ঢাকা: শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছেন,আমাদের দেশের শিক্ষকরা অবহেলিত। তার মধ্যে বেসরকারি শিক্ষকরা সবচেয়ে বেশি অবহেলিত। তাদের এমপিও’র টাকা পেতে অনেক ভোগান্তি হয়। বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বদলির ব্যবস্থা না থাকায় অনেক দূরদুরান্তে গিয়ে চাকরি করতে হয়। তাদের ভোগান্তি দূর করার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে বদলির বিষয়ে ইতোমধ্যে পরিপত্র জারি করা হয়েছে। এবছর থেকেই অগ্রাধিকারভিত্তিতে অনলাইনের মাধ্যমে বদলির ব্যবস্থা করা হচ্ছে । তারা EFT’র মাধ্যমে এ মাস থেকেই বেতন পাবে।
বুধবার(১ জানুয়ারি) ঢাকায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের নতুন পাঠ্যবইয়ের মোড়ক উম্মোচন ও এনসিটিবির ওয়েবসাইটে অনলাইন ভার্সন উদ্বোধনকালে এ সব কথা বলেন।
এছাড়া, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীর এমপিও’র অর্থ, অবসর ও কল্যাণ সুবিধা অনলাইনে EFT পদ্ধতিতে প্রেরণ উদ্বোধন করেন শিক্ষা উপদেষ্টা ।
উপদেষ্টা আরও বলেন, পরিদর্শনের নামে অনেক সময় শিক্ষকদের হয়রানি করা হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এসব অনিয়ম ও দুর্নীতি দূর করতে মন্ত্রণালয়ের অধীন বিভিন্ন অধিদপ্তরগুলিতে একটি শুদ্ধি অভিযান চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, এনসিটিবির মাধ্যমে বই ছাপাতে গিয়ে এবছর শেষ পর্যন্ত যুদ্ধের মতো অবস্থা সৃষ্টি হয়েছিল। কারণ, পূর্বে বিদেশে বই ছাপানো হতো, যা এবছর বন্ধ করা হয়েছে। শিক্ষাক্রম অনিবার্যকারণে পরিবর্তন করা হয়েছে। কারিগরি বইয়ের সংখ্যা বেড়েছে। যেসময় থেকে বই ছাপানো শুরু হয়েছে তখন সময় খুব কম ছিল। তার মধ্যে অনেক বই পরিমার্জন করতে হয়েছে। অংক, বিজ্ঞান বইয়েও কিছু ভুল সংশোধন করা হয়েছে। উন্নতমানের বই, মলাট ও ছাপার ব্যবস্থা করা হয়েছে। যাতে একটি উন্নতমানের বই পেয়ে বাচ্চারা পড়ায় মনোযোগী হতে পারে।
তিনি আরো বলেন, আমি সবচেয়ে বেশি কৃতজ্ঞতা জানাবো বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের টিমকে, যারা আমার জন্য নিবেদিত হয়ে বিনা পারিশ্রমিকে রাতদিন পরিশ্রম করেছে। ঢাকার বাইরে কোথায় কোথায় আর্ট পেপার মজুত আছে সেটা তারা গোয়েন্দা লাগিয়ে খুঁজে খুঁজে বের করেছে এবং স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে আইনানুগভাবে প্রেস মালিকদেরকে ন্যায্যদামে দিয়েছে। মলাটের কাগজ মজুত না থাকায় সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে এগুলো আমদানি করতে সহযোগিতা করেছে।
উপদেষ্টা বলেন, বই ছাপানোর কাজে পদে পদে ষড়যন্ত্র ছিল, যা অতিক্রম করা হয়েছে। আজও কোনো কোনো জেলায় ষড়যন্ত্র করে বই আটকিয়ে রাখা হয়েছিল। বই ছাপানোর কাজে অনেক প্রেসের মালিক, কাগজ উৎপাদনকারী সংস্থা বর্তমানের কম মূল্যে কাগজ দিয়ে সহযোগিতা করেছে। তাদেরকে আমি ধন্যবাদ জানাই। এখনই সব বই ছাত্রছাত্রীদের হাতে পৌঁছাতে না পেরে আমি কোমলমতি শিক্ষার্থীদের এবং তাদের অভিভাবকদের প্রতি দুঃখ প্রকাশ করছি। সান্ত্বনা এতটুকুই বইগুলো আগের চেয়ে সুন্দর হবে এবং বছরের মাঝখানে মলাট ছিঁড়ে যাবে না।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ বি এম রেজাউল করীমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী প্রফেসর এম আমিনুল ইসলাম, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, সিদ্দিক জোবায়ের, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব ড. খ ম কবিরুল ইসলাম, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতি: সচিব বিলকিস জাহান রিমি, এনসিটিবির চেয়ারম্যন ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান।
বিএনএনিউজ২৪,এসজিএন