বিএনএ ঢাকা: দেশের উপকূলীয় সাগর-নদীতে রোববার (৩ অক্টোবর) মধ্যরাত থেকে শুরু হয়েছে ইলিশ ধরায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা। মা ইলিশ সংরক্ষণ ও নিরাপদ প্রজননের জন্য ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত এ নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে। পাশাপাশি বিপণন, ক্রয়-বিক্রয়, পরিবহন, মজুত এবং বিনিময়ও নিষিদ্ধ করেছে জানিয়েছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। ২৫ অক্টোবর মধ্যরাতে শেষ হবে ২২ দিনের এই নিষেধাজ্ঞা।
এই নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করলে জরিমানা গুনতে হবে। পাশাপাশি কারাভোগও করতে হতে পারে। আইন অমান্যকারী কমপক্ষে এক থেকে সর্বোচ্চ দুই বছর সশ্রম কারাদণ্ড অথবা পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে প্রধান প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ রক্ষায় সমন্বিত বিশেষ অভিযান শুরু করেছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। দেশের ৩৮টি জেলায় এ বিশেষ অভিযান পরিচালিত হচ্ছে।
জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, স্থানীয় মৎস্য দফতর, বাংলাদেশ পুলিশ, র্যাব, বাংলাদেশ নৌবাহিনী, বাংলাদেশ বিমান বাহিনী, বাংলাদেশ কোস্টগার্ড, বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী সমন্বিতভাবে এ অভিযান পরিচালনা করছে।
যেসব জেলায় অভিযান পরিচালিত হচ্ছে সেগুলো হলো, ঢাকা, মুন্সীগঞ্জ, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, মানিকগঞ্জ, রাজবাড়ী, ফরিদপুর, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনা, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার।
নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, কিশোরগঞ্জ, টাঙ্গাইল, গাজীপুর, জামালপুর, রাজশাহী, নাটোর, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, খুলনা, কুষ্টিয়া ও নড়াইল।
এ বিষয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব রওনক মাহমুদ সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দেশে মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে, ইলিশ মাছকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে। মৎস্য বিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতেই ইলিশের সর্বোচ্চ প্রজনন সময় বিবেচনা করে এ বছর ইলিশ আহরণ নিষিদ্ধের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ইলিশ আহরণ বন্ধ থাকাকালে এ বছর পাঁচ লাখ ৫৫ হাজার ৯৪৪টি জেলে পরিবারের জন্য ১১ হাজার ১১৮ দশমিক ৮৮ মেট্রিক টন ভিজিএফ চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। পার্শ্ববর্তী দেশের জেলেরা অবৈধ মৎস্য আহরণ করতে না পারে সেজন্য কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান সফল করতে এ বছর ব্যাপক কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব।
গবেষকেরা বলেছেন, সাধারণত সারাবছর ডিম দেয় ইলিশ। তবে সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে চার অমাবস্যা-পূর্ণিমায় বেশি ডিম পাড়ে। তাই প্রতিবছর ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়। যাতে সেগুলো নষ্ট হয়ে না যায়।
মৎস্যবিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা ওয়ার্ল্ডফিশের হিসাব অনুযায়ী, বিশ্বের মোট ইলিশের ৮৬ শতাংশ আহরিত হয় বাংলাদেশে। এতে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন হয়।তাই এ ব্যাপারে অধিক সচেতন সরকার।
বিএনএনিউজ/আরকেসি