37 C
আবহাওয়া
১০:০৫ অপরাহ্ণ - এপ্রিল ১৯, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » রোহিঙ্গা আসার ৫ বছরেও শুরু হয়নি প্রত্যাবাসন

রোহিঙ্গা আসার ৫ বছরেও শুরু হয়নি প্রত্যাবাসন

রোহিঙ্গা

বিএনএ ডেস্ক: আজ ২৫ আগস্ট, বাংলাদেশে রোহিঙ্গা আগমনের ৫ বছর পূর্ণ হল। মিয়ানমারের রাখাইন থেকে সে দেশের সেনাবাহিনীর গণহত্যা নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আসার ৫ বছরেও শুরু হয়নি প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া। কুটনৈতিক জটিলতায় আটকে আছে রোহিঙ্গাদের স্বদেশে প্রত্যাবাসন। ফলে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে বাড়ছে নানা অপরাধ। অবশ্য বরাবরের মত রোহিঙ্গারা বলছেন, নিরাপদ পরিবেশ ও নাগরিকত্ব পেলে মিয়ানমারে ফিরতে আগ্রহী তারা।

মিয়ানমারের কথা দিয়ে না রাখার নীতির কারণেই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় জটিলতা এবং দীর্ঘসূত্রতার সৃষ্টি হচ্ছে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানায়। প্রকৃতপক্ষে মিয়ানমার কী চাচ্ছে সেটাই বাংলাদেশ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছেও পরিষ্কার নয়। শুরুর দিকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে কিছুটা আলাপ-আলোচনা হলেও বর্তমানে অনেকটা থমকে আছে সব ধরনের আলোচনা।

মাঝখানে দুবার সরকারিভাবে প্রত্যাবাসনের সব আয়োজন হলেও কোনো রোহিঙ্গা ফিরে যায়নি নিজ দেশে। মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক পরিস্থিতির টালমাটাল অবস্থা এবং করোনাভাইরাস মহামারির কারণে সেই আলোচনা সামনে না এগোয় অন্ধকারে চলে গেছে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া।

বিশ্লেষকরা বলছেন, সহসা শুরু হচ্ছে না রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন। আর প্রত্যাবাসন প্রশ্নে তড়িঘড়িতেও তাদের আপত্তি আছে। তারা বলছেন, তড়িঘড়ি করতে গিয়ে মিয়ানমারের ফাঁদে পা দেওয়া যাবে না। সতর্কতার সঙ্গে সবকিছু জেনে-বুঝে, অন্য কয়েকটি দেশকে অংশীজন হিসেবে সঙ্গে রেখে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে যেতে হবে।

সরেজমিনে গিয়ে কয়েকজন রোহিঙ্গার সাথে কথা বলে জানা যায়, আয় রোজগার না করে খাবার পেলেও তারা শান্তিতে নেই রোহিঙ্গা ক্যাম্পে। তাদের সবসময় নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার চিন্তা। কখন শান্তিতে নিজ দেশে ফিরে আবারো শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করা যায় সেই চিন্তায় তাদের সময় কাটে।রোহিঙ্গাকুতুপালং ক্যাম্প-১, ব্লক এফ/৬ এর বাসিন্দা এনায়েত উল্লাহ বলেন, ‘এ দেশ আমাদের না, আমরা এখানে পাখির মতো পরাধীনভাবে বেঁচে থাকতে চাই না। যত দ্রুত সম্ভব নিজ দেশে ফিরে আবারো স্বাধীনভাবে ঘুরে ফিরে জীবন অতিবাহিত করতে চাই’।

রোহিঙ্গা নেতা নুরুল আলম বলেন, ‘ক্যাম্পে থাকার মন নেই আমাদের। যত তাড়াতাড়ি নিজ দেশ মিয়ানমারে চলে যেতে পারি তত ভালো। বাংলাদেশ সরকার আমাদের সাহায্য করেছে সেজন্য ধন্যবাদ। তবুও এই ত্রিপলের বাসায় মোটেও থাকতে রাজি না আমরা। আমাদের একটাই দাবি শান্তিপূর্ণভাবে ফিরতে চাই নিজের মাতৃভূমি মিয়ানমারে।’

কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের অপরাধ চিত্র থেকে জানা গেছে, গত ৫ বছরে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অপরাধ মাত্রারিক্ত হারে বেড়েছে। ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে ২০২২ সালের ২০ আগস্ট পর্যন্ত মামলা হয়েছে ২ হাজার ৪৩৮টি। উক্ত মামলায় আসামির সংখ্যা ৫ হাজার ২২৬ জন। মামলাগুলোর মধ্যে অস্ত্র মামলা ১৮৫টি, মাদক মামলা ১ হাজার ৬৩৬টি, ধর্ষণ ৮৮টি, হত্যা ১১৫টি, অপহরণ ও মুক্তিপণ সংক্রান্ত মামলা হয়েছে ৩৯টি। তবে অন্যান্য সময়ের তুলনায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পসমূহে আইনশৃংখলা পরিস্থিতির উন্নতির পাশাপাশি বাড়ানো হয়েছে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম বলেন, রোহিঙ্গাদের কারণে অপরাধের মাত্রা সহনীয় পর্যায় অতিক্রম করছে এতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু রোহিঙ্গাদের অপরাধ দমনে পুলিশের পাশাপাশি র‍্যাব, বিজিবি ও কাজ করছে।

কক্সবাজার সিভিল সোসাইটির সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী জানান, রোহিঙ্গারা পর্যটন শিল্পের ওপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। দেহব্যবসা থেকে শুরু করে এমন কোনো অপকর্ম নেই যা তারা করছে না।

কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা মো. সরওয়ার আলম বলেন, রোহিঙ্গারা কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের ১২ হাজার একর বনভূমি ধ্বংস করেছে গেল পাঁচ বছরে। যা অর্থ দিয়ে পূরণ করা সম্ভব নয়।

বিএনএনিউজ২৪/ এমএইচ

Loading


শিরোনাম বিএনএ