বিএনএ বিশ্ব ডেস্ক: কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে জোড়া আত্মঘাতী বোমা হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১০৩ জনে পৌঁছেছে। আহত হয়েছেন ১৫০ জনের বেশি মানুষ। নিহতদের মধ্যে ৯০ জনই বেসামরিক আফগান নাগরিক ও ১৩ জন মার্কিন সেনা রয়েছেন। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
শুক্রবার (২৭ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল। কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যমটি আরও জানায়,আহতদের মধ্যে ১৮ জন মার্কিন সেনা ও চাকরিজীবী রয়েছেন।
বৃহস্পতিবারের হামলার পর বিদ্যমান পরিস্থিতিতে আরও হামলার আশঙ্কা করছে যুক্তরাষ্ট্র। সাংবাদিকদের কাছে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন মার্কিন সামরিক বাহিনীর মেরিন কমান্ডার জেনারেল ফ্রাংক ম্যাকেঞ্জি ।
সংবাদ মাধ্যমগুলো জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কাবুল বিমানবন্দরে পরপর দু’টি আত্মঘাতি বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। প্রথম বিস্ফোরণটি হয় অ্যাবেই গেটের কাছে। যেখানে মার্কিন ও ব্রিটিশ বাহিনী বিমানবন্দরের দায়িত্বে ছিল। হামলার পর গোলাগুলির ঘটনাও ঘটে। এর কিছুক্ষণ পরেই দ্বিতীয় বিস্ফোরণ ঘটে ব্যারন হোটেলের পাশে। যেখানে ব্রিটিশ কর্মকর্তারা যুক্তরাজ্যে ভ্রমণ প্রত্যাশী আফগানদের প্রয়োজনীয় সহায়তা দিচ্ছিল।
আফগান সাংবাদিক বিলাল সারওয়ারি এক টুইটে বলেছেন, বিমানবন্দরের অ্যাবেই গেটের বাইরে কাগজপত্র যাচাই-বাছাইয়ের জন্য একটি পয়ঃনিষ্কাশন খালের পাশে নারী শিশুসহ অনেক আফগান অপেক্ষা করছিলেন। সেখানেই ভিড়ের মধ্যে আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে এক হামলাকারী নিজেকে উড়িয়ে দেয়। বিস্ফোরণের পর গুলিবর্ষণ শুরু করে আরেক হামলাকারী।
এদিকে, বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিস্ফোরণ পরবর্তী ভিডিওতে মৃতদেহের স্তূপ দেখা গেছে। আহতদের অনেককে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঘটনাস্থলে থেকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। অনেককে ঘটনাস্থলেই প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
দুই দফা আত্মঘাতি বিস্ফোরণে দায় স্বীকার করে বিবৃতি দিয়েছে ইসলামিক স্টেট অব ইরাক অ্যান্ড দ্য লেভান্ট-আইএসআইএল। আত্মঘাতীর ছবিও প্রকাশ করেছে নিষিদ্ধ এই জঙ্গি গোষ্ঠীটি। নিজস্ব বার্তা সংস্থা আমাক-এর এক প্রতিবেদনে হামলার দায় স্বীকার করে তারা।
অন্যদিকে, বর্বর এই হামলার ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। হামলার পেছনে দায়ীদের খুঁজে বের করে শাস্তি নিশ্চিত করার কথাও জানিয়েছেন তিনি। জো বাইডেন বলেছেন, এই হামলার কথা ভুলেও যাবে না। হামলাকারীদের অবশ্যই খুঁজে বের করা হবে। জড়িতদেরকে এর মূল্য দিতে হবে বলেও হুশিয়ারী মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
তালেবান যোদ্ধারা কাবুল দখল করার পর আফগানিস্তান থেকে হাজার হাজার মানুষ বিদেশে পাড়ি জমানোর চেষ্টা করছে। সে কারণে প্রতিদিন কাবুল বিমানবন্দরে অস্বাভাবিক মাত্রায় মানুষের ভিড় ও গোলযোগ দেখা যাচ্ছে। আর এই ভিড়ের মধ্যেই বিস্ফোরণ ঘাটানো হলো।
বিএনএনিউজ/আরকেসি