বিএনএ ডেস্ক: নয় দফা দাবি আদায়ে সারাদেশে আজ বিক্ষোভ সমাবেশ করবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। শুক্রবার (২ আগস্ট) রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ এ ঘোষণা দেন।
সারা দেশে ছাত্র-নাগরিকের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে হামলা ও ৯ দফা দাবিতে এই কর্মসূচির ডাক দেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এসময় সারা দেশে অলিতে-গলিতে, পাড়ায়-পাড়ায় সংগঠিত হয়ে কর্মসূচি সফল করার আহ্বান জানানো হয়।
আহ্বানগুলো হলো–
কোনো ধরনের ট্যাক্স কিংবা খাজনা প্রদান না করা।
বিদ্যুৎ বিল, গ্যাস বিল, পানিসহ অন্যান্য সকল সরকারি ইউটিলিটি বিল না দেওয়া।
সরকারি-বেসরকারি সব ধরনের প্রতিষ্ঠান, অফিস-আদালত বন্ধ রাখা।
সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা।
রেমিট্যান্স পাঠানো থেকে বিরত থাকা।
সরকারি সব ধরনের আয়োজন বর্জন করা।
শুক্রবার রাত পৌনে ৮টার দিকে ফেসবুক লাইভে এসে একই কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আবদুল হান্নান। একই সময়ে আরেক সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ ফেসবুকে এই কর্মসূচি নিশ্চিত করেন।
শুক্রবার দেশের বিভিন্ন স্থানে রাস্তায় আন্দোলন হয়। রাজধানীর সায়েন্সল্যাবে অবস্থান নেয় শিক্ষার্থীরা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাংশের ডাকা গণমিছিল সফল করতে সায়েন্সল্যাব মোড়ে জড়ো হন তারা। এসময় সায়েন্সল্যাব মোড়ের পাশে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের অবস্থান নিতে দেখা গেছে। সতর্ক অবস্থানে ছিল পুলিশের সদস্যরাও।
এ ছাড়া নওগাঁ, নরসিংদী ও কুমিল্লাসহ বিভিন্ন স্থানে আন্দোলন হয়। হবিগঞ্জে সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া খুলনায় নিহত হয়েছেন এক পুলিশ কনস্টেবল।
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ব্যাপক সহিংসতার মধ্যে গত ২৬ জুলাই বিকেলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চিকিৎসাধীন নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ এবং তাঁদের সঙ্গে আবু বাকেরকে তুলে আনে ডিবি পুলিশ। পরদিন সন্ধ্যায় তুলে নেওয়া হয় সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহকে। আর ২৮ জুলাই ডিবি অফিস নেওয়া হয় নুসরাত তাবাসসুমকে। এরপর থেকে তাঁরা মিন্টো রোডের ডিবি অফিসেই ছিলেন।
একই দিন ডিবি কার্যালয়ে সমন্বয়কদের সঙ্গে খাওয়া-দাওয়ার কয়েকটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রকাশ করেন তৎকালীন ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদ। এরপর সমন্বয়কদের পরিবারের সদস্যরাও ডিবি অফিসে গিয়ে তাঁদের সঙ্গে দেখা করেন।
ডিবি হেফাজতে থেকেই গত ২৮ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৬ সমন্বয়ক সকল আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। তবে এই ঘোষণাকে প্রত্যাখ্যান করে এরপর থেকেই নতুন করে বিভিন্ন আন্দোলন করে আসছেন অন্য সমন্বয়কেরা। গত বৃহস্পতিবার তাদের ডিবি কার্যালয় থেকে পরিবারের জিম্মায় দেওয়া হয়।
গত ১৬ জুলাই থেকে এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন স্থানে সহিংসতার ঘটনা ঘটতে থাকে। এসব ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৫০ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে সরকার। তবে আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে এই সংখ্যা ২৬৬ জন।
বিএনএনিউজ২৪/ এমএইচ