বিএনএ, ঢাকা: চলতি বছর সৌদি আরবে পবিত্র হজ পালন করতে গিয়ে আজ পর্যন্ত ৪৯ জন বাংলাদেশির মৃত্যুর হয়েছে। এদের মধ্যে পুরুষ ৪০ জন এবং নারী ৯ জন। মক্কায় মারা গেছেন ৪১ জন, মদিনায় ৪ জন, মিনায় ২ জন ও আরাফায় ২ জন।
শনিবার (১ জুলাই) ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ বুলেটিনে এসব তথ্য জানা গেছে। বুলেটিনে বলা হয়েছে, আজ ১২ জিলহজ্জ জামারায় পাথর নিক্ষেপ করার শেষ দিন। সন্মানিত হাজি সাহেবগণ পর্যায়ক্রমে ছোট, মধ্যম এবং বড় জামারায় পাথর নিক্ষেপ করার মাধ্যদিয়ে শেষ করেছেন হজের আনুষ্ঠানিকতা। সন্মানিত হাজি সাহেবগণ আজ সূর্যাস্তের পূর্বেই মিনা ত্যাগ করে মক্কায় ফিরে এসেছেন।
সৌদি আরবের আইন অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি হজ করতে গিয়ে যদি মৃত্যুবরণ করেন তাহলে তার মরদেহ সৌদি আরবে দাফন করা হয়। মৃতদেহ তার নিজ দেশে নিতে দেওয়া হয় না। এমনকি পরিবার-পরিজনের কোনো আপত্তি গ্রাহ্য করা হয় না।
মক্কায় হজযাত্রী মারা গেলে মসজিদুল হারামে জানাজা হয়। আর মদিনায় মারা গেলে মসজিদে নববীতে জানাজা হয়। জেদ্দায় মারা গেলে জেদ্দায় জানাজা হয়। জানাজা শেষে মক্কার শারায়া কবরস্থানে দাফন করা হয়। মদিনার জান্নাতুল বাকি কবরস্থানে অথবা জেদ্দায় কবরস্থানে দাফন করা হয়।
৪৯ জনের পরিচয় : এবার হজে গিয়ে ৩১ মে প্রথম মারা যান গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের মো. আব্দুল ওয়াহেদ (৪৬), ২ জুন শাহানারা বেগম (৬৪) ও ড. মো. শফিকুল ইসলাম (৫৮), তাদের বাড়ি যথাক্রমে ঢাকার বাটামারা ও পাবনার সদরে; ৩ জুন শেরপুরের ঝিনাইগাতির মো. আলী হোসেন (৬৭), ৪ জুন ঢাকার খিলগাওয়ের মো. আয়ুব খান (৪৮), ৬ জুন পঞ্চগড়ের রাধানগরের মো. শহিদুল আলম (৬৭), ৭ জুন বগুড়ার সান্তাহারের রোকেয়া বেগম (৬২), ৮ জুন মো. আদম উদ্দিন মণ্ডল (৭১) ও মো. আমজাদ হোসেন প্রধান (৫৭), তাদের বাড়ি যথাক্রমে নওগাঁর আত্রাই ও গাইবান্ধার বোনারপাড়া।
এ ছাড়া ৯ জুন মারা যান রংপুরের সদরের মো. মতিউর রহমান (৬৮), ১০ জুন নোয়াখালীর সোনাইমুড়ির আব্দুল মান্নান (৫৯), ১৩ জুন সাতক্ষীরার বাঁশদহার মাখতুরা খাতুন (৬১), ১২ জুন কুমিল্লার বরুড়ার মোহাম্মদ আবুল হাশেম (৬১), ১১ জুন রংপুরের বদরগঞ্জের মো. শহিদুল্লাহ মন্ডল (৭৬), ৭ জুন কুমিল্লার দেবীদ্বারের মো. আবুল হোসেন ভূইয়া (৭১), ১০ জুন চাঁদপুরের হাজিগঞ্জের মো. আব্দুল মতিন (৬০), ১২ জুন মাগুরার মোহাম্মদপুরের সৈয়দ নাইমুল হক (৬২), ১৪ জুন মারা যান রাজশাহীর বুলুনপুরের মো. শাজাহান আলী (৬৬), কুমিল্লার বরুড়ার মো. আবুল কাশেম (৪৬) ও কক্সবাজারের বদরখালীর মো. রিদওয়ান (৬৪)।
গত ১৫ জুন মারা যান নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারের আব্দুল গফুর (৬১), ১৭ জুন যশোরের বাঘের পাড়ার মো. আব্দুল কুদ্দুস খান (৬৪), ১৮ জুন টাঙ্গাইলের ধনবাড়ির মো. আব্দুল আজিজ (৬৩), ২৩ জুন লালমনিরহাটের মো. আবুল ফাত্তাহ (৬৪) ও সিলেটের খাজাঞ্চির মো. সুলেমান খান (৭৫) এবং ২৪ জুন মারা যান কক্সবাজারের মনোয়ারা বেগম (৭২), ২৫ জুন রংপুর সদরের মো. নুরুল আমিন (৬৮) ও জয়পুরহাটের আহম্মেদ আলী (৬৪), ২৬ জুন টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের হাজেরা বেগম (৬১), ২৭ জুন গাইবান্ধার মো. নাজমুল আখতার (৬৩)।
এ ছাড়া ২৮ জুন সবচেয়ে বেশি সংখ্যক ১০ জন হাজি মারা যান; তারা হলেন- ঢাকার উত্তরার জামিলা বেগম (৫৬), গাজীপুরের কালিয়াকৈরের মো. শামসুল আলম (৬২), চট্টগ্রামের সন্দ্বীপের মো. আব্দুল মান্নান (৬৯), শেরপুর সদরের হামিদা বেগম (৭৯), পিরোজপুরের নেসারাবাদের মো. আবুল কালাম (৬১), নীলফামারী সদরের বিলকিস বেগম (৫২), বগুড়া সদরের মো. হাফিজুর রহমান জিলাদার (৫৪), কুমিল্লার দাউদকান্দির মো, গিয়াসউদ্দিন (৫৭), ফরিদপুরের সদরপুরের রহমান খালাসি (৭৮) ও সিরাজগঞ্জ সদরের বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুস সালাম (৭২)।
২৯ জুন মারা যান ঢাকার সবুজবাগের মো. আব্দুল মালেক (৭১), রাজশাহীর পুঠিয়ার মো. হজরত আলী প্রামানিক (৭৭), ফেনী সদরের সিরাজুল ইসলাম (৬৭), ঢাকার সাভারের মো. আমান উল্লাহ (৭১) ও ঢাকার বাড্ডার মো. এ হান্নান ভূইয়া (৭০), ৩০ জুন ভোলার দৌলতখানের মো, শেখ ফরিদ খান (৬৬) ও মেহেরপুর সদরের মো. আক্কাস আলী (৭১)।
এবার ৩২৫টি ফ্লাইটে ব্যবস্থাপনা সদস্যসহ মোট ১,২২,৮৮৪ জন হজযাত্রী সৌদি আরব গেছেন। এর মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স পরিবহন করেছে ১৫৯টি ফ্লাইটে ৬১,১৮০ জন হজযাত্রী; সৌদি এয়ারলাইন্স পরিবহন করেছে ১১৩টি ফ্লাইটে ৪১,৪৬৮ জন হজযাত্রী এবং ফ্লাইনাস এয়ারলাইন্স পরিবহন করেছে ৫৩টি ফ্লাইটে ২০,২৩৬ জন হজযাত্রী।
গত ২১ মে থেকে হজযাত্রীদের ফ্লাইট শুরু হয়। সৌদি আরবে যাওয়ার শেষ ফ্লাইট ছিল ২২ জুন। হজ শেষে ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে ২ জুলাই এবং শেষ হবে ২ আগস্ট।
বিএনএ/এমএফ/এইচ এইচ