বিএনএ, ঢাকা: র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) কর্মকর্তাদের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে দায়ী করেছে সংসদীয় কমিটি।
বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর এই গুরুত্বপূর্ণ সংস্থার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের এ ধরনের সিদ্ধান্তের বিষয়ে বাংলাদেশ দূতাবাস আগে থেকে অবহিত না হওয়ার বিষয়টি বড় ব্যর্থতা বলে মনে করে কমিটি।
বুধবার (২৭ এপ্রিল) সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকের কার্যবিবরণী থেকে এ তথ্য জানা যায়।
বৈঠকে, অন্য কোনো দেশ বা সংস্থা থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের নিষেধাজ্ঞা দেয়া হচ্ছে কি না, তা অবহিত করার পাশাপাশি আমেরিকা ও ইউরোপসহ পৃথিবীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দেশে অবস্থিত মিশনগুলোকে আরও সক্রিয় ও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের সুপারিশ করে সংসদীয় কমিটি।
সংসদীয় কমিটির সভাপতি মুহম্মদ ফারুক খান বাংলাদেশের বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে ওয়াশিংটনস্থ দূতাবাস আগে থেকে অবহিত না হওয়ার বিষয়টি বড় ব্যর্থতা। বৈঠকে মালয়েশিয়া ও লেবানন দূতাবাসের বিরুদ্ধে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন না করার অভিযোগ তোলেন তিনি। আমেরিকা, ইউরোপসহ সব মিশনগুলোকে আরও সক্রিয়ভাবে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান তিনি।
কমিটির সদস্য হাবিবে মিল্লাত বলেন, ‘বিরোধী দলগুলো বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার জন্য যেভাবে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার খরচ করেছে। মিশনগুলোর কর্মকর্তারা দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে অসহায় হয়ে পড়েছেন।
সদস্য নাহিম রাজ্জাক বলেন, ‘সরকারকে বিশ্ববাসীর কাছে বিতর্কিত করতে একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে বিপুল অর্থ ব্যয়ে বিভিন্ন দেশে লবিস্ট নিয়োগ করে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। এই অপপ্রচার মোকাবিলায় বিদেশে অবস্থিতি বিভিন্ন মিশন তথা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ব্যর্থ হচ্ছে।’
র্যাবের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়টি সময়সাপেক্ষ উল্লেখ করে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘যথা সময়ে তথ্যগুলো পেলে এবং সেগুলো সংশ্লিষ্ট দেশ, সংস্থাগুলোর কাছে উপস্থাপন করতে পারলে বাংলাদেশকে অপ্রীতিকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হতো না।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন বলেন, ‘আমেরিকা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বেশ কিছু উন্নয়ন সহযোগী দেশের আইনপ্রণেতারা বাংলাদেশের কাছে গুম, বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সাংবাদিকদের গ্রেপ্তার ইত্যাদি বিষয়ে তথ্য চেয়ে চিঠি দিয়েছেন। কিন্তু স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে তথ্য না পাওয়ায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে যথাসময়ে চিঠির জবাব দেয়া সম্ভব হয়নি।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ মিশনগুলোই লবিস্ট হিসেবে কাজ করে। কিন্তু দূতাবাসে কর্মরত কর্মকর্তাদের সঙ্গে সেই দেশের আইনপ্রণেতাদের সম্পর্কটা তেমন ঘনিষ্ঠ না হওয়ার কারণে অর্থের বিনিময়ে নিয়োজিত লবিস্ট ফার্মগুলো বেশি প্রভাব বিস্তার করে থাকে। পক্ষান্তরে সরকারি অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে জবাবদিহিতার প্রশ্ন রয়েছে বিধায় বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে বিদেশে লবিস্ট ফার্ম নিয়োগে সীমাবদ্ধতা রয়েছে।’
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘সরকারবিরোধী একটি চক্র বিপুল অর্থের বিনিময়ে লবিস্ট নিয়োগের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের ভুল ও অসত্য তথ্য দিয়ে দেশের স্বার্থ পরিপন্থী কার্যক্রমে লিপ্ত রয়েছে। এ ধরনের কর্মকাণ্ড প্রতিহত করার লক্ষ্যে দূতাবাসগুলো কাজ করে গেলেও সেভাবে সফলতা আসেনি।
বিএনএ/ এ আর
