বিএনএ, ঢাকা : করোনাভাইরাসের চেয়ে ভয়ঙ্কর অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স (এএমআর) মোকাবিলায় পাঁচটি কর্মের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার (২৯ এপ্রিল) রাতে এএমআর সম্পর্কিত উচ্চ স্তরের সংলাপে তিনি এসব পরামর্শ দেন।
এএমআর নিয়ে গঠিত গ্লোবাল লিডার্স গ্রুপের অংশগ্রহণে এ সংলাপের আহ্বান করেন জাতিসংঘের জেনারেলঅ্যাসেম্বলির প্রেসিডেন্ট। এতে কো-চেয়ার হিসেবে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উপস্থিত ছিলেন আরেক কো-চেয়ার বার্বাডোসের প্রধানমন্ত্রী মিয়া আমোর মোটলে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্ব এখন ভয়াবহ কোভিড-১৯ মহামারীর মোকবেলা করছে এবং এএমআর ভবিষ্যতে আরও মারাত্মক মহামারী হয়ে দেখা দিতে পারে।
‘এই বিপদ সময়মতো মোকাবেলায় ব্যর্থতার ফলে মানবজীবন, প্রাণী এবং উদ্ভিদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হবে,’ যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লুএইচও)-র অনুমান অনুযায়ী, এএমআর থেকে ২০৫০ সাল নাগাদ প্রতি বছর ১ কোটি মানুষ মারা যাবেন।
ডাব্লুএইচওর পূর্বাভাসের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি আরও বলেন, এএমআরের আর্থিক ক্ষতি কোটি কোটি ডলারের হবে যা খাদ্য সুরক্ষা এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যসমূহ (এসডিজি) এবং সার্বজনীন স্বাস্থ্য কভারেজ অর্জনের অগ্রগতিকে ব্যাহত করবে।
এই পটভূমির প্রেক্ষিতে, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী, যিনি এএমআর-এ গ্লোবাল লিডার্স গ্রুপের সহ-সভাপতি এএমআর-এর বিরুদ্ধে লড়াই এবং একে কার্যকরভাবে মোকাবেলার জন্য এবং বিপদে কার্যকরভাবে লড়াই করতে সংলাপে পাঁচ দফা কর্মপরিকল্পনা উপস্থাপন করেন।
শেখ হাসিনা তার প্রথম প্রস্তাবনায় স্বল্প ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে বিশেষ মনোযোগ দিয়ে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক উভয় স্তরে এএমআর বিষয়ে সমন্বিত বহু-বিভাগীয় এবং সম্মিলিত কর্ম পরিকল্পনা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
‘এএমআর মোকাবেলা করার জন্য ভাল উৎপাদন, পরীক্ষাগার অনুশীলন এবং নজরদারি কাঠামোর প্রয়োজন,’ প্রধানমন্ত্রী তাঁর দ্বিতীয় প্রস্তাবে বলেন।
প্রধানমন্ত্রী তার তৃতীয় প্রস্তাবনায়, প্রযুক্তি হস্তান্তর ও মালিকানা ভাগ করে নেওয়ার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় হিসেবে সাশ্রয়ী মূল্যের এবং কার্যকর অ্যান্টিবায়োটিকগুলোতে উপযুক্ত প্রবেশাধিকার নিশ্চিতের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।
তাঁর চতুর্থ এবং পঞ্চম প্রস্তাবনায়, তিনি সদস্য দেশগুলোর মধ্যে রাজনৈতিক অঙ্গিকার এবং অংশীদারিত্বের মাধ্যমে এএমআর প্রতিরোধ কার্যক্রমের জন্য টেকসই অর্থায়ন এবং এটির (এএমআর) বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য বিশ্ব জনগণের সচেতনতার পক্ষে মত দেন।
এএমআর-এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তাঁর সরকারের পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, তাঁরা অ্যান্টিমাইক্রোবায়াল রেজিস্ট্যান্স কনটেনমেন্ট-এআরসি সম্পর্কিত ছয় বছরের (২০১৭ থেকে ২০২২) জাতীয় কৌশলগত পরিকল্পনা এবং জাতীয় কর্মপরিকল্পনা তৈরি করেছে।
‘তদুপরি, এআরসি সম্পর্কিত জাতীয় টেকনিক্যাল কমিটি এবং বাংলাদেশ এএমআর রেসপন্স জোট গঠন করা হয়েছে,’ তিনি বলেন।
প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন, ডব্লিউএইচও’র শ্রেণিবিন্যাস নিশ্চিত করতে মানব ও প্রাণী উভয়েরই স্বাস্থ্যের জন্য পরীক্ষাগার ভিত্তিক এএমআর নজরদারি নিয়মিত পরিচালিত হচ্ছে।
বিএনএনিউজ/ এইচ.এম।