেন। তাদের খোঁজখবর রাখা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) এবং জাহাজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে টেকনাফের দমদমিয়া জেটিঘাট থেকে ৬টি জাহাজে এক হাজার ৩শ’র বেশি পযর্টক সেন্টমার্টিনদ্বীপে ভ্রমণে যান। এর মধ্যে প্রায় এক হাজারের মতো পর্যটক ফিরে এলেও বাকিরা আটকে গেছেন। এর আগের কয়েকদিনে যাওয়া আরও অনেক পযর্টক দ্বীপে অবস্থান করছেন।
বিআইডব্লিউটিএ’র টেকনাফ অঞ্চলের ট্রাফিক সুপার ভাইজার জহির উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, কক্সবাজারসহ দেশের সমুদ্রবন্দরগুলোতে ৩ নম্বর সতর্কতা সংকেতের প্রভাবে দুর্ঘটনা এড়াতে এই নৌপথে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। এই নৌপথে ৬টি জাহাজ চলাচল করে। আবহাওয়া স্বাভাবিক হলে জাহাজ চলাচলে আবারও অনুমতি দেয়া হবে।
উল্লেখ্য, ঘুর্ণিঝড় জাওয়াদ আরও শক্তিশালী হয়ে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে। এ কারণে উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব ধরনের নৌযানকে দ্রুত নিরাপদে আশ্রয় নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। একই কারণে দেশের সমুদ্রবন্দরগুলোকে ৩ নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অধিদফতর।
কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ মনোয়ার হোসেন বলেন, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রে ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই মুহূর্তে ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছে সাগর উত্তাল আছে।
এদিকে, ঘূর্ণিঝড়টি উপকূল তেকে প্রায় ৮০০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে বলে জানা গেছে। এর প্রভাবে শনিবার সকাল থেকে উপকূলীয় এলাকায় গুড়িগুড়ি সৃষ্টি হচ্ছে।
বিএনএনিউজ/আরকেসি