বিএনএ ডেস্ক: সিলেটের মানুষ গত দুই বছর আগের বন্যার ধকল এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি। এরই মধ্যে এবার বর্ষা মৌসুমের অনেক আগে ফের সিলেটজুড়ে আগাম বন্যা মানুষকে আতঙ্কিত করে তুলেছে। ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে হু হু করে বাড়ছে বিভিন্ন নদনদীর পানি। এরই মধ্যে প্লাবিত হয়েছে সিলেট সদর, জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট, কানাইঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, বিয়ানীবাজার, জকিগঞ্জ, গোলাপগঞ্জ উপজেলার অসংখ্য গ্রাম। এসব উপজেলার অধিকাংশ গ্রামীণ সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। পানিবন্দি অবস্থায় আছেন প্রায় ৫ লাখ মানুষ। শুক্রবার (৩১ মে) বিভিন্ন এলাকায় পানি হালকা কমলেও অনেক নদীর পানি এখনও প্রবাহিত হচ্ছে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
জানা গেছে, বিভিন্ন উপজেলায় এরই মধ্যে সড়কের ওপর পানি চলে আসায় যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এমনকি সিলেট নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডের নিচু এলাকায় বাসাবাড়িতে পানি ঢুকে পড়েছে। ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের বেশ কয়েকটি পরিবার পার্শ্ববর্তী আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছে।
সিলেটে গত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় বন্যা হয়েছিল ২০২২ সালে। ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে আসা ঢলে সে বছর ডুবে যায় বিভাগের চার জেলা। বিশেষজ্ঞরা সে সময় ওই বন্যার জন্য ভারী বৃষ্টি ও ঢল ছাড়াও প্রতিটি নদনদীর তলদেশ ভরাট হয়ে নাব্য হারানো, হাওরে অপরিকল্পিতভাবে বাঁধ, সড়ক, স্লুইসগেট নির্মাণ, নির্বিচারে পাহাড়-টিলা কাটাকে দায়ী করেছিলেন।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, জেলার আট উপজেলার ৪৮টি ইউনিয়ন বর্তমানে বন্যাদুর্গত। বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে এখন পর্যন্ত ৩ হাজার ৭৩৯ জন আশ্রয় নিয়েছেন। জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান জানান, বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও সার্বিক পরিস্থিতির ওপর সতর্ক দৃষ্টি রাখা হচ্ছে। ৪৭০টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। পরিস্থিতির ওপর ভিত্তি করে প্রয়োজনে আরও আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হবে। এ ছাড়া বিভিন্ন ইউনিয়নে স্বাস্থ্যকেন্দ্র খোলা হয়েছে।
এদিকে সিলেট নগরীর কুশীঘাট এলাকা, শাহজালাল উপশহর, তালতলা, ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের মিরাবাজার এলাকায় বেশ কিছু বাড়িঘরে বন্যার পানি ঢুকেছে। ইতোমধ্যে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে মনিটরিং কেন্দ্র খোলা হয়েছে। দুর্গতদের মধ্যে বিতরণের জন্য সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে কেনা হয়েছে শুকনো খাবার।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, কুশিয়ারা, সুরমা, সারি, গোয়াইন নদীর পানি গতকাল সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বিভিন্ন পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বৃষ্টিপাত ও ঢল অব্যাহত থাকলে পানি আরও বাড়তে পারে।
বিএনএনিউজ২৪/ এমএইচ