29 C
আবহাওয়া
৬:৪৬ পূর্বাহ্ণ - মে ২৮, ২০২৫
Bnanews24.com
Home » অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময় আর বাড়বে না: প্রধান উপদেষ্টা

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময় আর বাড়বে না: প্রধান উপদেষ্টা

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময় আর বাড়বে না: প্রধান উপদেষ্টা

বিএনএ, ঢাকা: রাজনৈতিক দলের নেতাদের আশ্বস্ত করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময় আর বাড়বে না এবং নিজের ক্ষমতাও দীর্ঘায়িত করতে চান না—। এপ্রিলের পর কোনোভাবেই আর সময় গড়াবে না।

রোববার(২৫ মে) উপদেষ্টার সরকারি নিবাস যমুনায় দুই পর্বে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় এ কথা বলেন মুহাম্মদ ইউনূস।

প্রথম পর্বে বিকেল ৫টার দিকে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদ, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সেক্রেটারি সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম, এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) খালেকুজ্জামান ভূঁইয়া, জাতীয় গণফ্রন্টের সমন্বয়কারী টিপু বিশ্বাস, ভাসানী জনশক্তি পার্টির চেয়ারম্যান শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন।

এরপর দ্বিতীয় দফায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিভিন্ন দল ও সংগঠনের একটি প্রতিনিধিদলের বৈঠক হয়। বৈঠকে ছিলেন হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব মাওলানা সাজিদুর রহমান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের, হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির জাতীয় নির্বাহী পরিষদের মহাসচিব মাওলানা মুসা বিন ইজহার এবং ইসলামী ঐক্য জোটের মহাসচিব মুফতি সাখাওয়াত হোসাইন রাজি।

বৈঠক শেষে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আমরা প্রধান উপদেষ্টাকে বুঝিয়েছি—আপনার বেশি করে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ করতে হবে, কথা বলতে হবে, মতবিনিময় করতে হবে। আপনি কেমন করে নির্বাচন করতে চান, তা সবার সঙ্গে শেয়ার করবেন। আপনার সে ক্ষেত্রে দেখতে হবে কোনটা সংস্কার না করলেই নয়। সংস্কারের ক্ষেত্রে সময়ক্ষেপণ হলে নির্বাচন বিলম্ব হবে।

প্রধান উপদেষ্টা আমাদের আশ্বস্ত করে বলেছেন, “এপ্রিলের পর কোনোভাবেই আর সময় গড়াবে না। আমি কোনোভাবেই চাই না আমার ক্ষমতা আরও দীর্ঘায়িত করতে”। উনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময় আর বাড়াতে চান না।

সিপিবির সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, আমরা প্রধান উপদেষ্টাকে বলেছি, জুলাই আন্দোলনের স্পিরিট নস্যাৎ করার প্রক্রিয়া চলছে। আমরা বলেছি, জনগণের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে যদি আমরা সংস্কার কাজ এগিয়ে নিয়ে যাই, তাহলে সেটাই হবে আসল সংস্কার।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম (চরমোনাই পীর) বলেন, প্রধান উপদেষ্টাকে সহজভাবে কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না, এটা আমাদের কাছে স্পষ্ট। আমরা প্রধান উপদেষ্টাকে বলেছি, দেশ ও জনগণের প্রয়োজনে আপনাকে নিয়ে এসেছিলাম একটি সুন্দর ও ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র গড়ার জন্য। আপনার ওপর যে মানসিক নির্যাতন চলছে তা আমরা অনুভব করছি। আমরা উনাকে স্পষ্টভাবে জানিয়েছি—আপনি যদি পরাজিত হন, তাহলে আমরাও পরাজিত হবো। কিন্তু মাঝপথে আপনি আমাদের ছেড়ে চলে যাবেন, এটা কোনোভাবেই হতে পারে না।

নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় নিয়ে রেজাউল করীম বলেন, কারও মতে ডিসেম্বর, আবার কেউ বলছেন মার্চ। তবে প্রধান উপদেষ্টা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন ২০২৬ সালের জুনের ৩১ তারিখের পরে তারা আর থাকবেন না। এতে আমাদের ভেতরে থাকা কিছু ভয় কেটে গেছে।

এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, বিএনপিসহ রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সরকারের ব্যাপক সন্দেহ, সংশয়, দূরত্ব (গ্যাপ) ও ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হয়েছে। নবগঠিত দল এনসিপির সঙ্গে কোনো কোনো ক্ষেত্রে সরকারের সমন্বয়হীনতা লক্ষ্য করা গেছে। এমনকি গণঅভ্যুত্থানের কিং মেকার ছাত্রসমাজের মধ্যে যে বিভাজন রেখা পরিলক্ষিত হয়েছে, সে ব্যাপারে সরকার নির্বিকার থেকেছে। এটা ক্রমেই সরকারের সমর্থনের ভিত্তিকে দুর্বল করে তুলেছে। মূলত, নির্বাচন ডিসেম্বরে করতে কী সমস্যা। অনিবার্য কারণে জুন পর্যন্ত সময় লাগলেই বা অসুবিধা কী। অন্তর্বর্তী সরকার ও বিএনপির কাছে জনগণ এর ব্যাখ্যা জানতে চায়। আশা করি, উভয় পক্ষ এ ব্যাপারে সুস্পষ্ট বক্তব্য তুলে ধরবেন।

দেশের চলমান পরিস্থিতিতে প্রধান উপদেষ্টার কাছে খেলাফত মজলিস আট দফা প্রস্তাবনা দিয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে অবিলম্বে সর্বদলীয় জাতীয় কনভেনশন আহ্বান করা; সংস্কারের সুস্পষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা করা; জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করা; পতিত ফ্যাসিবাদীদের বিচার দ্রুত সম্পন্নের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগকে গতিশীল করা; অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ন হয়—এমন পদক্ষেপের বিষয়ে সতর্ক থাকা এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে নিয়মিত আলোচনা অব্যাহত রাখা।

বিএনএনিউজ/ আরএস/শাম্মী

Loading


শিরোনাম বিএনএ