বিএনএ,চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় হেফাজতের মিছিল থেকে হামলায় নিহত আওয়ামী লীগ নেতা মো. মুহিবুল্লাহ হত্যা মামলার প্রধান আসামি বিএনপি নেতা মো. ইউনুছ মনিকে (৫০) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সোমবার (৩ মে) রাঙ্গুনিয়া উপজেলাধীন শিলক ইউনিয়নের নটুয়ার টিলা এলাকায় অভিযান চালিয়ে দুর্গম পাহাড়ের দিকে পলায়নরত অবস্থায় তাকে গ্রেপ্তার করে। বিষয়টি জানিয়েছেন রাঙ্গুনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহবুব মিল্কী।
জানা যায়, গ্রেপ্তারকৃত ইউনুছ মনি রাঙ্গুনিয়া উপজেলার কোদালা সেনবাড়ি এলাকার মৃত নূর হোসেনের পুত্র। তিনি রাঙ্গুনিয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য। তার বিরুদ্ধে ২০০৭ সাল থেকে শুরু করে চাঁদাবাজি, সরকারি কাজে বাধাদান, হত্যাসহ বিভিন্ন অভিযোগে রাঙ্গুনিয়া থানায় মোট ৫টি মামলা রয়েছে বলেও পুলিশ জানায়।
রাঙ্গুনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহবুব মিল্কী বলেন, আসামি মো. ইউনুছ মনি পুলিশ দেখে পাহাড়ি এলাকার দিকে পালানোর সময় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। মুহিবুল্লাহ হত্যা মামলায় ইউনুছ মনিসহ এই পর্যন্ত ৩৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই মামলার অন্য আসামিদেরও গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে বলে জানান তিনি।
উল্লেখ, নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে একটি রিসোর্টে নারীসহ হেফাজত ইসলামের বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হককে অবরুদ্ধ করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে হেফাজতের হামলার প্রথম বলি হয়েছিলেন চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার আওয়ামী লীগ নেতা মো. মহিবুল্লাহ। ৩ এপ্রিল রাত ৮ টার দিকে মামুনুলকে আটকের খবর ছড়িয়ে পড়লে রাঙ্গুনিয়ার কোদালায় একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন হেফাজত ইসলামসহ স্থানীয় বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীরা। একপর্যায়ে ৫ নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ পাড়া জামে মসজিদের সামনে বিক্ষোভরত হেফাজত কর্মীরা লাটিসোঁটা নিয়ে হামলা চালায়। এতে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য মো. মহিবুল্লাহ, ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আবদুল জব্বার ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক দিলদার আজম লিটন আহত হন। গুরুতর আহত মহিবুল্লাহকে উন্নত চিকিৎসার জন্য নগরীর পার্কভিউ হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। সেখানে ৩ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।
ঘটনার প্রেক্ষিতে রাঙ্গুনিয়া থানায় দাঙ্গা সৃষ্টি ও বিস্ফোরক আইনে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলা দুটিতেই বিএনপি-জামায়াতের একাধিক নেতা-কর্মী ও হেফাজত সমর্থকসহ ৬৪ জন এজাহার নামীয় এবং অজ্ঞাতনামা ১৫০ জনসহ মোট ২১৪ জনকে আসামি করা হয়। দুই মামলাতেই প্রধান আসামি করা হয় উপজেলা বিএনপি নেতা মো. ইউনুছ মনিকে।
বিএনএনিউজ/মনির
