বিএনএ ডেস্ক: করোনা ভাইরাসের পর বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে মাঙ্কিপক্স। বাংলাদেশেও ভাইরাসটি প্রবেশ করার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়-বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ।
শনিবার (৩০ জুলাই) দুপুরে বিএসএমএমইউতে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়ে দেশবাসীকে আগাম সতর্ক করেন ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন,মাঙ্কিপক্স ঠেকাতে সমকামী পুরুষদের যৌনসঙ্গী কমানোর পরামর্শ দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। বলা হচ্ছে, আর ২৬ শতাংশ রোগীর মাঙ্কিপক্সের সাথে এইচআইভি-পজিটিভ ধরা পড়ছে।
বিএসএমএমইউ উপাচার্য বলেন, মাঙ্কিপক্স সরাসরি সংস্পর্শের মাধ্যমে ছড়ায়, যার মধ্যে শ্লেষ্মা ঝিল্লি এবং ত্বকের ক্ষতের মাধ্যমে বা দূষিত বস্তুর সংস্পর্শে আসা অন্যতম। এটি শ্বাসপ্রশ্বাসের ফোঁটা বা ড্রপলেট দ্বারাও সংক্রমিত হতে পারে। মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত ব্যক্তির স্বল্প দূরত্বে এবং দীর্ঘক্ষণ সান্নিধ্যে থাকলে এবং আক্রান্ত অন্য ব্যক্তির সাথে ঘনিষ্ঠ শারীরিক যোগাযোগ হলে যে কেউ এতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে পড়বেন।
ডা. শারফুদ্দিন বলেন, এখন পর্যন্ত বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশের প্রায় ১৭ হাজার মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে ৭৫ জনের। এই অবস্থায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা মাঙ্কিপক্সকে শনাক্তযোগ্য ও বর্ধনশীল ব্যাধি হিসেবে বর্ণনা করেছেন। গত ২৩ জুলাই মাঙ্কিপক্স নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সর্বোচ্চ স্তরের সতর্কতা জারি করেছেন।
উপাচার্য বলেন, মাঙ্কিপক্স একটি ডিএনএ ভাইরাস। কাউপক্স, ভ্যাক্সিনিয়া এবং ভ্যারিওলা (স্ম্যালপক্স) এই গ্রুপের ভাইরাস। এই ভাইরাস প্রাথমিকভাবে সংক্রমিত প্রাণীর সাথে সরাসরি যোগাযোগের মাধ্যমে বা সম্ভবত তাদের (জংলী কুকুর, ইঁদুর, খরগোশ, কাঠবিড়ালি, বানর, সজারু ইত্যাদি) অপর্যাপ্তভাবে রান্না করা মাংস খাওয়ার মাধ্যমে ঘটে।
ডা. শারফুদ্দিন বলেন, প্রতিদিনই মাঙ্কিপক্সে আক্রান্তের খবর আসছে। গতকালও ব্রাজিলে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। পরিস্থিতি কোনদিকে যায় বলা মুশকিল। তাই আতঙ্কিত না হয়ে এখন থেকেই সতর্ক থাকতে হবে। করোনা চীন হয়ে ইতালি দিয়ে বাংলাদেশে এসেছে, মাঙ্কিপক্স যে একইভাবে আসবে না তা নিশ্চিত নয়। তাই সময় থাকতে সচেতন হতে হবে।
এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী মাঙ্কিপক্স প্রতিরোধে গুটি বসন্তের টিকা ৮৫ ভাগ সুরক্ষা দেয় বলে জানান ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ। বলেন, কিন্তু ১৯৮১ সালের পর বাংলাদেশে এই টিকা দেওয়া বন্ধ হয়ে যায়। এখন ভাইরাসটির প্রকোপ যদি বেড়ে যায়, প্রয়োজনে আবারও সেই টিকা প্রয়োগ করা হবে। একই সঙ্গে যাদের বাসায় পোষা প্রাণী আছে, তাদের একটু সচেতন হতে হবে। কেননা, এটি প্রাণী থেকে প্রাণী এবং সেখান থেকে মানুষকে সংক্রমিত করে।
বিএনএ/ এ আর