বিএনএ, ঢাকা : রাজধানীর নিউমার্কেট, তুরাগ ও শাহ আলী এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রায় পাঁচ কোটি টাকা মূল্যের ভিওআইপি সরঞ্জামসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। তারা হলেন- ব্যবসার মূলহোতা কাজী এম এম মাহামুদ ছোটন, রাকিব হাসান ও বাবর উদ্দিন।
বুধবার (৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুর দুইটা থেকে বৃহস্পতিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। চক্রটি বছরে ১০ কোটি ৯৫ লাখ টাকা সরকারকে রাজস্ব বঞ্চিত করেছে বলে জানিয়েছে র্যাব।
বৃহস্পতিবার বিকেলে কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১০ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মাহফুজুর রহমান বলেন, বুধবার গোপন তথ্যে বিটিআরসির কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় নিউ মার্কেটের এলিফ্যান্ট রোডের ২৭৮/৩ সরদার ভিলার ২য় তলার তালহা এন্টারপ্রাইজ নামক প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালানো হয়। এ সময় অবৈধ ভিওআইপির যন্ত্রাংশ বিক্রিকালে চারটি সিম বক্স ডিভাইস ও দুটি মোবাইল ফোনসেটসহ রাকিব ও বাবরকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্যে তুরাগের রমজান মার্কেট ভাবনারটেক জনৈক শামসুল আলমের বাড়ির একটি তালাবদ্ধ কক্ষ (যা চলমান ভিওআইপি কন্ট্রোলরুম) থেকে অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসার চক্রের মূলহোতা ছোটনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের থেকে ভিওআইপি ব্যবসায় ব্যবহৃত ১৯টি সিম বক্স ডিভাইস, ৪১৬টি জিএসএম এন্টেনা, ৩ হাজার ৪০০পিস টেলিটক সিম, ৭টি মিনি কম্পিউটার, ৩টি ওয়ারলেস রাউটার, ৫টি বাংলা লায়ন মডেম ও রাউটার, ৩টি ল্যাপটপ, ১টি ল্যাপটপ কুলার, ১০টি বিভিন্ন চার্জার, ৬টি ইউএসবি মডেম, ১২টি পাওয়ার ক্যাবল, ২৪টি কনসেল ক্যাবল, ৩টি থ্রি-প্ল্যাগ, ৪টি মাল্টিপ্ল্যাগ, ১টি মাউস, ৪টি মোবাইল ও নগদ ২ হাজার ৩০০ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। বিটিআরসির দেওয়া তথ্যমতে উদ্ধারকৃত আলামতের আনুমানিক মূল্য ৫ কোটি টাকা।
র্যাব-১০ এর অধিনায়ক বলেন, বিটিআরসি কর্মকর্তাদের দেয়া তথ্যমতে, অবৈধ টেলিযোগাযোগ স্থাপনার মাধ্যমে চক্রটি প্রতিদিন আনুমানিক প্রায় ৬ লাখ আন্তর্জাতিক কল মিনিট অবৈধভাবে দেশে টার্মিনেট করছিলো। এতে তারা সরকারকে দৈনিক প্রায় তিন লাখ টাকা এবং বছরে প্রায় ১০ কোটি ৯৫ লাখ টাকা রাজস্ব বঞ্চিত করেছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেপ্তারকৃতরা অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসার ও ভিওআইপির যন্ত্রংশ ক্রয়-বিক্রয়কারী। তারা দীর্ঘ এক বছর ধরে সরকারকে কর ফাঁকি দিয়ে অবৈধভাবে ভিওআইপি’র ব্যবসা চালাচ্ছিলো।
একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ ১৫টি সিম নিবন্ধন করে ব্যবহার করতে পারেন। কিন্তু চক্রটি কিভাবে সরকারি প্রতিষ্ঠান টেলিটকের তিন হাজার ৪০০ সিম ক্রয় ও ব্যবহার করছিলো জানতে চাইলে র্যাব-১০ প্রধান বলেন, বিষয়টি র্যাব ও বিটিআরসি’র নজরে এসেছে। এটা নিয়ে গভীর তদন্ত করা হবে। গ্রেপ্তার চক্রের সাথে আরও কেউ জড়িত কিনা এবং ভিওআইপি কল কোনো অপরাধ কর্মকাণ্ডে ব্যবহার করা হচ্ছিলো কিনা জানতে চাইলে অতিরিক্ত ডিআইজি মাহফুজুর রহমান বলেন, অবৈধভাবে তারা ভিওআইপি ব্যবসা ও সরকারের কর ফাঁকি দিয়ে আসছিলেন। তাদের এই ভিওআইপি কলে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে ব্যবহার করা হচ্ছিল কিনা তা খতিয়ে দেখা হবে।
বিএনএনিউজ/ এসকেকে/এইচ.এম।