বিএনএ, জাবিঃ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) স্বাক্ষর ও সিলমোহর জালিয়াতির দায়ে আজীবন বহিষ্কৃত ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সাবেক সভাপতি মিখা পিরেগু এখনও বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে অবস্থান করছে। মিখা পিরেগু বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ৪৪ ব্যাচের শিক্ষার্থী ও ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের বিগত কমিটির সভাপতি ছিলেন।
গত বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজীবন বহিস্কারের বিষয়টি নিশ্চিত করে। বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ‘বিশেষ পরিক্ষার অনুমতির আবেদনপত্রে বিভাগীয় সভাপতির স্বাক্ষর ও সীলমোহর জালিয়াতি সংক্রান্ত গঠিত কমিটির সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে মিখা পিরেগুকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চিরতরে বহিস্থার করা হলো।’
হলে থাকার বিষয়টি মিখা পিরেগু স্বীকার করে বলেন, ‘আমি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আজীবন বহিষ্কারের বিষয়টি পুনঃবিবেচনার জন্য আবেদন করেছি। আবেদনের বিষয়ে এখনও জবাব পাইনি, তাই হলে থাকছি।’
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ৪০১, ৪১২ ও ৪১৩ নম্বর কক্ষ তিনটি ছাত্র ইউনিয়রের ‘কক্ষ’ হিসেবে পরিচিত। মিখা পিরেগু হলের ৪১২ নম্বর রুমে নিয়মিত অবস্থান করছেন। চার সিটের এই রুমে বাকি তিনজন ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের বর্তমান কমিটিতে রয়েছেন।
বাকি তিনজন হলেন সহ-সভাপতি রিফাত খান অনিক, শিক্ষা ও গবেষনা সম্পাদক অমর্ত্য রায় এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক মো. সৈকত। ছাত্র ইউনিয়নের পদে থাকার পরেও বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে বহিস্কৃত একজন ছাত্রকে দীর্ঘদিন ‘আশ্রয়’ দেওয়ার বিষয়ে জানতে রুমের বাকি তিনজনের সাথে যোগাযোগ করা হয়।
কমিটির শিক্ষা ও গবেষনা সম্পাদক অমর্ত্য রায় বলেন, ‘সে নিয়মিত ঢাকায় থাকতো। মাঝে মাঝে হলে আসতো। তার পারিবারিক সমস্যার কারণে গত দেড় মাস ধরে হলে নিয়মিত থাকছে।’
বহিস্কৃত একজন আপনার রুমে অবস্থান করছে কিন্তু শিক্ষা ও গবেষনা সম্পাদক হয়েও আপনি কেন ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি? এমন প্রশ্নের জবাবে শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক অমর্ত্য রায় বলেন, ‘আমরা এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’
সহ-সভাপতি রিফাত খান অনিক বলেন, ‘তিনি আজীবন বহিষ্কারের সিদ্ধান্তের পুন:বিবেচনার বিষয়ে প্রশাসনের নিকট আবেদন করেছেন তাই সেই সিদ্ধান্ত আসা পর্যন্ত তিনি হলে থাকতে পারবেন বলে জানিয়েছেন। তাই আর এই বিষয়ে আমরা কোন ব্যবস্থা নেইনি।’ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক মো. সৈকত বলেন, ‘আমি ভাইয়ের বহিস্কারের বিষয়টি জানতাম না।’
তবে বহিষ্কার হওয়ার পর কেউ হলে অবস্থান করতে পারবে না বলে নিশ্চিত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলেন, ‘কেউ সাময়িক বহিষ্কার হলেও হলে থাকার অধিকার নাই সেক্ষেত্রে আজীবন বহিষ্কার হলে কোনভাবেই হলে থাকার সুযোগ নেই।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি আখতারুজ্জামান সোহেল বলেন, ‘কেউ সাধারণ শিক্ষার্থী হোক বা কোন রাজনৈতিক সংগঠনের নেতা-কর্মী হোক আজীবন বহিষ্কার হয়ে কেউ কোন ভাবেই হলে অবস্থান করতে পারে না। এটি একটি নৈতিকতা বিরোধী কাজ।’
এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের নবনিযুক্ত প্রভোস্ট অধ্যাপক ইস্রাফিল আহমেদ বলেন, ‘আমি বিষয়টি তোমাদের মাধ্যমে জানলাম। আমি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিবো।’
বিএনএ/সানভীর, এমএফ
Total Viewed and Shared : 112