কেবল বাংলাদেশেই নয়, বিশ্বের বড় বড় অর্থনীতির দেশগুলোর পুঁজিবাজারে গত সেপ্টেম্বর মাসে মন্দাভাব দেখা গেছে। যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য বৃহৎ অর্থনীতির দেশগুলোর সূচক ২ থেকে সাড়ে ৪ শতাংশের বেশি কমেছে। এর মধ্যে হংকং, তাইওয়ান, থাইল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া, ভিয়েতনাম, পাকিস্তানও রযেছে। তবে স্বস্তির বিষয় হলো- উল্লেখিত দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের সূচক সবচেয়ে কম পতন হয়েছে।
অন্যদিকে এ প্রতিকূল অবস্থার মধ্যেও যুক্তরাজ্য, চীন, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন, ভারত ও শ্রীলঙ্কার মতো দেশগুলোর পুঁজিবাজারে এসময় সূচক বেড়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পুঁজিবাজারের প্রধান সূচকগুলোর মধ্যে গত সেপ্টেম্বর মাসে ডাও জোনস ইন্ডাস্ট্রিয়াল এভারেজ সূচক ২ দশমিক ৭২ শতাংশ কমে অবস্থান করছে ৩৩ হাজার ৬১৯ পয়েন্টে। আগস্ট শেষে সূচকটির অবস্থান ছিল ৩৪ হাজার ৫৬০ পয়েন্টে। দেশটির এস অ্যান্ড পি ৫০০ সূচক সেপ্টেম্বর শেষে ৩ দশমিক ৬০ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ২৭৪ পয়েন্টে। আগস্ট শেষে যা ছিল ৪ হাজার ৪৩৩ পয়েন্টে। নাসডাক সূচক আগস্ট শেষে ছিল ১৩ হাজার ৭০৫ পয়েন্টে। সেপ্টেম্বর শেষে যা ৪ দশমিক ২৭ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ৭০৫ পয়েন্টে।
দরপতনের বিষয়ে দেশটির বিশ্লেষকরা ব্লুমবার্গকে জানিয়েছে, দীর্ঘ সময় ধরে উচ্চ সুদহার নিয়ে বিনিয়োগকারীরা দুশ্চিতায় রয়েছেন। পাশাপাশি ডলারের বাজারে অস্থিরতাও বেশি লক্ষ্য করা গেছে। এছাড়া স্বর্ণের দাম নিম্নমুখী হওয়া ও এক বছরের মধ্যে তেলের দাম সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠে যাওয়াসহ বেশকিছু কারণে গতমাসে দেশটির ডাও জোনস ইন্ডাস্ট্রিয়াল এভারেজ সূচকে বড় পতন হয়েছে। আর অন্যান্য প্রধান প্রধান সূচকগুলোর মধ্যে এস অ্যান্ড পি ৫০০ ও নাসডাক চার মাসের সর্বনিম্ন অবস্থানে নেমে এসেছে।
হংকংয়ের পুঁজিবাজারের প্রধান সূচক হ্যাং সেং গত সেপ্টেম্বর শেষে ৩ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১৭ হাজার ৫৮৭ পয়েন্টে। আগস্ট শেষে যা ছিল ১৮ হাজার ৪৭১ পয়েন্টে। আগস্ট শেষে তাইওয়ানের প্রধান সূচক তাইওয়ান ওয়াইড ছিল ১৬ হাজার ৫০৯ পয়েন্টে। সেপ্টেম্বর শেষে যা ১ দশমিক ৪১ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার ২৭৬ পয়েন্টে। থাইল্যান্ডের প্রধান সূচক সেট সেপ্টেম্বর শেষে ৪ দশমিক ৫৪ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৪৯২ পয়েন্টে। আগের মাস শেষে যা ছিল ১ হাজার ৫৬৯ পয়েন্টে। আগস্ট শেষে দক্ষিণ কোরিয়ার পুঁজিবাজারের প্রধান সূচক কসপি ছিল ২ হাজার ৫৫২ পয়েন্টে। সেপ্টেম্বর শেষে যা ৩ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৪৬৫ পয়েন্টে।
এছাড়া ভিয়েতনামের পুঁজিবাজারের প্রধান সূচক ভিএন ৩০ সেপ্টেম্বর শেষে ৪ দশমিক ৩১ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ১৬১ পয়েন্টে। আগের মাস শেষে সূচকটির অবস্থান ছিল ১ হাজার ২১৫ পয়েন্টে। আগস্ট শেষে পাকিস্তানের পুঁজিবাজারের প্রধান সূচক করাচি ১০০ এর অবস্থান ছিল ৪৬ হাজার ৬৮৬ পয়েন্টে। সেপ্টেম্বর শেষে সূচকটি ২ দশমিক ৩২ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৪৬ হাজার ৩৮০ পয়েন্টে। আর বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের প্রধান সূচক ডিএসইএক্স সেপ্টেম্বর শেষে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ২৮৫ পয়েন্টে। মাসের ব্যবধানে সূচকটি কমেছে শূন্য দশমিক ২২ শতাংশ। আগস্ট শেষে সূচকটির অবস্থান ছিল ৬ হাজার ২৯১ পয়েন্টে।
অন্যদিকে যুক্তরাজ্যের পুঁজিবাজারের প্রধান সূচক এফটিএসই ১০০ সেপ্টেম্বর মাসে ৩ দশমিক ৯৪ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার ৬৩০ পয়েন্টে। আগস্ট শেষে সূচকটির অবস্থান ছিল ৭ হাজার ৪৫২ পয়েন্টে। চীনের সাংহাই সূচক সদ্য সমাপ্ত সেপ্টেম্বর মাস শেষে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ১৩৫ পয়েন্টে। সূচকটি মাসের ব্যবধানে শূন্য দশমিক ২৮ শতাংশ বেড়েছে।
ইন্দোনেশিয়ার প্রধান পুঁজিবাজার আইডিএক্স কম্পোজিট সদ্য সমাপ্ত মাসে শূন্য দশমিক ৪২ শতাংশ বেড়েছে। সেপ্টেম্বর মাস শেষে সূচকটির অবস্থান দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৯৫২ পয়েন্টে। আগস্ট শেষে ফিলিপাইনের পুঁজিবাজারের প্রধান সূচক পিএসইআই কম্পোজিটের অবস্থান ছিল ৬ হাজার ২২৫ পয়েন্টে। সেপ্টেম্বর শেষে সূচকটি ৩ দশমিক ৪৭ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৩৭৫ পয়েন্টে।
ভারতের পুঁজিবাজারের প্রধান সূচক বিএসই সেনসেক্স সেপ্টেম্বর শেষে ১ দশমিক ৪২ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৫ হাজার ৯৩২ পয়েন্টে। আগের মাস শেষে সূচকটির অবস্থান ছিল ৬৫ হাজার ১০৩ পয়েন্টে।
বিএনএনিউজ২৪/ এমএইচ