বিএনএ, কক্সবাজার : কক্সবাজারের ডিজিটাল আইল্যান্ড মহেশখালীর সোনাদিয়া দ্বীপে পর্যটকদের রাত্রী যাপনে বিধিনিষেধ আরোপের পর নতুন ভাবে গড়ে উঠা সকল স্থাপনা অপসারণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
সোনাদিয়ায় ভ্রমনে আসা পর্যটকদের জন্য গড়ে তোলা স্থায়ী-অস্থায়ী বাণিজ্যিক কটেজ অপসারণ করতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কতৃপক্ষ (বেজা)।
গত ২৬ জানুয়ারি বেজার উপসচিব মোহাম্মদ নাজমুল হাসানের স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ নির্দেশনা প্রদান করে বেজা কতৃপক্ষ। চিঠিতে সোনাদিয়ায় বিভিন্ন অপরাধ এবং অবৈধ কার্যকলাপ বন্ধে পর্যটকদের রাত যাপনে নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি অবৈধ কটেজ অপসারণ করতে বলা হয়েছে।
ইস্যুকৃত চিঠিতে সোনাদিয়াকে বেজা কতৃপক্ষ পরিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা হিসেবে আখ্যা দিলেও সেখানেই পরিবেশ বান্ধব পার্ক নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয় বেজা। যদিও সম্ভাব্য স্থাপিত পার্ককে ইকো-ট্যুরিজম পার্ক বলে দাবি করেছে বেজা কতৃপক্ষ। তবে পরিবেশবিদরা বলছেন, কোনো অবস্থাতেই সোনাদিয়ায় কোনো স্থাপনা নির্মাণসহ দ্বীপে অধিক লোকের সমাগম করা যাবেনা। কারণ লোকে লোকারণ্য ও পার্ক নির্মিত হলে সোনাদিয়ার হুমকিতে থাকা জীববৈচিত্র্যের পরিবেশ শূণ্যের কোটায় নেমে আসবে বলে আশংকা প্রকাশ করছেন তারা। সেই প্রচুর সম্ভাবনায় এই দ্বীপ ধ্বংসও হয়ে যেতে পারে মনে করছেন তারা।
বেজার চিঠিতে সোনাদিয়াকে ১৯৯৯ সালে পরিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকার কথা উল্লেখ করে বলা হয়েছে- সোনাদিয়ার প্রাকৃতিক বন ও গাছপালা কাটা, বন্যপ্রাণী হত্যা, উদ্ভিদের আবাসস্থল ধ্বংস, বায়ু বা শব্দ দূষণ হয় এমন শিল্প প্রতিষ্ঠান করা এবং বর্জ্য নির্গমন ও কোনো উপায়ে পাথরসহ খনিজসম্পদ আহরণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে বহু আগে থেকেই।
এছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে বেজার সপ্তম সভায় সোনাদিয়ার ভূ-প্রকৃতি ও পরিবেশের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নান্দনিক এবং পরিবেশ-বান্ধব স্থাপনা নির্মাণের মাধ্যমে ইকো-ট্যুরিজম করার কথাও উল্লেখ করা হয় চিঠিতে।
এদিকে পরিবেশবিদরা ইকো টুরিজম পার্কের জন্য অন্য কোনো এলাকা নির্বাচন করার জন্য সরকারকে অনুরোধ করেছেন।
চট্টগ্রাম উপকূলীয় বনবিভাগের বিভাগীয় বনবিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা ড,আবদুর রহমান বলেন, সোনাদিয়ায় নতুন পুরাতন মিলে দুই হাজার একরের বেশী ম্যানগ্রোভ ফরেষ্ট ও ঝাউবাগান রয়েছে। সেখানে নানা প্রজাতির জীবজন্তু বসবাস করছে। পর্যটকদের অবাধ বিচরণের ফলে প্রাণ প্রকৃতি ও পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার আশংকা আছে। তাই যাই করা হোক প্রকৃতি পরিবেশের ক্ষতিসাধিত হলে সোনাদিয়া সেন্টমার্টিনের চেয়ে ও ভয়াবহ পরিবেশ বিপর্যয় ঘটতে পারে মনে করেন বন বিভাগের এই কর্মকর্তা।
কক্সবাজার পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) এর সভাপতি ফজলুল কাদের চৌধুরী বলেন, সোনাদিয়া মহেশখালী ও কক্সবাজার শহরের গাইডওয়াল। যে ভাবে সোনাদিয়াকে নিয়ে অপরিকল্পিত উন্নয়নের পরিকল্পনা করা হচ্ছে, তা বাস্তবায়ন হলে এই দ্বীপ যে কোন প্রাকৃতিক দূর্যোগের কবলে পড়ে তলিয়ে যেতে পারে সাগরগর্ভে।
বিএনএনিউজ/এইচ এম ফরিদুল আলম শাহীন/ এইচ.এম।