বিএনএ ঢাকা: বাজার ভরা শীতকালীন সবজিতে। তবুও সরবরাহ সংকটের অজুহাতে বাড়ছে দাম। গেল এক সপ্তাহে আলু, মুলা ও কপি ছাড়া অন্য কোনো সবজির দাম কমেনি। বেশিরভাগ সবজিই বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে, কিছু সবজির দাম বাড়তি হাঁকছেন দোকানিরা। সপ্তাহ ব্যবধানে বেড়েছে পেঁয়াজ, আটা ও ডালের দাম। চিনির দামেও নেই কোনো সুখবর। সব মিলিয়ে নিত্যপণ্যের বাড়তি দাম অগ্রহায়ণ মাসের শেষে এসেও বাজারে উত্তাপ ছড়াচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে ব্যয়ের বিপরীতে আয় না বাড়ায় ভোক্তা পর্যায়ে বেড়েছে অস্বস্তি।
সরেজমিনে রাজধানীর মহাখালী, তেজগাঁও, শান্তিনগর ও কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা যায় প্রতি কেজি নতুন আলু (ছোট) বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা করে। গত সপ্তাহের ৩০-৩৫ টাকায় বিক্রি হওয়া মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪৫ টাকা করে। জাতভেদে সিম ৫০-৬০ টাকা, টমেটো ১২০ টাকা, মুলা ৩০-৪০ টাকা, চওড়া মূল্যে দেশি শসা ৭০-৮০ টাকা, পিস প্রতি ফুলকপি ৪০-৪৫ টাকা, বাঁধাকপি ৩৫-৪০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।
ব্যবসায়ীদের দাবি, সবজির বাজার সব সময় এক থাকে না। তবে অন্যান্য খাদ্যপণ্য চাহিদার তুলনায় বাজারে সরবরাহ না থাকায় মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে।
তেজগাঁও কাঁচাবাজারের সবজি বিক্রেতা হামিদ বলেন, শীতকালীন সবজির মধ্যে শিম, মুলা ও কপির দাম কিছুটা কমেছে। সরবরাহ বাড়ায় নতুন আলুর দামও কমতে শুরু করেছে। আগামী সপ্তাহের মধ্যে সবজির দাম আরও কমে আসবে।
তবে শান্তিনগর বাজারের ক্রেতা আমিনুল ইসলাম বলেন, বাজারে এসেছি ১ হাজার টাকা নিয়ে। এর মধ্যে এক কেজি মাছ কিনতে আমার গুনতে হয়েছে ৩৮০ টাকা ও এক কেজি করে শিম, মুলা, এক পিস ফুলকপি ও আধা কেজি মরিচ কিনতে ১৬০ টাকা। সব মিলিয়ে এই সামান্য বাজার করতেই আমার ৫৪০ টাকা খরচ হয়েছে। এখনো চাল, আলু, পেঁয়াজসহ অন্যান্য জিনিস কেনা বাকি রয়েছে। যে হারে খরচ বাড়ছে সেভাবে মাসের বেতন বাড়েনি। এসব ঘটনা এখন সবার জন্য নিয়মিত। খবরের লোকদের বলেও কী লাভ? আমাদের দুঃখ দেখার কেউ আছে বলেও মনে হয় না।
স্বস্তি নেই মাছ-মাংসেও। দাম অপরিবর্তিত থেকেই প্রতি কেজি বয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকায়। সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৮০-২৯০ টাকা করে। মাছের বাজারেও তেমন পরিবর্তন দেখা যায়নি। চড়া মূল্যে প্রতি কেজি কই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩৯০-৪০০ টাকা, শিং মাছ ৪০০-৪১০ টাকা, পাবদা মাছ ৩৮০-৪০০ টাকা, ১ কেজি ৫০০ গ্রাম ওজনের রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩২০-৩৩০ টাকা করে।
তবে ডিমের বাজারে কিছুটা স্বস্তি এসেছে। ডজনপ্রতি ১০ টাকা করে কমে টাকা বিক্রি হচ্ছে ফার্মের মুরগির ডিম। হাঁসের ডিম বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকা দরে, দেশি মুরগির ডিম ২৪০ টাকা ডজন দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
এদিকে আগের মতোই চড়া মূল্যে সব ধরনের চাল বিক্রি হচ্ছে। বাজারভেদে মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৭৫ টাকা করে। এ ছাড়া ব্রি-২৮ (মোটা চাল) প্রতি কেজি ৫৮ থেকে ৬০ টাকা, চিনিগুড়া ১৩০ টাকা, নাজিরশাইল ৬৮ থেকে ৮৪ টাকা, কাটারি আতপ ৭৮ থেকে ৮২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
এদিকে মুদি ব্যবসায়ীরা জানান, নতুন করে দেশি মসুর ডাল ও পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। মসুর ডাল কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ১৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৪০ টাকা। গত সপ্তাহে ৪০-৪৫ টাকায় বিক্রি হওয়া পেঁয়াজ এখন ৫০ টাকা ।
এখনো স্বাভাবিক হয়নি চিনির বাজার। পাড়া-মহল্লার অধিকাংশ দোকানে চিনি সরবরাহ নেই। যাও কয়েকটি দোকানে এ সময়কার আলোচিত ভোগ্যপণ্যটি মিলছে তারও সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে। কেজিপ্রতি চিনি ১১৫-১২০ টাকা করে বিক্রি হতে দেখা গিয়েছে।
বিএনএনিউজ২৪/ এমএইচ