বিএনএ ঢাকা: ইসি গঠনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে সব দল অংশগ্রহণ করবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ। তবে কেউ অংশ না নিলেও কোনো সংকট হবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সোমবার (৩ জানুয়ারি) বনানী কবরস্থানে সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন মাহবুব উল আলম হানিফ।
সে সময় তিনি আরও বলেন,বিএনপির নেতিবাচক মানসিকতার কারণে জনগণ তাদের বয়কট করেছে। খালেদা জিয়া সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরুক তা সবাই চায় কিন্তু আইন সবার জন্য সমান। রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাওয়া ছাড়া আইনি কোনো সুযোগ নেই বলে মনে করেন এই আওয়ামী লীগ নেতা।
এছাড়া, জাতির নানা ক্রান্তিকালে সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের ভূমিকা চির স্মরণীয় হয়ে থাকবে বলে জানান মাহবুব উল আলম হানিফ।
এদিকে, ২০১৯ সালের ৩ জানুয়ারি ব্যাংককের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।
১৯৭১ সালে মুজিবনগর সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম এর পুত্র সৈয়দ আশরাফ ১৯৫২ সালের ১ জানুয়ারি ময়মনসিংহে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নেন। মুক্তিবাহিনীর একজন সদস্য ছিলেন। ভারতের দেরাদুনে প্রশিক্ষণ নেন তিনি।
ছাত্র জীবনে ছাত্র রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন সৈয়দ আশরাফ। স্বাধীনতার পর ময়মনসিংহ জেলার ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তিনি। ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-প্রচার সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
জাতীয় চার নেতার সঙ্গে পিতা সৈয়দ নজরুল ইসলামের নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর যুক্তরাজ্য চলে যান সৈয়দ আশরাফ। প্রবাস জীবনে যুক্তরাজ্যে আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ১৯৯৬ সালে দেশে ফিরে আসেন এবং কিশোরগঞ্জ সদর আসন থেকে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। সে সময় বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
২০০১ সালের ১ অক্টোবরে অনুষ্ঠিত অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পুনরায় নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালের নির্বাচনেও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সৈয়দ আশরাফ। ২০১৫ সালের ১৬ জুলাই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেন। ২০১৮ সালের ৩০ জানুয়ারির নির্বাচনে জয়লাভ করলেও শপথ গ্রহণের আগেই ইন্তেকাল করেন এই রাজনীতিবিদ।
ওয়ান ইলেভেনের সময় দলীয় সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গ্রেফতার হওয়ার পর আওয়ামী লীগকে সুসংগঠিত রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন সৈয়দ আশরাফ। ওই সময় তিনি দলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান। পরে ২০০৯ সালের সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন তিনি। ২০১৬ সাল পর্যন্ত এই দায়িত্ব পালন করেন। পরে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নির্বাচিত হন তিনি।