বিএনএ, বিশ্বডেস্ক : পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন অবিলম্ব জোরপূর্বক বাস্ত্যুচ্যুত রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে সাহায্য করার জন্য জি২০ সহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) ভারতের সভাপতিত্বে দিল্লিতে জি২০ পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে এক অধিবেশনে ভাষণ দেওয়ার সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ আহবান জানান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গাদের দীর্ঘস্থায়ী অবস্থান সমগ্র অঞ্চল জুড়ে বিপর্যয়ের পাশাপাশি বিশাল নিরাপত্তা সমস্যা তৈরি করছে। তারা সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীগুলোর কাছে উগ্রবাদে দীক্ষিত করার এবং তাদের দলে টানার একটি সম্ভাব্য টার্গেট গোষ্ঠী হতে পারে।
বৈঠকে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডক্টর এস জয়শঙ্কর সভাপতিত্ব করেন।
মোমেন অবশ্য বলেন যে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের সহায়তার পাশাপাশি জীবন বাঁচাতে এবং জনগণকে অমানবিক সঙ্কট থেকে রক্ষা করতে যেকোন জরুরি পরিস্থিতি মোকাবেলায় বাংলাদেশ প্রস্তুত রয়েছে। এ প্রসঙ্গে তিনি কোভিড-১৯-এর কঠিন সময়ে কয়েকটি প্রতিবেশী দেশের প্রতি বাংলাদেশের সমর্থনের কথা উল্লেখ করেন।
অধিবেশন শুরু হয় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির রেকর্ড করা ভিডিও ভাষণ দিয়ে। গত সন্ধ্যায় একটি আড়ম্বরপূর্ণ নৈশভোজের পর শুরু হওয়া বৈঠকে বাংলাদেশসহ বিশেষভাবে আমন্ত্রিত নয়টি দেশ এবং ১৩টি আন্তর্জাতিক সংস্থাসহ ৪০টিরও বেশি প্রতিনিধি দল যোগ দেয়। এবারের সভার প্রতিপাদ্য হচ্ছে- ‘এক পৃথিবী, এক পরিবার, এক ভবিষ্যৎ’। ভারত গত ডিসেম্বরে বিশ্বের এই প্রধান অর্থনৈতিক গ্রুপটির সভাপতিত্ব পেয়েছে।
মন্ত্রী জি২০-এর সভাপতি হিসাবে শান্তিপূর্ণ উপায়ে সংকট মোকাবেলা ও সমস্যা সমাধানে জি২০-এর নেতাদের প্রভাবিত করার জন্য ভারতের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, সংকট বিবেচনা করে জি২০ নেতৃত্বের উচিত যেসব সংস্থা সংকটের কারণে বেশি মুনাফা করছে, তাদের লাভের কমপক্ষে ২০ শতাংশ সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর জন্য বরাদ্দ বাধ্যতামূলক করা।
জি২০-এ একটি পৃথক অধিবেশনে বক্তৃতা দেওয়ার সময় মোমেন ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় একটি সর্বজনীন, নিয়ম-ভিত্তিক, উন্মুক্ত, স্বচ্ছ, পূর্বাভাসযোগ্য, অন্তর্ভুক্তিমূলক, বৈষম্যহীন ও ন্যায়ঙ্গত বহুপক্ষীয় ব্যবস্থার জন্য বাংলাদেশের আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, কোভিড-১৯ সংকট ইতিমধ্যে বহুপক্ষীয় সমাধানের গুরুত্ব প্রমাণ করেছে এবং এ অভিজ্ঞতা মাথায় রেখে আমরা এ লক্ষ্যে আমাদের আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করছি। বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কথা উল্লেখ করে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী জি২০ সভাপতিকে বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক গোষ্ঠীর নেতৃত্বকে প্রভাবিত করতে তাদের প্রতিরক্ষা ব্যয়ের অন্তত ১০ শতাংশ জলবায়ু তহবিলে দেওয়ার অনুরোধ করেন যাতে ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য এই গ্রহটিকে রক্ষা করা যায়।
জি২০ সদস্য দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং বিশেষভাবে আমন্ত্রিত ব্যক্তিগণও পৃথক অধিবেশন দুটিতে বক্তব্য রাখেন।
বিএনএনিউজ/এইচ.এম।