24 C
আবহাওয়া
৫:৫২ পূর্বাহ্ণ - মার্চ ২৯, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের হালচাল: সংসদীয় আসন-১৪ (নীলফামারী-৩)

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের হালচাল: সংসদীয় আসন-১৪ (নীলফামারী-৩)


বিএনএ, ঢাকা: বিএনএ নিউজ টুয়েন্টি ফোর ডটকম দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ধারাবাহিক নির্বাচনী হালচাল  প্রকাশ করছে। আজ থাকছে নীলফামারী-৩ আসনের  হালচাল।

 আসন  নীলফামারী-৩

নীলফামারী-৩ সংসদীয় আসনটি জলঢাকা উপজেলা নিয়ে গঠিত। এটি জাতীয় সংসদের ১৪ নাম্বার আসন।

প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের আবুল হোসেন বিজয়ী হন

১৯৭৩ সালের ৭ মার্চ অনুষ্ঠিত দেশের প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনটি রংপুর-১৪ নামে পরিচিত ছিল।নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ১ লাখ ১০ হাজার ২ শত ১৪ জন। ভোট প্রদান করেন ৫৫ হাজার ৭ শত ২৭ জন। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের আবুল হোসেন বিজয়ী হন। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ৪৯ হাজার ৭ শত ১২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন ন্যাপ মোজাফফর এর বদরুজ্জামান মিয়া। তিনি পান ৪ হাজার  ৫৭ ভোট।

দ্বিতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হন মুসলিম লীগের আব্দুল কাদের  

১৯৭৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনটি পরিচিতি হয় রংপুর-৩ নামে। নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ১ লাখ ৩১  হাজার ৩শত ৫ জন। ভোট প্রদান করেন ৬৮ হাজার ৫ শত ৩৮ জন। মুসলিম লীগের আব্দুল কাদের  বিজয়ী হন। হারিকেন প্রতীকে তিনি পান ২৯ হাজার ৭ শত ৪৬ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন  বিএনপির মোশারফ হোসেন। ধানের শীষ প্রতীকে তিনি পান ২০ হাজার  ৮ শত ৮৫ ভোট।

তৃতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াত ইসলামীর মৌলানা জবান উদ্দিন বিজয়ী

১৯৮৬ সালের ৭মে অনুষ্ঠিত তৃতীয় সংসদ নির্বাচনে রংপুর-৩ আসনের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয়, নীলফামারী-৩। নির্বাচনে ভোট প্রদান করেন  ৭৪ হাজার ৫ শত ৮৯ জন। জামায়াত ইসলামীর মৌলানা জবান উদ্দিন বিজয়ী হন। দাড়িপাল্লা প্রতীকে তিনি পান  ২৫ হাজার ৮ শত ২৪ ভোট। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের আফসার উদ্দিন। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ১৬ হাজার ১ শত ৯০ ভোট। এই নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করেনি।

চতুর্থ সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হন জাতীয় পার্টির প্রার্থী এন. কে আলম চৌধুরী 

১৯৮৮ সালের ৩ মার্চ অনুষ্ঠিত চতুর্থ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ, বিএনপিসহ পরিচিত রাজনৈতিক দল গুলো অংশগ্রহণ করেনি। প্রতিদ্বন্দ্বীতা বিহীন এ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী এন. কে আলম চৌধুরী বিজয়ী হন।

পঞ্চম সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের আজহারুল ইসলাম নির্বাচিত

১৯৯১ সালের  ১ অক্টোবর অনুষ্ঠিত পঞ্চম সংসদ নির্বাচনে এই আসনে ভোটার ছিলেন ১ লাখ ৮৯ হাজার ৯ শত  ৮০ জন। ভোট প্রদান করেন ১লাখ ১১ হাজার ৪ শত ৬৪ জন। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের আজহারুল ইসলাম বিজয়ী হন। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ৩৭ হাজার ১ শত ৩১ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন জাতীয় পার্টির নুরুল হক। লাঙ্গল প্রতীকে তিনি পান ৩০ হাজার  ৬৪ ভোট।

সপ্তম সংসদ নির্বাচনে জামায়াত ইসলামীর মিজানুর রহমান চৌধুরী বিজয়ী হন

১৯৯৬ সালের ১২ জুন অনুষ্ঠিত সপ্তম সংসদ নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ২ লাখ ৬৩ হাজার ৯ শত ৫৪ জন। ভোট প্রদান করেন ১ লাখ ১৯ হাজার ৮ শত ৫৩ জন। নির্বাচনে জামায়াত ইসলামীর মিজানুর রহমান চৌধুরী বিজয়ী হন। দাঁড়িপাল্লা প্রতীকে তিনি পান ৩৭ হাজার ৫ শত ৪৬ ভোট। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন জাতীয় পার্টির রশীদুল আলম চৌধুরী। লাঙ্গল প্রতীকে তিনি পান ৩৫ হাজার  ৩০ ভোট।

অষ্টম সংসদ নির্বাচনে জামায়াত ইসলামীর মিজানুর রহমান পুননির্বাচিত

২০০১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত অষ্টম সংসদ নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ২ লাখ ৫ হাজার ৭ শত ২৬ জন । ভোট প্রদান করেন  ১ লাখ ৬৮ হাজার ৭ শত ৫৪ জন। নির্বাচনে জামায়াত ইসলামীর মিজানুর রহমান বিজয়ী হন। দাড়িপালা  প্রতীকে তিনি পান ৬৪ হাজার ১ শত ৮০ ভোট। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন  আওয়ামী লীগের  দীপেন নাথ সরকার। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ৫৫ হাজার ৪৩ ভোট।

নবম সংসদ  নির্বাচনে জাতীয় পার্টির কাজী ফারুক কাদের বিজয়ী 

২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নবম সংসদ  নির্বাচনে ভোটার ছিলেন  ২ লাখ ৩৪ হাজার ৭ শত ৫২ জন । ভোট প্রদান করেন  ২ লাখ ১৪ হাজার ৪ শত ৯৫ জন। নির্বাচনে জাতীয় পার্টির কাজী ফারুক কাদের বিজয়ী হন। লাঙ্গল প্রতীকে তিনি পান ১ লাখ ৪৬ হাজার ৯ শত ৪৭  ভোট। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন   জামায়াত ইসলামীর আজিজুল ইসলাম।  দাড়িপাল্লা প্রতীকে তিনি পান  ৬৪ হাজার ৩ শত ৬৫ ভোট।

দশম  জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হন আওয়ামী লীগের গোলাম মোস্তফা 

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দশম  জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটার ছিলেন  ২ লাখ ৪৬ হাজার ৯০ জন। ভোট প্রদান করেন ১ লাখ ১৪হাজার ১৪ জন। আওয়ামী লীগের গোলাম মোস্তফা বিজয়ী হন। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ৭৮ হাজার ৯ শত ১৯ ভোট। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন জাতীয় পার্টির কাজী ফারুক কাদের। লাঙ্গল প্রতীকে তিনি পান ২০ হাজার ৩ শত ৪৫ ভোট।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট এই নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেনি।

একাদশ সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির রানা মোহাম্মদ সোহেল বিজয়ী হন

২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ সংসদ নির্বাচনে নীলফামারী-৩ আসনে ভোটার ছিলেন ৩  লাখ ৩৬ হাজার ৭ শত ৭১ জন । ভোট প্রদান করেন ১ লাখ  ৮৪ হাজার ৮ শত ২৬ জন। নির্বাচনে প্রার্থী ছিলেন ৩ জন।

লাঙ্গল প্রতীকে রানা মোহাম্মদ সোহেল, ধানের শীষ প্রতীকে আজিজুল ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর আমজাদ হোসেন সরকার, হাতপাখা প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন।

জাতীয় পার্টির রানা মোহাম্মদ সোহেল বিজয়ী হন। লাঙ্গল প্রতীকে তিনি পান ১ লাখ ৩৭ হাজার ২শত ২৪ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিএনপির আজিজুল ইসলাম। ধানের শীষ প্রতীকে তিনি পান  ৪৪ হাজার ৯৩ ভোট।

কারচুপির অভিযোগে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্য ফ্রন্ট নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে।

পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, নীলফামারী-৩ আসনে প্রথম, পঞ্চম, ও দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিজয়ী হন। দ্বিতীয় সংসদে মুসলিম লীগ,  তৃতীয়, সপ্তম, অষ্টম সংসদে জামায়াত ইসলামী, নবম ও একাদশ সংসদে জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা বিজয়ী হন। বিএনপি শুধু ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ১১ দিন মেয়াদী সংসদে বিজয়ী হন।

এই আসনে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও জামায়াত ইসলামীর সাংগঠনিক অবস্থা সমানে সমান। জামায়াত ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল হওয়ার প্রেক্ষাপটে  দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে জামায়াত ইসলামী বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নেয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন এবং নীরবে নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রচারাভিযান চালাচ্ছেন।

একাদশ জাতীয় সংসদে নির্বাচনে নীলফামারী-৩ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী দেয়নি! জাতীয় পার্টিকে ওয়াকওভার দেয়। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টি এবং বিএনপি, জামায়াত ইসলামীর রাজনৈতিক সমীকরণের ওপর নির্ভর করছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদে জলঢাকা উপজেলার এই সংসদীয় আসনের ভোটের লড়াই।

বিএনএ/ শিরীন সুলতানা , রেহেনা ইয়াসমিন , ওয়াইএইচ

Loading


শিরোনাম বিএনএ