বিএনএ, ঢাকা : অটিজম বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন ও প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য ৮ বিভাগে স্থায়ী আবাসনের ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে তিনি এ কথা জানান।
১৫তম বিশ্ব অটিজম সচেতনা দিবস ২০২২ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি জানি প্রত্যেকের ওই ধরনের চিন্তা, বাবা-মা ওইভাবে ভাবে যদি সে না থাকে তার শিশুর কী হবে। সে চিন্তা আমাদেরও আছে। সে জন্য আমাদের একটা উদ্যোগ আছে, আমরা যে ট্রাস্ট গঠন করেছি তার মাধ্যমে যদি আমরা এমন ব্যবস্থা করে ফেলি যখন কোনো গার্ডিয়ান থাকবে না, দেখা-শোনার কেউ থাকবে না তখন তারা সেখানে বসবাস করতে পারে। ট্রাস্টের মাধ্যমে আমরা এ ধরনের হোস্টেল বা ডরমিটরি নির্মাণ করতে পারি।
আর তাদের সুরক্ষা বা দেখাশোনার জন্য লোক থাকবে। সেখানে আপনারা যারা বিত্তশালী আছেন, ডোনেশন দিতে পারবেন। যার মাধ্যমে ওটা চলবে। আর সরকারের পক্ষ থেকে অন্তত আমি যতক্ষণ আছি, এটুকু বলতে পারি সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা আমরা করবো। শুধু ঢাকা শহর না, প্রত্যেকটা বিভাগীয় শহরে বা বড় বড় শহরগুলোতে এ ধরনের পদক্ষেপ আমাদের নেওয়া উচিত। কারণ এটা বাস্তবতা বাবা-মা না থাকলে তাদের কে দেখবে? সবাই তো আর আন্তরিকতার সঙ্গে দেখে না। কিছু কিছু মানুষ এত বেশি স্বার্থপর হয়ে যায়, নিজের বাবা-মাকেও দেখে না। সম্পত্তি নিয়েও মারামারি করে। সে ক্ষেত্রে এই শিশুদের কে দেখবে! সে জন্য এ ধরনের ব্যবস্থা আমরা করবো। চিন্তা-ভাবনা আছে, অবশ্যই আমরা করবো—বলেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি আরও বলেন, স্বাধীনতার পরে আমাদের ১৯টি জেলা ছিল বড়, সব জেলায় সমাজ কল্যাণের জন্য বিশাল বিশাল জায়গা দিয়ে গিয়েছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব। সেখানে এতিমখানা বা অন্যান্য প্রতিষ্ঠান আছে কিন্তু আমরা প্রতিবন্ধীদের জন্য কিছু করতে চাই। প্রতিবন্ধী ও অটিজমের শিকার শিশুদের যত্ন নেওয়া সব সুস্থ মানুষের দায়িত্ব। কেউ যেন এদের অবহেলা না করে। আমরা ছোটবেলায় শিখেছি, কানাকে কানা বলিও না, খোঁড়াকে খোঁড়া বলিও না। এটা যেন ছোটবেলা থেকেই শিশুরা শেখে। আমরা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি, এই এগিয়ে নিয়ে যাওয়াটা হচ্ছে আমাদের সর্বস্তরের মানুষের জন্য। সবাই সুন্দর জীবন পাবে, উন্নত জীবন পাবে। সুন্দরভাবে বাঁচবে। সেই লক্ষ্য নিয়ে আমরা রাষ্ট্র পরিচালনা করে যাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা কোনো একটা স্থায়ী আবাসন বা কর্মসংস্থান করা যায় সে ধরনের প্রতিষ্ঠান আমরা গড়ে তুলবো। সমাজকল্যাণমন্ত্রীকে বলবো, এর ওপর একটি প্রকল্প নিয়ে আসতে। প্রথমে ৮টি বিভাগে করে দেবো, পর্যায়ক্রমে প্রতি জেলায় আমরা করে দেবো। এ ক্ষেত্রে যারা বিত্তশালী আছেন তাদের আমি বলবো, অনেক টাকা-পয়সা অনেকের হয়ে গেছে। আমাদের অর্থনীতি যত বেশি শক্তিশালী হচ্ছে, দারিদ্র্য বিমোচন হচ্ছে। গ্রামের মানুষ আর্থিক সচ্ছলতা পাচ্ছে। কিছু এখানে ব্যয় করলে সেটা দেশের কাজে লাগবে। যথাযথ কাজে লাগবে। ট্রাস্টের মাধ্যমে এ ধরনের আবাসন ব্যবস্থা, প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা, সেইসঙ্গে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা যাতে করে ইনশাল্লাহ আমি করে দেবো।
বিএনএনিউজ/এইচ.এম।