বিএনএ ডেস্ক: ২০১৬ সালের ১ জুলাই; ঢাকার গুলশানের হলি আর্টিসান বেকারিতে জঙ্গি হামলার ঘটনায় গোটা বিশ্বে তৈরি হয় চাঞ্চল্য। ১৭ বিদেশি নাগরিকসহ ২০ জনকে নৃশংসভাবে হত্যা করে নব্য জেএমবির সদস্যরা।
গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলার ৮ বছর আজ । সেদিন ১২ ঘণ্টার রুদ্ধশ্বাস জঙ্গি হামলার ভয়াবহতার সাক্ষী হয়েছিল গোটা জাতি। পরে ২ জুলাই সকালে সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডো সদস্যদের পরিচালিত ‘অপারেশন থান্ডারবোল্ট’ অপারেশনের মাধ্যমে অবসান হয় জিম্মিদশার, নিহত হয় হামলাকারী ৫ জঙ্গি।
২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল এই ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ৭ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। রায়ের বিরুদ্ধে আসামিরা হাইকোর্টে আপিল করে। পরে উচ্চ আদালত তাদের আমৃত্যু কারাগারে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
হলি আর্টিজান মামলা প্রসঙ্গে রাষ্ট্রের শীর্ষ আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, ‘নৃশংস এই জঙ্গি হামলার মামলায় ট্রাইব্যুনাল সাত জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল। হাইকোর্ট ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিল শুনানি শেষে সব আসামিকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছে। আসামিদের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের অনুকম্পা দেখানোর সুযোগ নেই।’
তিনি বলেন, এখনো হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হয়নি। রায় পেলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘হাইকোর্টের যে বেঞ্চ এ রায় দিয়েছে, সেখানে আরও অনেক ডেথ রেফারেন্স মামলা রয়েছে। সেগুলোর ওপর রায় দেওয়া হয়েছে। এছাড়া হলি আর্টিজান মামলার ট্রাইব্যুনালের রায়টি বড় ভলিউমের। ওই রায় বিচার-বিশ্লেষণ করে পূর্ণাঙ্গ রায় দিতে সময় লাগছে আদালতের। এজন্য দশ মাস পেরিয়ে গেলেও আমরা এখনো রায় পাইনি। আমি মনে করি রায় পেতে এই সময় লাগাটা স্বাভাবিক।’
রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- হামলার মূল সমন্বয়ক তামিম চৌধুরীর সহযোগী আসলাম হোসেন ওরফে রাশেদ ওরফে আবু জাররা, অস্ত্র ও বিস্ফোরক সরবরাহকারী নব্য জেএমবি নেতা হাদিসুর রহমান সাগর, জঙ্গি রাকিবুল হাসান রিগ্যান, জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব ওরফে রাজীব গান্ধী, হামলার অন্যতম পরিকল্পনাকারী আব্দুস সবুর খান (হাসান) ওরফে সোহেল মাহফুজ, শরিফুল ইসলাম ও মামুনুর রশিদ।
তাদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানাও করে বিচারিক আদালত। আর অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় এ মামলার অপর আসামি মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজানকে খালাস দেওয়া হয়।
ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেন, সব বাহিনীর আন্তরিক প্রচেষ্টায় দেশে জঙ্গিবাদ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। বড় ধরনের কোনো জঙ্গি হামলার হুমকি ও আশঙ্কা এখন নেই। হলি আর্টিজান হামলার পর সব জঙ্গির সক্ষমতা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদ ইনডেক্সের র্যাকিংয়েও বাংলাদেশ এখন অনেক উন্নত দেশের চেয়ে নিরাপদ অবস্থানে আছে। সংঘবদ্ধ হয়ে জঙ্গিদের হামলার কোনো সুযোগ নেই।
বিএনএনিউজ২৪/ এমএইচ