29 C
আবহাওয়া
৬:৪৭ অপরাহ্ণ - জুলাই ৩, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » চসিকের সাড়ে ৩ কোটি টাকা গায়েব!

চসিকের সাড়ে ৩ কোটি টাকা গায়েব!


বিএনএ, চট্টগ্রাম : চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে মেয়র কে?  সুমন মিয়া নামে কেউ কি মেয়র ছিলেন? এমন প্রশ্ন শুনে অনেকে প্রতিবেদকের যোগ্যতা ও মানসিকভাবে সুস্থ কীনা তা নিয়ে প্রশ্ন তুলতেই পারেন। বাস্তবে সুমন মিয়া চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র না থাকলেও দূর্নীতি দমন কমিশন  চট্টগ্রামের আগ্রাবাদস্থ  অগ্রণী ব্যাংক কপোরেট শাখায় কাগজে কলমে সুমন মিয়া নামের একজন মেয়রের সন্ধান পেয়েছে। তার বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া। আর তিনি গায়েব করে দিয়েছেন সিটি করপোরেশনের ৩ কোটি ৪৫ লাখ টাকা।

দুদক সূত্র জানায়,  চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের  মেয়রের নামে যে সব চেক আগ্রাবাদ  অগ্রণী ব্যাংকের কপোরেট শাখায় আসত তা কখনো কখনো জমা হতো সুমন মিয়া নামে এক ব্যক্তির হিসাবে।  ব্যাংকের তিন কর্মকর্তা এভাবে আত্মসাৎ করা হয় সাড়ে তিন কোটি টাকা।  কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি তাদের। দুর্নীতি দমন কমিশন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশেনের সেই কথিত মেয়র সুমন মিয়া এবং  অগ্রণী ব্যাংক আগ্রাবাদ শাখার তিন ব্যাংক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে  ৩০ জুন অভিযোগপত্র দিয়েছে আদালতে। এই দুদুকের  সময় লেগেছে  সাড়ে তিন বছর।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদক চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক ফয়সাল কাদের বলেন, সিটি করপোরেশনের মেয়রের নামে থাকা হিসাব নম্বরে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে দেওয়া চেক জমা করার কথা থাকলেও অগ্রণী ব্যাংকের তিন ব্যাংক কর্মকর্তা তা করেননি। সুমন মিয়া  নামে এক ব্যক্তির  হিসাব নম্বরে জমা করে ৩ কোটি ৪৫ লাখ  টাকা আত্মসাৎ করেন । এ জন্য তিন ব্যাংক কর্মকর্তাসহ চারজনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। দায়িত্বে অবহেলার কারণে সিটি করপোরেশনের তিন হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়।

অভিযুক্তরা হলেন  অগ্রণী ব্যাংক আগ্রাবাদ শাখার সাবেক কর্মকর্তা (ক্লিয়ার সেকশন) রফিক উদ্দিন কোরাইশী, প্রিন্সিপাল অফিসার শুভম দেওয়ান ও গাজী আরিফুর রহমান ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাসিন্দা সুমন মিয়া। একই সঙ্গে দায়িত্বে অবহেলার কারণে চসিকের প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির চৌধুরী,  হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা (বিল)  আশুতোষ দে ও হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা (বাজেট) মাসুদুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয় দুদকের অভিযোগপত্রে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০২১ সালের ১৭ নভেম্বর সিটি করপোরেশনের হিসাব নম্বরে ৮৭ লাখ টাকা জমা না করে আত্মসাতের অভিযোগে অগ্রণী ব্যাংকের আগ্রাবাদ শাখার সাবেক কর্মকর্তা রফিক উদ্দিন কোরাইশীকে আসামি করে মামলা করে দুদক। এতে বলা হয়, প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির চসিকের হিসাব নম্বরে যে পরিমাণ টাকা জমা থাকার কথা, সেই পরিমাণ টাকা জমা না থাকায় অগ্রণী ব্যাংকের শাখাপ্রধানকে ফোন করে বিষয়টি জানান। পরে শাখাপ্রধান রফিক উদ্দিন কোরাইশীকে টাকার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি প্রথমে অস্বীকার করেন। পরবর্তী সময়ে চসিকের চেকের টাকা আত্মসাতের বিষয়টি স্বীকার করেন।

দুদকের অভিযোগপত্রে বলা হয়, ২০১৫ সালের ১৮ মার্চ সুমন মিয়ার নামে অগ্রণী ব্যাংক নগরের আগ্রাবাদ শাখায় একটি সঞ্চয়ী হিসাব খোলা হয়। ব্যাংক কর্মকর্তা রফিক উদ্দিন কোরাইশী চসিকের সংশ্লিষ্ট ব্যাংক হিসাবের চেক জমা না দিয়ে সুমন মিয়া নামের ওই ব্যক্তির ব্যাংক হিসাবে জমা করতেন। এরই ধারাবাহিকতায় রফিক উদ্দিন বিভিন্ন তারিখে মেয়র, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের অনুকূলে জাপান আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা-জাইকার সোনালী ব্যাংক হিসাব থেকে ইস্যু করা ৪১টি চেক করপোরেশনের হিসাবে জমা করেননি। এগুলো সুমন মিয়ার হিসাবে জমা দিয়ে ২ কোটি ৪৬ লাখ টাকা তুলে নেওয়া হয়।

এ ছাড়া  বিভিন্ন ঠিকাদারের দেওয়া আরও আটটি চেকের ৯৯ লাখ টাকা একইভাবে তুলে নেওয়া হয়। ২০১৮ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে এই টাকা ভাউচার পরিবর্তন করে করপোরেশনের হিসাব শাখায় জমা না করে আরেকটি হিসাবে জমা হলেও করপোরেশনের হিসাব শাখার গাফিলতি রয়েছে । বিষয়টি তারা যথাযথভাবে তদারকি করেনি। এ জন্য তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থার সুপারিশ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন।

বিএনএনিউজ/ সৈয়দ সাকিব/এইচ.এম।

Loading


শিরোনাম বিএনএ