বিএনএ ডেস্ক: সংলাপের নামে বিএনপি আনুবীক্ষণিক দলগুলোর সাথে বৈঠক করছে। এমন মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহ্মুদ।
সোমবার (৩ অক্টোবর) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে বিএনপি’র সাম্প্রতিক সংলাপ নিয়ে এ মন্তব্য করেন তিনি। এর আগে, বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক নাসিমের নিকট থেকে কাউন্সিলের বার্ষিক প্রতিবেদন ২০২১ গ্রহণ করেন।
এসময় প্রেস কাউন্সিলের সদস্যদের মধ্যে শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা, দি ডেইলি অবজারভার সম্পাদক ইকবাল সোবহান চৌধুরী, দৈনিক যুগান্তর সম্পাদক সাইফুল আলম, দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি সম্পাদক এম. জি কিবরিয়া চৌধুরী, বিএফইউজের দপ্তর সম্পাদক সেবিকা রাণী, প্রেস কাউন্সিল সচিব শাহ আলম এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপি ২০১৮ সালেও সমস্ত দলের সাথে সংলাপ করেছিল, সংলাপ করে একটি বড় ঐক্য, তাদের ভাষায় একটি জাতীয় ঐক্য তারা প্রতিষ্ঠা করেছিল। সেই ঐক্যের ফলাফল হচ্ছে বিএনপি মাত্র পাঁচটি আসন পেয়েছিল। সেখানে ডানপন্থী-বামপন্থী, অতি ডান-অতি বামরা ছিল।
আবার মাইক্রোস্কোপিক দলগুলোও ছিল যেমন শনিবার (২ অক্টোবর) তারা বৈঠক করেছে কল্যাণ পার্টির সাথে। মন্ত্রী বলেন, আনুবীক্ষণিক দলের সাথে বৈঠক করে যখন তারা বলে যে বৃহত্তর ঐক্য গঠন করবে, তখন মানুষ হাসে। কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান আছে, মহাসচিব যে কে আমি জানি না, মির্জা ফখরুল সাহেব জানেন কি না তাও আমি জানি না। এ ধরনের দলের সাথে বৈঠক কিছু সংখ্যক সংবাদ পরিবেশন করা ছাড়া অন্য কোনো কিছু নয়।
নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন রাষ্ট্রদূতের মন্তব্য প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এটি তো নতুন নয়, যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য যারা রাষ্ট্রদূত ছিল তারাও এ নিয়ে কথা বলেছে এবং অন্যান্য দেশের রাষ্ট্রদূতরাও এ নিয়ে কথা বলে। আমরা তো তাদের সাথে একমত। আমরা স্বচ্ছ এবং অংশগ্রহণমূলক একটি নির্বাচন চাই। এটি শুধুমাত্র সরকারি দলের দায়িত্ব না, এ দায়িত্ব কিন্তু সব দলের।
হাছান মাহমুদ বলেন, যারা এ নিয়ে বক্তব্য রাখছেন, আশা করি তাদের সেই বক্তব্যগুলো বিএনপিসহ যারা সংঘাতময় পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা চালায় তাদের কানে পৌঁছুবে। নির্বাচন কমিশনের অধিনে একটি অংশগ্রহণমূলক স্বচ্ছ নির্বাচন করার ক্ষেত্রে তারা সহায়তা করবে। মন্ত্রী বলেন, বিদেশি রাষ্ট্রদূতরা অবশ্যই আমাদের নির্বাচন নিয়ে পরামর্শ দিতে পারেন, সেটি যেন অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের মতো না হয় একইসাথে কূটনৈতিক শালীনতা যেন লঙ্ঘন না হয়।
প্রেস কাউন্সিল প্রসঙ্গে ড. হাছান বলেন, বঙ্গবন্ধুর হাত ধরেই প্রেস কাউন্সিল প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এটির উদ্দেশ্য ছিল পাঠক এবং সংবাদপত্রের মধ্যে যদি কোনো বিরোধ তৈরি হয় সেটি নিষ্পত্তি করা। তথ্যমন্ত্রী বলেন, গত ১৩-১৪ বছরে বাংলাদেশে গণমাধ্যমের ব্যাপক বিকাশ ঘটেছে, সেটির সাথে নানাবিধ সমস্যা, জটিলতাও তৈরি হয়েছে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘নিবন্ধন নেই এমন অনলাইন পত্রিকাকে সাংবাদিক নামে পরিচয়পত্র দিতে দেখা যায়, অনেক পত্রপত্রিকা আছে যেগুলো বের হয় না, সাংবাদিকদের নিয়োগ দেয় কিন্তু বেতন দেয় না, সেগুলো আমরা চিহ্নিত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা শুরু করেছি।
হাছান মাহমুদ বলেন, অংশীজনদের সাথে আলাপ আলোচনার ভিত্তিতে সাংবাদিকদের একটা ডেটাবেজ তৈরি করার জন্য প্রেস কাউন্সিলকে আমরা অনুরোধ জানিয়েছিলাম। কিসের ভিত্তিতে এই তালিকা হবে তার নীতিমালার খসড়া তৈরি হয়েছে। এই উদ্যোগ আমরা সরকারের পক্ষ থেকে নেইনি। কারণ কিছু মানুষ সাংবাদিক নাম নিয়ে মানুষকে হয়রানি করা ধরনের কাজের সাথে লিপ্ত হয়, আর দোষটা পুরো সাংবাদিক সমাজের ওপর বর্তায়, যেটি ঠিক নয়, সমীচীন নয় বলে মন্তব্য করেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
বিএনএ/এ আর