বিএনএ,চট্টগ্রাম: দেশে পেঁয়াজ আমদানির পুরোটাই স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি হতো। এখন পেঁয়াজ সংকট ও বর্তমানে রাজনৈতিক হাওয়া বদলে দেশের সমুদ্রপথেও আগের চেয়ে বেশি পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে। গত ছয় মাসে সমুদ্রপথে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে বিভিন্ন দেশ থেকে মোট ১৩ হাজার ৭১১ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। এর মধ্যে পাকিস্তান থেকে পেঁয়াজ ছয় হাজার ২৩৩ মেট্রিক টন আমদানি হয়েছে, যা একক দেশ হিসেবে বেশি। পরিসংখ্যান বলছে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে পাকিস্তান থেকে রেকর্ড পরিমাণ পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে।
বন্দরের উদ্ভিদ সংগনিরোধ স্টেশন সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ২৮ মে থেকে গত ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত সমুদ্রপথে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে বিভিন্ন দেশ থেকে মোট ১৩ হাজার ৭১১ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। গত ছয় মাসে দেশটি থেকে সমুদ্রপথে ছয় হাজার ২৩৩ মেট্রিক টন আমদানি হয়েছে। এর আগের ছয় মাসে কোনো পেঁয়াজ আমদানি হয়নি। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা মিসর থেকে তিন হাজার ৯৯৭ মেট্রিক টন। মিয়ানমার থেকে এক হাজার ৪৮৪ মেট্রিক টন, চীন থেকে এক হাজার ২৭ মেট্রিক টন, ভারত থেকে ৭০০ মেট্রিক টন এবং বাকি ২৭০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ থাইল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ড থেকে আমদানি করা হয়েছিল। আর ২২-২৩ অর্থবছরের চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে মোট চার হাজার ৪৪৬ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছিল।
চট্টগ্রামের বিভিন্ন পাইকারি ও খুচরা বাজার ঘুরে পেঁয়াজের দামের চিত্র দেখা যায়, পাইকারি বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৮৫ টাকায়। আবার কোনো কোনো দোকানে ৯০ টাকায়ও বিক্রি করা হচ্ছে। আর খুচরা বাজারের প্রতিকেজি ৯০ টাকায় বিক্রি হয়। এক মাস আগেও দেশীয় পেঁয়াজ ৮০-৮৫ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। ক্রেতাদের অভিযোগ, অসাধু ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কারণে কেজিপ্রতি পেঁয়াজ প্রায় ৯০-৯৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু বিক্রেতাদের অভিযোগ, ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি না হওয়ায় দাম বাড়ছে। চকবাজার এলাকার ক্রেতাদের অভিযোগ, প্রতি বছর পেঁয়াজ সংক্রান্ত কোনো ইস্যু নিয়ে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট করে পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে দেন।
অন্যদিকে খাতুনগঞ্জ বিক্রেতারা বলছেন, ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি না হওয়ায় দাম বাড়ছে। কারণে ভারতের পেঁয়াজও কেজিপ্রতি ১০০ টাকা পড়বে। তাই আমদানি হচ্ছে না। ফলে দাম বাড়ছে। সামনে নতুন পেয়াঁজ আসবে, তখন দাম কমবে। বন্দরের উদ্ভিদ সংগনিরোধ স্টেশনের উপপরিচালক শাহ আলম বলেন, কয়েক মাস আগেও চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে উল্লেখ করার মতো পেঁয়াজ আমদানি হতো না।
চট্টগ্রামের পেঁয়াজ আমদানিকারক সাজ্জাদ হোসেন বলেন, আমদানি কম হওয়ায় দেশের কৃষকের উৎপাদিত পেঁয়াজের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত হয়েছে। যদিও আমাদের পেঁয়াজের আইপি (ইমপোর্ট পারমিট) অর্থাৎ আমদানি অনুমতি নেয়া আছে। ভারত থেকে আগের তুলনায় কম আমদানি হচ্ছে না। ফলে পেঁয়াজের দাম ৯০ থেকে ১০০ টাকা বিক্রয় হচ্ছে। দেশে বছরের পেঁয়াজের চাহিদা ৩৫ থেকে ৩৬ লাখ টন। এর বিপরীতে গত বছরের দেশে উৎপাদিত হয়েছে ৩২ লাখ টন। আর বিদেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি হয় গড়ে আট-দশ লাখ টন।
বিএনএনিউজ/ নাবিদ/ এইচমুন্নী