বিএনএ,চট্টগ্রাম : চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীতে চোরাই পেট্রোলিয়াম তেল পাচার ও ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে প্রকাশ্যে সংঘর্ষে জড়িয়েছে স্থানীয় দুটি রাজনৈতিক গ্রুপের সদস্যরা। যদিও একটি গ্রুপ দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগের ছত্রচ্ছায়ায় থাকলেও বর্তমানে তারা বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
বুধবার (২৮ মে) সকাল ১০টার দিকে কর্ণফুলী উপজেলার জুলধা ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ডাঙ্গারচর ৯ নম্বর বিওসি ঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর একটি দল দ্রুত অভিযান চালিয়ে ঘটনাস্থল থেকে চারজনকে আটক করে।
আটক ব্যক্তিরা হলেন—জুলধা ৩ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি বাহার (৪৬), আলমগীর, ইউনুস ও শাহনুর। সবাই ডাঙ্গারচর এলাকার বাসিন্দা। স্থানীয়ভাবে তারা দীর্ঘদিন ধরে দুই প্রধান রাজনৈতিক দলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে জানা গেছে।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা হারানোর পর কর্ণফুলী নদীকেন্দ্রিক চোরাই ‘পিলাই তেল’ ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কর্ণফুলী বিএনপির অভ্যন্তরে দুটি গ্রুপের মধ্যে দ্বন্দ্ব তীব্র আকার ধারণ করে। নদীঘাটের নিয়ন্ত্রণ, তেল ওঠানোর সিরিয়াল ও ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে শুরু হয় প্রকাশ্য বিরোধ।
বুধবার সকালে দুই পক্ষই ঘাট দখল নিতে গেলে সংঘর্ষ বেধে যায়। সংঘর্ষের সময় স্থানীয়দের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে সেনাবাহিনী দ্রুত হস্তক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং চারজনকে আটক করে। এ সময় আটক ব্যক্তিদের উল্টো করে শুইয়ে রাখার দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়।
এ বিষয়ে কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শরীফ বলেন, “সেনাবাহিনী চারজনকে থানায় এনেছিল। পরে তাদের মধ্যে তিনজনকে আবার নিয়ে গেছে। বিস্তারিত আমাদের জানানো হয়নি।”
সেনাবাহিনীর সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, আটক ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে প্রয়োজনীয় আইনগত প্রক্রিয়ার জন্য থানায় হস্তান্তর করার প্রস্তুতি চলছে।
এ দিকে স্থানীয়রা অভিযোগ করছেন, দীর্ঘদিন ধরে প্রশাসনের নীরবতা এবং নিরপেক্ষ পদক্ষেপের অভাবেই নদীঘাটকেন্দ্রিক চোরাই তেলের সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। তারা অবিলম্বে এসব অবৈধ কার্যক্রম বন্ধে প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ দাবি করেছেন।
বিএনএ