বিএনএ ডেস্ক : এটি কোনো সিনেমার দৃশ্য নয়। শুক্রবার সন্ধ্যায় খুলনায় দুস্কৃতিকারিরা পিটিয়ে হত্যা করেছে পুলিশ কনস্টেবল সুমন কুমার ঘরামীকে। রাত সোয়া নয়টার দিকে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মোজাম্মেল হক, হাসপাতালে যান। এসময় মিতু বিশ্বাসের তোপের মুখে পড়েন পুলিশ কমিশনার। সুমন কুমার ঘরামীর স্ত্রী মিতু বিশ্বাস, বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না তার স্বামী আর বেচেঁ নেই।
খুলনায় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত ৩৩ বছর বয়সী পুলিশ কনস্টেবল সুমন কুমার ঘরামীর স্ত্রী মিতু বিশ্বাসের বিলাপ যেনো থামছেই না। সামনেই যাকে পাচ্ছেন, তাকে ধরেই আহাজারি করছেন। কখনো বিলাপ করতে করতে জড়িয়ে ধরছিলেন অন্যকে, কখনোবা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছিলেন। পুলিশ কমিশনার সামনে যেতেই সুমনের স্ত্রী মিতু বিশ্বাস বলতে থাকেন ”আমার সুমন কই? আপনাদের ডিউটি করতে গিয়ে সুমন মারা গেছে…।” পুলিশের অন্য এক কর্মকর্তার পা জড়িয়ে ধরে বলছিলেন, ”স্যার, আমার সুমনকে এনে দেন… “ এই অবস্থায় পুলিশ কমিশনার নিজেও কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন এবং মুখ লুকিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
হাসপাতালে দাঁড়িয়ে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মোজাম্মেল হক বলেন, ‘আমাদের ১৫ থেকে ২০ জন সদস্যকে তারা পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছে। কনস্টেবল সুমনকে তারা এমনভাবে আঘাত করেছে যে, তাঁর মাথায় ইন্টারনাল ইনজুরি হয়ে যায়, তাঁর মাথার খুলি ভেঙে যায়। তাঁকে এনে আইসিইউতে নেওয়ার পর তিনি মারা যান। এর বাহিরে আমাদের অন্য একজন সদস্য আইসিইউতে আছেন।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের সোনাডাঙ্গা জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার সৌমেন বিশ্বাসের দেহরক্ষী ছিলেন সুমন। ঘটনা সর্ম্পকে মর্মস্পশী বর্ণনা দেন সৌমেন বিশ্বাস।
নিহত সুমন কুমার ঘরামীর বাড়ি বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলায়। সুশীল কুমার ঘরামী ও গীতা রানী ঘরামীর সন্তান তিনি। তিনি স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে ভাড়া থাকতেন নগরের বয়রা এলাকায়। সুমন-মিতু দম্পতির ৬ বছর বয়সী একমাত্র মেয়ে স্নিগ্ধা। সে তার বাবাকে খুঁজছিল বারবার।
নিহত সুমনের এক স্বজন বলেন, ‘বাবা আর মেয়ের সকাল শুরু হতো গান দিয়ে। মেয়েটা ওর বাবার নয়নের মণি ছিল। সুন্দর হাসিখুশিভরা সংসারটার এখন কী হবে!
বিএনএ/ শামীমা চৌধুরী শাম্মী, ওজি