বিএনএ যশোর : চুয়াডাঙ্গার আলোচিত দুই গৃহবধূকে ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় দুই আসামির ফাঁসির রায় কার্যকর করা হয়েছে। সোমবার (৪ অক্টোবর) রাত ১০টা ৪৫ মিনিটে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে এ রায় কার্যকর করা হয়।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার খাসকররা ইউনিয়নের রায়লক্ষ্মীপুর গ্রামের আজিজুল ওরফে আজিদ ওরফে আজিজ (৫০) ও মিন্টু ওরফে কালু (৫০)। ফাঁসির রায় কার্যকরের সময় জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও সিভিল সার্জনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ মাধ্যমকে ফাঁসি কার্যকরের নিশ্চিত করেছেন যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার তুহিন কান্তি খান ফাঁসি। তিনি জানান, সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে দুইজনের মরদেহ তাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
জেলার বলেন, চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গার আলোচিত ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় দণ্ডপ্রাপ্ত দুইজনের ফাঁসি কার্যকরের জন্য কয়েক দিন আগে থেকেই প্রস্তুতি নেয়া হয়। গত শনিবার যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে গিয়ে শেষবারের মতো তাদের সঙ্গে দেখা করেন স্বজনরা। দুইজনের শেষ ইচ্ছা অনুয়ায়ী দুই পরিবারের অর্ধশতাধিক মানুষের সঙ্গে দেখা করিয়ে দেয়া হয়। এছাড়া, তাদের ইচ্ছা অনুয়ায়ী শনিবার গরুর কলিজা ও ইলিশ মাছ খাওয়ানো হয়েছে। রোববার গ্রিল ও নান রুটি আর সোমবার মুরগির মাংস, দই আর মিষ্টি খাওয়ানো হয় বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য,২০০৩ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর আলমডাঙ্গা থানার জোড়গাছা গ্রামের কমেলা খাতুন ও তার বান্ধবী ফিঙ্গে বেগমকে ধর্ষণের পর হত্যা করে মরদেহ রায়লক্ষ্মীপুর মাঠে ফেলে রাখা হয়। এ ঘটনার পরদিন আলমডাঙ্গা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহত কমেলা খাতুনের মেয়ে নারগিস বেগম। মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত দুইজনসহ চারজনকে আসামি করা হয়। অপর দুইজন হলেন, একই গ্রামের সুজন ও মহি। মামলা বিচারাধীন অবস্থায় আসামি মহি মারা যান।
সাক্ষ্য-প্রমাণ শেষে এ মামলায় ২০০৭ সালের ২৬ জুলাই আসামি আজিজুল ও মিন্টুকে মৃত্যুদণ্ড ও দুই লাখ টাকা করে জরিমানার আদেশ দেন চুয়াডাঙ্গার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ আদালতের বিচারক।
এরপর হাইকোর্টে আপিল করেন আসামিরা। ২০১২ সালের ১১ নভেম্বর নিম্ন আদালতের রায় বহাল রাখার আদেশ দেয় হাইকোর্ট। এরপর সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করে আসামিপক্ষ। চলতি বছরের ২৬ জুলাই সেখানেও নিম্ন আদালতের রায় বহাল রাখার আদেশ দেয়া হয়। পরে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাওয়া হলে সেটিও নামঞ্জুর হয়েছে। এরপর সব ধরনের আইনি প্রক্রিয়া শেষে ঘটনার ১৮ বছর পর এ মামলার রায় কার্যকর করা হলো।
বিএনএনিউজ/আরকেসি