26 C
আবহাওয়া
২:৪১ অপরাহ্ণ - ডিসেম্বর ৪, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » নির্বাচনের জন্য যোগ্য প্রার্থী খুঁজছে বাংলাদেশ ঐক্য পার্টি

নির্বাচনের জন্য যোগ্য প্রার্থী খুঁজছে বাংলাদেশ ঐক্য পার্টি

পার্টি

বিএনএ ডেস্ক: সুষ্ঠু নির্বাচনের নিশ্চয়তা পেলে নিবন্ধিত কোনো দলের প্রতীকে ৩০০ আসনে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন করতে চায় অনিবন্ধিত দল বাংলাদেশ ঐক্য পার্টি। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে জয়ী হওয়া রাজনৈতিক দলগুলোকে সম্পৃক্ত করে সব আসনে প্রার্থী দেওয়ার পরিকল্পনা করছে দলটি। এজন্য সৎ ও যোগ্য প্রার্থী খুঁজছে নতুন রাজনৈতিক দলটি।

পাশাপাশি দলটিতে যুক্ত হতে চাইলে কখনো দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতে ও লোভের সঙ্গে নিজেদের যুক্ত করা যাবে না এমন লিখিত অঙ্গীকার করতে হবে বলে জানিয়েছেন নেতারা। এজন্য ১৫ দফাও ফর্মূলা পেশ করা হয়েছে বাংলাদেশ ঐক্য পার্টির পক্ষ থেকে।

শনিবার (৪ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর জজকোর্ট এলাকায় দলের অস্থায়ী কার্যালয়ে সংসদ নির্বাচন নিয়ে বাংলাদেশ ঐক্য পার্টির ভাবনা উপস্থাপন করতে গিয়ে এসব কথা বলেন দলটির প্রতিষ্ঠাতা মুহাম্মদ আবদুর রহীম চৌধুরী।

তিনি জানান, বাংলাদেশ ঐক্য পার্টি গতানুগতিক রাজনৈতিক দলগুলোর বাইরে সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য সম্বলিত এবং সাময়িক একটি রাজনৈতিক দল। দেশে টালমাটাল রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে দেশের মারাত্মক ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে। দেশকে সংঘাত থেকে উদ্ধারের জন্যই আমাদের যাত্রা শুরু হয়েছে।

দলের প্রতিষ্ঠাতা নিজেদের কর্মপরিকল্পনার কথা তুলে ধরে বলেন, এটি একটি সাময়িক দল। একবার ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগ জোট ও বিএনপি জোটের সবাইকে প্রতিশোধ ও প্রতিহিংসার অবস্থান থেকে সম্পূর্ণ সরিয়ে এনে উন্নত ও মার্জিত দেশ গঠন করতে চাই।

আবদুর রহীম বলেন, বাংলাদেশ ঐক্য পার্টি’র ফর্মূলার আলোকে তিনশ সংসদীয় আসনের প্রতিটি থেকে একজন করে তিনশত জন ও ৪৯৫ উপজেলার মধ্যে প্রতি উপজেলা থেকে একজন নারীসহ তিনজন মোট ১৭৮৫ জন যোগ্য ব্যক্তি পাওয়া সাপেক্ষে এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের গ্যারান্টি পেলে বাংলাদেশ ঐক্য পার্টি নিবন্ধিত কোনো দলের ব্যানারে এবার জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেবে। এজন্য যোগ্য প্রার্থীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয় দলটির পক্ষ থেকে।

ঐক্য পার্টির ফর্মূলা বাস্তবায়নের জন্য ২১টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের প্রধানসহ অনেক রাজনীতিবিদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে দলের প্রতিষ্ঠাতা দাবি করেন, তাদের ফর্মূলা বাস্তবায়ন ছাড়া দেশকে আসন্ন গৃহযুদ্ধ থেকে বাঁচানো সম্ভব নয়।

এসময় সব রাজনৈতিক দলকে বাংলাদেশ ঐক্য পার্টির ১৫দফা ফর্মূলা বাস্তবায়নের অনুরোধ জানানো হয়। লিখিত বক্তব্যে ফর্মূলা পেশ করেন দলের সাধারণ সম্পাদক আইনজীবী আল মাহমুদ হাসান।

১৫ দফা হলো-

১. দলের অভ্যন্তরে কেন্দ্রীয় ফোরামের সকল সদস্যকে দলীয় বেশ কিছু নীতি, ও শতভাগ আদর্শ বাস্তবায়নের জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ। দলের অভ্যন্তরে, গণতন্ত্র নিশ্চিতপূর্বক, সৎ ও যোগ্যদের যোগ্যতার মূল্যায়ন করা।

২. দেশের জনগণের ইচ্ছার শতভাগ প্রতিফলন যাতে ঘটে সেজন্য কোনো একক নেতাকে প্রাধান্য না দিয়ে সংসদে আলোচনা সাপেক্ষে রাষ্ট্রীয় যাবতীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও অনুমোদনের বিধান করা।

৩. ক্ষমাশীলতা, সহনশীলতা, ধর্ম ও দল নির্বিশেষে সর্বজনীন ভ্রাতৃত্ব, সম্প্রীতির শতভাগ চর্চা, দলের কর্মীসহ দেশের জনগণ যাতে করেন সে রকম দৃষ্টিভঙ্গি গঠনের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করা।

৪. ক্ষমতায় গেলে দেশে বিরাজিত সব দল ও ধর্মীয় সম্প্রদায় থেকে আনুপাতিক হারে লোক নিয়ে একটি সর্বদলীয় উপদেষ্টা কাউন্সিল গঠন করা।

৫. সকল জনপ্রতিনিধিসহ সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানসমূহের সব বিষয়ে শতভাগ জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা।

৬. জাতীয় ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে নূন্যতম ৩০ শতাংশ আসন নারীদের জন্য নির্দিষ্ট করা।

৭. পুরো শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণ করাসহ, কারিগরি শিক্ষালয়, ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত স্থাপিত করা। শিক্ষা জাতীয়করণের ক্ষেত্রে, গ্রাম-গঞ্জ থেকে শুরু করে দেশের সব জায়গায়, প্রতিষ্ঠিত কোনো প্রতিষ্ঠানকে বাদ দেওয়া হবে না। সেসব প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সবার চাকরি জাতীয়করণ করা হবে (কারো সার্টিফিকেট কম থাকলে-তা অর্জনের জন্য সময় দেওয়া হবে। প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানের, মূল প্রতিষ্ঠাতাকে, প্রতিষ্ঠানের প্রধান হিসেবে রাখা হবে।) জাতীয়করণের পাশাপাশি শিক্ষকদের বেতন ভাতা সম্মানজনক করা হবে।

৮. দেশের কোনো জমি যাতে অনাবাদি বা পরিত্যক্ত না থাকে, সেটার দিকে বিশেষ নজর দিয়ে দেশে কোন পণ্যের কত চাহিদা এবং বিদেশে রফতানির আগাম প্রতিশ্রুতি সাপেক্ষে সে পরিমাণ কৃষিপণ্য চাষ করা। কৃষকদের পর্যাপ্ত প্রণোদনা দেওয়াসহ বিএডিসিকে শতভাগ আন্তরিক হতে সহযোগিতা করে কৃষিক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটানো।

৯. বিনিয়োগ ও শিল্পবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করা। দেশের চাহিদা নিরূপণসহ বিদেশে রফতানির হিসাব করে বিভিন্ন ধরনের শিল্প কারখানা স্থাপনসহ শ্রমিকদের যাবতীয় অসুবিধার দিক খতিয়ে দেখে তা উত্তরণে সহযোগিতা করা এবং উন্নত বিশ্বের সমান সুবিধাদি শ্রমিকদের জন্য নিশ্চিতপূর্বক শিল্প বিপ্লব ঘটানো।

১০. রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের বিষয়ে বিশেষ নজর দিয়ে তাদের সব সমস্যার সমাধান এবং তাদের জীবন-মান উন্নয়নে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ।

১১. স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়নে, আধুনিক যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণসহ দেশের সকল নাগরিকের জন্য স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করা।

১২. দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখার স্বার্থে, সিন্ডিকেট বিলোপ সাধনসহ, মধ্যস্বত্বভোগীরা, পণ্যের অতিরিক্ত দাম যাতে বাড়াতে না পারে-তার জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ।

১৩. ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীসহ বিভিন্ন সংখ্যালঘু ধর্মাবলম্বীদের যাবতীয় অসুবিধার দিক খতিয়ে দেখে তা উত্তরণে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ।

১৪. অতীতের সরকার সমূহের সংস্কারমূলক কাজসমূহ অব্যাহত রাখা। সকল রাজনৈতিক দলসহ অতীতের সরকারগুলোকে পূর্বসুরী হিসেবে যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করা।

১৫. দেশের কর্মক্ষম সকল নাগরিকের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা গ্রহণ এবং সম্ভব না হলে অবশ্যই বেকার ভাতা দেওয়া। পূর্ববর্তী সরকারসমূহ কর্তৃক চালুকৃত মুক্তিযোদ্ধা ভাতাসহ সব ধরনের ভাতা অব্যাহত রাখা।

পার্টির ভাইস-চেয়ারম্যান মাওলানা আলতাফ হোসেন মোল্লার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আল মাহমুদ হাসানের সঞ্চালনায় এ সময় আরও বক্তব্য দেন মোহাম্মদ মহসিন মৃধা, কানু মহাজন, আবদুস সাত্তার, ইয়াসির আরমান, বিশাখা বড়ুয়া, তপন সিকদার, আলী নেওয়াজ, তৌহিদুল ইসলাম, মরিয়ম বেগম, আরিফ হোসেন, মোক্তার হোসেন ঢালী প্রমুখ।

বিএনএনিউজ২৪/ এমএইচ

Loading


শিরোনাম বিএনএ