বিএনএ, ডেস্ক : ২০২৫ সালের ১৪ এপ্রিল পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যায়ে ভারতের একাধিক রাজ্যকে অন্তর্ভুক্ত করে, ‘গ্রেটার বাংলাদেশ’ নামের একটি মানচিত্র প্রকাশের ঘটনাকে কেন্দ্র করে, ভারতের লোকসভায় বিতর্ক হয়েছে। ওই মানচিত্রে পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, ঝাড়খণ্ডকেও বাংলাদেশের অংশ দেখানো হয়েছে। বিষয়টি ভারতের পার্লামেন্ট, লোকসভায় হৈ-চৈ ফেলে দিয়েছে।

শুক্রবার রাজ্যসভায় বর্ষাকালীন অধিবেশনে কংগ্রেস সাংসদ, রণদীপ সিং সুরজেওয়ালা, দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্করের কাছে জানতে চান- সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যায়ে সালতানাত-ই-বাংলা নামের একটি ইসলামপন্থি গোষ্ঠী তথাকথিত ‘গ্রেটার বাংলাদেশ’ নামের একটি মানচিত্র প্রকাশ করে। ভারতের একাধিক রাজ্যকে সেই মানচিত্রে বাংলাদেশি ভূখণ্ড হিসেবে প্রদর্শন করা হয়।
কংগ্রেস সাংসদ রণদীপ সিং সুরজেওয়ালার অভিযোগ, ‘সালতানাত-ই-বাংলা’ নামের এই গোষ্ঠীটি তুরস্কভিত্তিক এনজিও, তার্কিশ ইউথ ফেডারেশনের সহায়তা ও মদতপুষ্ট। নয়াদিল্লি বাংলাদেশ সরকারের কাছে, এ বিষয়টি কূটনৈতিক স্তরে তুলে ধরেছে কি না? এছাড়াও বাংলাদেশের সঙ্গে তুরস্ক ও পাকিস্তানের সাম্প্রতিক সখ্যতার পর, ভারত সরকার নিরাপত্তা আরও বাড়িয়েছে কি না, তাও জানতে চান ওই এমপি।
জবাবে, বাংলাদেশের ওপর ভারত নিবিড়ভাবে নজর রাখছে বলে জানিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর। তিনি বলেন ভারতের জাতীয় স্বার্থ ও নিরাপত্তার জন্যই নয়াদিল্লি বাংলাদেশের ব্যাপারে—বিশেষ ভাবে মনযোগী।
জয়শঙ্কর আরও বলেন, “আমরা এ ইস্যুতে বাংলাদেশের সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। সরকারি ফ্যাক্টচেকার প্ল্যাটফরম বাংলাফ্যাক্টের বরাত দিয়ে, বাংলাদেশের সরকার আমাদের জানিয়েছে, ২০২৫ সালের ১৪ এপ্রিল পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে একটি ইতিহাস সম্পর্কিত প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে মধ্যযুগের বাংলার একটি মানচিত্র প্রদর্শন করা হয়েছিল। ওই প্রদর্শনীর যারা আয়োজক ছিলেন, তারা বাংলাদেশের সরকারকে বলেছেন, কোনো বিদেশি সংস্থা বা গোষ্ঠীর সঙ্গে তাদের সম্পর্ক নেই। বাংলাদেশের সরকারের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়েছে ‘সালতানাত-ই-বাংলা’ নামের কোনো সংগঠন বা গোষ্ঠীর অস্তিত্ব বাংলাদেশে নেই।”
প্রসঙ্গত সালতানাত -ই- বাংলা বা সুলতানি বাংলা ছিল ১৪শ থেকে ১৬শ শতাব্দীর মাঝামাঝি, বঙ্গ অঞ্চলে স্থিত একটি শেষ মধ্যযুগীয় সালতানাত। বাংলা সালতানাতকে ‘শাহী বাঙ্গালা’ নামেও অভিহিত করা হতো। গাঙ্গেয় বদ্বীপ অঞ্চলে এটি ছিল প্রভাবশালী শক্তি। ভারতীয় উপমহাদেশে সামন্ত রাজ্য গড়ে তোলার মাধ্যমে বাংলা সালতানাত তাদের অঞ্চল বিস্তৃত করেছিল। দক্ষিণ-পশ্চিমে ওড়িশা, দক্ষিণ-পূর্বে আরাকান ও পূর্বে ত্রিপুরা পর্যন্ত তাদের প্রভাব ছিল।
বিএনএ/ সৈয়দ সাকিব