বিএনএ ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের সদ্য বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নজিরবিহীন দ্বিতীয় অভিশংসন বিচার সপ্তাহখানেকের মধ্যেই শুরু হতে যাচ্ছে। ডেমোক্র্যাটরা এরই মধ্যে অভিশংসন মামলার কাঠামো দাঁড় করিয়ে ফেললেও আইনজীবী দলে ব্যাপক ওলট-পালটের কারণে ট্রাম্পকে তার প্রতিক্রিয়া প্রস্তুত করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
সাবেক এ মার্কিন প্রেসিডেন্টকে আগামী মঙ্গলবারের মধ্যে অভিশংসনের অভিযোগের প্রতিক্রিয়া জমা দিতে হবে, অথচ কয়েকদিন আগেই তিনি তার শীর্ষ আইনি উপদেষ্টাদের বদলেছেন। তার নতুন দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন আইনপ্রণেতা ডেভিড স্কোয়েন ও ব্রুস ক্যাস্টর, যারা সিনেটে ট্রাম্পের অভিশংসন বিচারের প্রস্তুতির জন্য সময় পাচ্ছেন এক সপ্তাহের সামান্য বেশি। ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে মার্কিন কংগ্রেসের উচ্চকক্ষে বিদায়ী প্রেসিডেন্টের অভিশংসন বিচারের যুক্তিতর্ক শুরু হচ্ছে। ডেমোক্র্যাটরা ট্রাম্পকে ‘বিদ্রোহে উসকানি’ দেয়ার দায়ে অভিযুক্ত করলেও সিনেটে তাকে দোষী সাব্যস্ত করা যাবে কিনা, তা নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট জো বাইডেনের জয়ের স্বীকৃতি আটকানোর চেষ্টায় ট্রাম্প সমর্থকদের ক্যাপিটল ভবনে হামলা চালাতে উসকে দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। ওই হামলায় পুলিশসহ পাঁচজন নিহত হন।
সদ্য বিদায়ী এ প্রেসিডেন্টকে দোষী সাব্যস্ত করতে উচ্চকক্ষের ৫০ রিপাবলিকান সদস্যের অন্তত ১৭ জনকে ডেমোক্র্যাটদের পাশে এসে দাঁড়াতে হবে। ট্রাম্প দোষী সাব্যস্ত হলেও এই বিচার যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতা কাঠামোতে তেমন প্রভাব ফেলবে না। কারণ ২০ জানুয়ারি মেয়াদ শেষে দায়িত্ব হস্তান্তরের পর ট্রাম্প আর দেশটির ক্ষমতা কাঠামোর কেউ নন। কিন্তু তাতে যা হবে তা হল, ট্রাম্প আর কখনো প্রেসিডেন্ট বা সরকারি কোনো পদের জন্য লড়তে পারবেন না। সিনেটে অভিযোগকারীর দায়িত্ব পালন করা প্রতিনিধি পরিষদের ডেমোক্র্যাট সদস্যরা ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মামলা সংক্রান্ত প্রাথমিক ব্রিফিং হাজির করবেন; মামলার তারা কোনো সাক্ষী রাখবেন কিনা, মঙ্গলবারের মধ্যে তারও ইঙ্গিত পাওয়া যেতে পারে। ট্রাম্পের প্রথম অভিশংসন বিচারেও সাক্ষী রাখা না রাখা নিয়ে রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে তুমুল বিরোধ দেখা গিয়েছিল। অভিযোগকারীদের ব্রিফিংয়ের প্রতিক্রিয়ায় ট্রাম্পের উত্তরের মধ্যেই বোঝা যাবে, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হারের পর প্রমাণ ছাড়াই ভোটে ব্যাপক কারচুপির যেসব অভিযোগ করেছিলেন, সেগুলো তিনি ফের উত্থাপন করবেন কিনা। ভোটে জালিয়াতির ট্রাম্পের ওইসব অভিযোগ যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন কেন্দ্রীয় ও রাজ্য আদালত খারিজ করে দিয়েছে। ক্যাপিটল হিলে দাঙ্গার পর স্তম্ভিত রিপাবলিকানরা সহিংসতার উসকানিতে ট্রাম্পের ভূমিকার প্রতিক্রিয়া কীভাবে জানানো যায়, তা নিয়ে হিমশিম খেলেও এখন অধিকাংশই তাকে দোষী সাব্যস্ত করার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন বলে জানিয়েছে রয়টার্স। রিপাবলিকানদের অনেকে সাবেক কোনো প্রেসিডেন্টকে কংগ্রেসের অভিশংসিত করার ক্ষমতা আছে কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন