28 C
আবহাওয়া
১০:০৩ পূর্বাহ্ণ - জুন ৫, ২০২৩
Bnanews24.com
Home » বৃষ্টি হলেই দুর্ভোগ জাবিতে, নেই নিষ্কাশন ব্যবস্থা

বৃষ্টি হলেই দুর্ভোগ জাবিতে, নেই নিষ্কাশন ব্যবস্থা

বৃষ্টি হলেই দুর্ভোগ জাবিতে, নেই নিষ্কাশন ব্যবস্থা

।।সানভীর ইসলাম।।

বিএনএ, জাবিঃ বলা হয়ে থাকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) বৃষ্টি সবচেয়ে সুন্দর। এখানকার বৃষ্টি যেকোনো বয়সের মানুষকে রোমাঞ্চিত করে। তাই সময় পেলে বৃষ্টি বিলাসে মেতে উঠে এখানকার তরুণ-তরুণীরা। কিন্তু এ সৌন্দর্যের অপর পাশে রয়েছে বৃষ্টির কারণে সৃষ্ট সমস্যা। এ পসলা বৃষ্টিতে সৃষ্ট জলাবদ্ধতা পথচারীদের জন্য মারাত্মক দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ সমস্যার জন্য ফুটপাত ও নিষ্কাশন ব্যবস্থার অনুপস্থিতিকে দায়ি করছেন অনেকে।

শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের একটি অংশের অভিযোগ, ক্যাম্পাসের রাস্তায় নিরাপদে চলাচলের জন্য ফুটপাত খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু দুঃখের বিষয় বিশাল ক্যাম্পাসে এরকম কোনো সুযোগ-সুবিধা রাখা হয়নি। অন্যদিকে ক্যাম্পাসে ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টিতে রাস্তার দু’ধারে পানি ও কাদা জমে যায়। যার ফলে রাস্তার পাশ দিয়ে চলাচল সম্পূর্ণ অনুপযোগী হয়ে পড়ে। পথচারীরা বাধ্য হয় রাস্তা মধ্যে দিয়ে চলাচলের। একই রাস্তায় পথচারী, রিকশা, সাইকেল, মোটরসাইকেল, ব্যক্তিগত গাড়ি কিংবা বাসের মত বড় যানবাহন একসাথে চলাচল করতে হয়। এতে করে একদিকে যেমন বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয় অন্যদিকে তেমনি দুর্ঘটনার আশংকা তৈরি হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাহমুদুল হক বলেন, ‘আমরা এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি হওয়ার পর থেকে এটি আমার নিজের বাড়ির মত হয়ে গেছে। আমি সবসময়ই চাইবো বিশ্ববিদ্যালয় যেন আমার বসবাসের উপযোগী হতে। বিভিন্ন সময় আমাকে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় যেতে হয়। সবসময় আমার পক্ষে রিকশা বা অন্য কোনো যানবাহনে চলাচল সম্ভব হয়ে উঠে না। তখন পায়ে হেঁটে আমাকে গন্তব্যে পৌঁছাতে হয়। কিন্তু বৃষ্টির দিনে রাস্তায় চলাচলের যে দুর্ভোগ পোহাতে হয় সেটা অন্য কোনো ঋতুতে হয় না। অথচ প্রশাসনের এ দিকে কোনো নজরই নেই। ক্যাম্পাসে হাজার হাজার কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে ক্যাম্পাসের এ বেসিক চাহিদা পূরণের কোনো ইচ্ছা দেখা যাচ্ছে না।’

সম্প্রতি জাবিতে ১৪’শ কোটি টাকার মেঘাপ্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। সেখানে স্পোর্টস কমপ্লেক্স, লাইব্রেরি, প্রশাসনিক ভবন সহ নানান অবকাঠামোতে বিনিয়োগ করা হলেও ক্যাম্পাসের চলমান ফুটপাত ও নিষ্কাশন ব্যবস্থার দিকে কোনো নজর দেওয়া হয়নি।

এ বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক নাসির উদ্দিন বাংলাদেশ নিউজ এজেন্সি (বিএনএ)কে বলেন, ‘ক্যাম্পাসে প্রকল্পের জন্য বাজেট প্রনোয়ণ করা হলে অসংখ্য চাহিদা মধ্যে থেকে কিছু চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হয়। তবে এটা সত্য যে ৫০ বছরেও একটা ক্যাম্পাসে ফুটপাত আর নিষ্কাশন ব্যবস্থা না হওয়াটা খুবই হাতাশা জনক। তবে আমরা অবশ্যই অদূর ভবিষ্যতে এ সমস্যা সমাধান করবো।’

এক সাথে পথচারী ও যানবাহন চলাচলের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা এ সমস্যা সমাধানে জন্য বর্তমান রাস্তায় আলাদা লেন ব্যবস্থা তৈরির উদ্যোগ নিয়েছি। পথচারী, সাইকেল ও অন্যান্য যানবাহনের জন্য আলাদা লেনের ব্যবস্থা করা হবে।’

সাবেক ছাত্রইউনিয়নের সভাপতি রাকিবুল হক বিএনএ-কে বলেন, ‘লেক ভরাট হয়ে যাওয়া, একটি লেকের সাথে আরেকটি লেকের সংযোগ না থাকাসহ নানান কারণে অল্প বৃষ্টিতেই ক্যাম্পাসের অধিকাংশ রাস্তায় পানি জমে যায়। ন্যাচারাল ড্রেনেজ ছাড়া কোনো ড্রেনেরই তো অস্তিত্ব নেই আমাদের ক্যাম্পাসে! কাজেই এমন হওয়াটা খুব স্বাভাবিক। তার মধ্যে চলমান উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় যত্রতত্র এত এত স্থাপনা নির্মাণ ও প্রকল্পের অধীনে কোনো ড্রেইনেজ সিস্টেম কিংবা সেন্ট্রাল সুয়ারেজ সিস্টেম না থাকায় ভবিষ্যতে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হবে। প্রশাসনের তা অনুধাবন করা দরকার।’

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আক্তারুজ্জামান সোহেল বলেন, ‘আমরা বেশ কিছুদিন আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগে জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য ড্রেনেজ ব্যবস্থা স্থাপনের দাবি জানাই। এছাড়াও ক্যাম্পাসে সাধারণ শিক্ষার্থী ও প্রতিবন্ধদের চলাচলের জন্য আলাদা ফুটপাত স্থাপনেরও দাবি উত্থাপন করি। কিন্তু এত গুরুত্বপূর্ণ একটি সমস্যা সমাধানের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনও কোনো উদ্যোগ না নেওয়াটা খুবই দুঃখজনক।’

তবে এ বিষয়ে জানার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

বিএনএ/এমএফ

Total Viewed and Shared : 121 


শিরোনাম বিএনএ