বিএনএ,ঢাকা: জাতির পিতাকে হত্যা করে জিয়াউর রহমান বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে চেয়েছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।সেই অপতৎপরতা এখনো চলছে বলেও জানান তিনি।
সোমবার (৪ জানুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৭৩ প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে শেখ হাসিনা আরও বলেন,জিয়াউর রহমান শিক্ষার্থীদের হাতে অস্ত্র ও অর্থ তুলে দিয়ে ছাত্র রাজনীতিকে কলুষিত করেছিলেন।দেশের স্বাধীনতাকে ব্যর্থ করাই জিয়াউর রহমানের লক্ষ্য ছিল।পাকিস্তান থেকে আলাদা হয়ে যাওয়ার পর বাংলাদেশ আবার উন্নতি করতে পারে,এটা তারা কখনো মানতে চায়নি।বাংলাদেশকে তারা ব্যর্থ করতে চেয়েছিল।
তিনি বলেন,দেশের সব আন্দোলন-সংগ্রামে সবচেয়ে ছাত্রলীগের বেশি রক্ত ঝরেছে।দেশের গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ের আন্দোলন, স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন- যেকোনো আন্দোলনই সব থেকে বেশি রক্ত দিয়েছে, শহীদ হয়েছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।অন্য কোনো দলে এটা খুব বেশি পাওয়া যাবে না,ছাত্রলীগে সব থেকে বেশি।
মহামারিতে মানুষের সাহায্যে অগ্রগামী হয়ে থাকা ছাত্রলীগের প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন,কিছু গণমাধ্যম সংগঠনটির ভালো কাজ দেখে না।ছাত্রলীগ অনেকগুলো ভাল কাজ করেছে।হয়তো ক্ষেত্র বিশেষে কোথায়ও কোথায়ও দুই একটা ঘটনা ঘটে।কিছু পত্রপত্রিকা আছে, যত ভালো করে তা লেখার যোগ্যতা তাদের নেই। যদি কোন খুঁত পায়, তাহলে সেটাকে বড় করে লিখতে পারে, এটা তাদের একটা দৈন্যতা।কাজেই সেগুলো হিসেবে ধরা হয়না।
ভোগবিলাস নয়,আদর্শ নিয়ে পথ চলতে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়ে সরকার প্রধান বলেন,শুধু পাঠ্যবই নয়, এর বাইরেও পড়াশোনা করতে হবে।করোনা শিক্ষা দিয়েছে অর্থ, বিত্ত, বৈভবের কোন মূল্য নেই।শিক্ষার মাধ্যমে শান্তির চর্চা করতে হবে।পাশাপাশি প্রযুক্তি, কারিগরি ও বিজ্ঞান শিক্ষার মাধ্যমে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের উপযোগী করে দেশের নতুন প্রজন্মকে গড়ে তোলা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
এছাড়া, জাতির পিতার আদর্শ ধারণ করে আগামিতে নেতৃত্ব দেয়ার যোগ্যতা অর্জন করতে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দেন শেখ হাসিনা।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৭৩তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর কেন্দ্রীয় আয়োজন করা হয় অনলাইনেই।জাতীয় সঙ্গীত গেয়ে প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর আলোচনার মূল কার্যক্রম শুরু করেন নেতা-কর্মীরা।রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভায় গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যোগ দেন দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা।একযোগে দলীয় সঙ্গীত জন্মদিনের কেক কাটা হয়।
দেশের প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৭৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সোমবার দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়।সকাল সাড়ে ৭টায় দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ও দেশব্যাপী সংগঠনের দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় এবং দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। সকল ৮টায় ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন এবং সকাল ৯টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হল প্রাঙ্গণে কেক কাটেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।এছাড়া, সকাল ১০টায় টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের প্রতিনিধি টিম কর্তৃক শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ, ফাতেহা পাঠ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
বাংলা ও বাঙালির স্বাধীনতা ও স্বাধিকার অর্জনের লক্ষ্যেই মূল দল আওয়ামী লীগের জন্মের এক বছর আগেই প্রতিষ্ঠা পেয়েছিল গৌরব ও ঐতিহ্যের এ ছাত্র সংগঠনটি। ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।তার নেতৃত্বেই ওই দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হলে আনুষ্ঠানিকভাবে এর যাত্রা শুরু হয়।তৎকালীন তরুণ নেতা শেখ মুজিবের পৃষ্ঠপোষকতায় এক ঝাঁক মেধাবী তরুণের উদ্যোগে সেদিন যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।
বিএনএনিউজ/আরকেসি