25 C
আবহাওয়া
২:৫১ পূর্বাহ্ণ - নভেম্বর ৯, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের হালচাল: সংসদীয় আসন-২৫১ (কুমিল্লা-৩)

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের হালচাল: সংসদীয় আসন-২৫১ (কুমিল্লা-৩)

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের হালচাল: সংসদীয় আসন-২৫১ (কুমিল্লা-৩)

বিএনএ,ঢাকা: বিএনএ নিউজ টুয়েন্টি ফোর ডটকম দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ধারাবাহিক নির্বাচনী হালচাল প্রচার করছে। এতে ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত পঞ্চম জাতীয় সংসদ থেকে ২০১৮ সালের ৩০শে ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ সংসদ নির্বাচনের ভিত্তিতে রাজনৈতিক দলগুলোর আসনভিত্তিক সাংগঠনিক হালচাল তুলে ধরার চেষ্টা করে যাচ্ছে বিএনএ নিউজ টুয়েন্টি ফোর ডটকম। আজ থাকছে কুমিল্লা-৩ আসনের হালচাল।

কুমিল্লা-৩ আসন

কুমিল্লা-৩ সংসদীয় আসনটি মুরাদনগর উপজেলা নিয়ে গঠিত। এটি জাতীয় সংসদের ২৫১ তম আসন।

পঞ্চম সংসদ নির্বাচন: বিএনপির রফিকুল ইসলাম মিয়া বিজয়ী হন

১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি পঞ্চম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই আসনে ভোটার ছিলেন ২ লাখ ৭৩ হাজার ১ শত ৪৪ জন। ভোট প্রদান করেন ১ লাখ ৩০ হাজার ৮ শত ৫৩ জন। নির্বাচনে বিএনপির রফিকুল ইসলাম মিয়া বিজয়ী হন। ধানের শীষ প্রতীকে তিনি পান ৪৬ হাজার ৩ শত ৮০ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের জাহাঙ্গীর আলম। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ৪৪ হাজার ৭ শত ৯৭ ভোট ।

ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচন: বিএনপির রফিকুল ইসলাম মিয়া কে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়

১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আওয়ামী লীগসহ সব বিরোধী দল এই নির্বাচন শুধু বর্জন করে ক্ষান্ত হয়নি, প্রতিহতও করে। নির্বাচনে বিএনপি,ফ্রিডম পার্টি এবং কিছু নামসর্বস্ব রাজনৈতিক দল, অখ্যাত ব্যক্তি প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন। এই নির্বাচনে বিএনপির রফিকুল ইসলাম মিয়া কে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত এই সংসদের মেয়াদ ছিল মাত্র ১১ দিন। তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিল পাশ হওয়ার পর এই সংসদ বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়।

সপ্তম সংসদ নির্বাচন: জাতীয় পার্টির মোফাজ্জেল হোসেন কায়কোবাদ বিজয়ী হন

১৯৯৬ সালের ১২ জুন সপ্তম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ২ লাখ ৮ হাজার ৫৫ জন। ভোট প্রদান করেন ১ লাখ ৫৭ হাজার ৪ শত ২৩ জন। নির্বাচনে জাতীয় পার্টির মোফাজ্জেল হোসেন কায়কোবাদ বিজয়ী হন। লাঙ্গল প্রতীকে তিনি পান ৫৩ হাজার ৮ শত ৯২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুন। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ৫০ হাজার ৬৩ ভোট।

অষ্টম সংসদ নির্বাচন: বিএনপির মোফাজ্জেল হোসেন কায়কোবাদ বিজয়ী হন

২০০১ সালের পহেলা অক্টোবর অষ্টম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ৩ লাখ ৬ হাজার ১ শত ৮৮ জন। ভোট প্রদান করেন ১ লাখ ৯৯ হাজার ১ শত ৫৫ জন। নির্বাচনে বিএনপির মোফাজ্জেল হোসেন কায়কোবাদ বিজয়ী হন। ধানের শীষ প্রতীকে তিনি পান ১ লাখ ৭ হাজার ৫ শত ১১ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুন। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ৮৩ হাজার ৩ শত ১ ভোট।

নবম সংসদ নির্বাচন: মোফাজ্জেল হোসেন কায়কোবাদ বিজয়ী হন

২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নবম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ২ লাখ ৮১ হাজার ৫ শত ২৩ জন। ভোট প্রদান করেন ২ লাখ ৪১ হাজার ৭ শত ২৭ জন। নির্বাচনে বিএনপির মোফাজ্জেল হোসেন কায়কোবাদ বিজয়ী হন । ধানের শীষ প্রতীকে তিনি পান ১ লাখ ২৪ হাজার ৩ শত ৮৬ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের জাহাঙ্গীর আলম। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ১ লাখ ৯ হাজার ৮ শত ২৩ ভোট।

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন: ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুন বিজয়ী হন

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ৩ লাখ ৩০ হাজার ৮ শত ২৬ জন। ভোট প্রদান করেন ১ লাখ ৩৮ হাজার ৭ শত ৪ জন। নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুন বিজয়ী হন। আনারস প্রতীকে তিনি পান ৭৮ হাজার ৬ শত ৪৭ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আহসানুল আলম কিশোর। ফুটবল প্রতীকে তিনি পান ৫৬ হাজার ৩ শত ৩৬ ভোট।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধিনে র্নিবাচনের দাবিতে, বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট এই নির্বাচনে অংশ গ্রহন করেনি।

২০১৮ সালের ৩০শে ডিসেম্বর একাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ৩ লাখ ৮৩ হাজার ৮৬ জন। ভোট প্রদান করেন ২ লাখ ৯৫ হাজার ৪ শত ৮৯ জন।

একাদশ সংসদ নির্বাচন: আওয়ামী লীগের ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুন বিজয়ী হন

নির্বাচনে প্রার্থী ছিলেন ১৫ জন। নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুন, ধানের শীষ প্রতীকে বিএনপির কে এম মজিবুল হক, হাতপাখা প্রতীকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আহমদ আবদুল কাইয়ুম, গোলাপ ফুল প্রতীকে জাকের পার্টির কাজী নজরুল ইসলাম, লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির আলমগীর হোসেন, কাঁঠাল প্রতীকে বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির মো: হেলাল উদ্দীন, বাঘ প্রতীকে প্রগতিশীল গনতান্ত্রিক দল পিডিপির কামাল উদ্দীন ভুঁঞা, মাথাল প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী কাজী মোস্তাকিম আহমেদ , বাই সাইকেল প্রতীকে জাতীয় পার্টি-জেপির কাজী জাহাঙ্গীর আমির, কুড়াল প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম, উদীয়মান সূর্য প্রতীকে গনফোরামের মোহাম্মদ আকবর আমিন বাবুল, নোঙ্গর প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল্লাহ নজরুল, ডাব প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ, সিংহ প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী আরিফুল ইসলাম এবং আপেল প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হেলাল উদ্দীন প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন।

নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুন বিজয়ী হন। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ২ লাখ ৭৩ হাজার ১ শত ৮২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিএনপির কে এম মজিবুল হক । ধানের শীষ প্রতীকে তিনি পান মাত্র ১২ হাজার ৪ শত ৫ ভোট।

কারচুপির অভিযোগে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচন বর্জন ও ফলাফল প্রত্যাখান করে।
পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, পঞ্চম, ষষ্ঠ, অষ্টম ও নবম সংসদে বিএনপি, সপ্তম সংসদে জাতীয় পার্টি, দশম সংসদে স্বতন্ত্র প্রার্থী এবং একাদশ সংসদ আওয়ামী লীগ বিজয়ী হয়।

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনএ নিউজ টুয়েন্টি ফোর এর গবেষণা টিম দৈবচয়ন পদ্ধতিতে সারাদেশে জরিপ চালায়। জরিপে অংশগ্রহণকারি বেশীরভাগ ভোটার ১৯৯১ সালের পঞ্চম, ১৯৯৬ সালের সপ্তম, ২০০১ সালের অষ্টম ও ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সুষ্ঠু, নিরেপক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক হয়েছে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন। তারই ভিত্তিতে বিএনএ নিউজ টুয়েন্টি ফোর কুমিল্লা-৩ আসনে পঞ্চম, সপ্তম, অষ্টম ও নবম এই ৪টি নির্বাচনের প্রদত্ত ভোটের পরিসংখ্যানকে মানদন্ড ধরে আওয়ামী লীগ,বিএনপি, জাতীয় পার্টি ও জামায়াত ইসলামীর সাংগঠনিক শক্তি বিশ্লেষণের মাধ্যমে একটি কল্পানুমান উপস্থাপনের চেষ্টা করেছে।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, কুমিল্লা-৩ সংসদীয় আসনে ১৯৯১ সালের পঞ্চম সংসদ নির্বাচনে ভোট প্রদান করেন ৪৭.৯১% ভোটার। প্রদত্ত ভোটের মধ্যে আওয়ামী লীগ ৩৪.২৩%, বিএনপি ৩৫.৪৪%, স্বতন্ত্র ও অন্যান্য ৩০.৩৩% ভোট পায়।
১৯৯৬ সালের সপ্তম সংসদ নির্বাচনে ভোট প্রদান করেন ৭৫.৬৬% ভোটার। প্রদত্ত ভোটের মধ্যে আওয়ামী লীগ ৩১.৮০%, বিএনপি ৩০.৩৪% জাতীয় পাটি ৩৪.২৩%, জামায়াত ইসলামী ২.২৭% স্বতন্ত্র ও অন্যান্য ১.৩৬% ভোট পায়।
২০০১ সালের অষ্টম সংসদ নির্বাচনে ভোট প্রদান করেন ৬৫.০৪% ভোটার। প্রদত্ত ভোটের মধ্যে আওয়ামী লীগ ৪১.৮৩%, ৪ দলীয় জোট ৫৩.৯৮%, জাতীয় পাটি ১.৪৬%, স্বতন্ত্র ও অন্যান্য ২.৭৩% ভোট পায়।

২০০৮ সালের নবম সংসদ নির্বাচনে ভোট প্রদান করেন ৮৪.৭০% ভোটার। প্রদত্ত ভোটের মধ্যে ১৪ দলীয় জোট ৪৬.০৬%, ৪ দলীয় জোট ৫২.১৭% স্বতন্ত্র ও অন্যান্য ১.৭৭% ভোট পায়।

কুমিল্লা-৩ (মুরাদনগর) আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুন ।দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি আবারও মনোনয়ন চাইবেন। এছাড়াও মনোনয়ন চাইবেন কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম সরকার। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার আগে ও পরে জাহাঙ্গীর আলম সরকার বরাবরই একজন ‘নির্যাতিত নেতা’। মুরাদনগর উপজেলা চেয়ারম্যান আহসানুল আলম সরকার কিশোর তাঁর ছেলে। বিভিন্ন জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হওয়ার পেছনে জাহাঙ্গীর আলম সরকারের ভূমিকা রয়েছে। সব মিলিয়ে ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুন ও জাহাঙ্গীর আলম সরকার সম্ভাব্য দুই হেভিওয়েট প্রার্থী।

কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ম রুহুল আমীন, আহসানুল আলম সরকার কিশোর এবং মুরাদনগর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান সৈয়দ আব্দুল কাইয়ূম খসরুও মনোনয়ন চাইতে পারেন।

জাহাঙ্গীর আলম সরকার বলেন, জাতীয় পার্টি ও বিএনপির আমলে নির্যাতিত হয়েছেন তিনি। আন্দোলন সংগ্রামে নিজের পকেটের টাকা খরচ করে, ঘাম ঝরিয়ে সংগঠনকে শক্তিশালী করেছেন। অথচ দল ক্ষমতায় আসার পর নেতা-কর্মীরা নির্যাতিত হচ্ছেন। তার নেতৃত্ব নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন। তাঁদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এই আসনে নির্বাচন করবেন এমন প্রত্যাশা রয়েছে তার।

বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান মোফাজ্জল হোসাইন কায়কোবাদ এই আসন থেকে ৫ বার সংসদ সদস্য হয়েছিলেন । কিন্তু গ্রেনেড হামলা মামলায় তিনি যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত হন। ২০০৯ সাল থেকে তিনি বিদেশে পলাতক ছিলেন এবং ২০২৩ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারী পলাতক অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

বিএনপি থেকে মনোনয়ন চাইবেন মোফাজ্জল হোসাইন কায়কোবাদ এর ভাই কে এম মজিবুল হক, কাজী জুন্নুন বসরি ও কাজী শাহ আরেফিন। তিনজনের মধ্যে কে প্রার্থী হবেন, তা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে রয়েছেন তাঁদের পরিবার এবং বিএনপির নেতা-কর্মীরা। এছাড়া মনোনয়ন চাইবেন ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়ার স্ত্রী খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা সাহিদা রফিক।
মুরাদনগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মোহাম্মদ মহিউদ্দিন অঞ্জন বলেন, বিএনপি এখন এক দফার দাবিতে অনড় এবং আন্দোলন করে যাচ্ছে। নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে, কায়কোবাদ পরিবারের সদস্যদের যে কেউ নির্বাচন করবেন এবং জিতবেন ।

জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়ন চাইবেন মুরাদনগর উপজেলা কমিটির সভাপতি মো. আনোয়ার হোসেন মোল্লা ও মুরাদ নগর উপজেলা জাতীয় পার্টির সাবেক সভাপতি আক্তার হোসেন।

তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণে দেখা যায়, এই আসনটিতে অআওয়ামী লীগ সাংগঠনিক দিক থেকে স্বাধীনতার পর থেকেই দূর্বল। ১৯৭৩ সালের প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের আলী আজম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। এরপর বিএনপি, জাতীয় পাটি প্রার্থীরা ঘুরে ফিরে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলেও এই আসনে দীর্ঘ ৪৫ বছর রাজনৈতিক দুর্ভিক্ষে ছিল আওয়ামী লীগ। এমন কী ২০১৪ সালের দশম নির্বাচনেও আওয়ামী লীগ প্রার্থী জয়ী হতে পারেনি। জয়ী হয় স্বতন্ত্র প্রার্থী এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুন। ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে ইউছুফ আবদুল্লাহ হারুন আওয়ামী লীগে যোগদান করেন এবং সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

এই আসনে আওয়ামী লীগের রাজনীতি দুই ভাগে বিভক্ত। এক গ্রুপ বর্তমান সংসদ সদস্য এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুনের সঙ্গে, অপর ভাগের নেতৃত্বে কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম সরকার। ঠেলাঠেলির রাজনীতিতে এই আসনে কোনঠাসা আওয়ামী লীগ।
এই আসন থেকে পাঁচ বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন প্রয়াত কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসাইন কায়কোবাদ। প্রথমে জাতীয় পার্টি ও পরে বিএনপিতে যোগদান করে পুরো মুরাদ নগর দাপিয়ে বেড়াতেন। এমনকি নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলেও এই আসনের প্রতিনিধিত্ব করেন কায়কোবাদ। ২০০৯ সাল থেকে তিনি বিদেশে পলাতক ছিলেন। এরপরই বদলে যায় ভোটের মাঠ। কিন্তু মাঠ পুরোপুরি দখলে নিতে পারেনি আওয়ামী লীগ। বিএনপি সাংগঠনিক দিক থেকে শক্ত অবস্থানে রয়েছে। তৃণমুল পর্যায়ে প্রচুর নিরব ভোট রয়েছে। ভোট ব্যাংক আছে জাতীয় পার্টি ও জামায়াত ইসলামীর। তাদের ভোট ব্যাংক জয় পরাজয়ের ফ্যাক্টর।

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক হলে জাতীয় সংসদের ২৫১তম সংসদীয় আসন (কুমিল্লা-৩) আসনটিতে বিএনপি বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনা বেশি বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

বিএনএ/শাম্মী, রেহানা, ওজি, ওয়াইএইচ

Loading


শিরোনাম বিএনএ