36 C
আবহাওয়া
২:০২ অপরাহ্ণ - এপ্রিল ২৫, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » চট্টগ্রামে ভারত ফেরত রোগীর নমুনায় আফ্রিকান ধরন

চট্টগ্রামে ভারত ফেরত রোগীর নমুনায় আফ্রিকান ধরন

চট্টগ্রামে ভারত ফেরত রোগীর নমুনায় আফ্রিকান ধরন

বিএনএ,চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামে ভারত ফেরত করোনা আক্রান্ত রোগী চারজনের নমুনা পরীক্ষায় কারো শরীরেই ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট (ধরন) পাওয়া যায়নি। তবে আফ্রিকান ভ্যারিয়েন্ট (ধরন) শনাক্ত হয়েছে। বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের (বিসিএসআইআর) সহযোগিতায় চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিভাসু) কোভিড-১৯ শনাক্তকরণ ল্যাবে এটি ধরা পড়ে।

সম্প্রতি ওই আক্রান্ত ব্যক্তির নমুনা থেকে SARS-CoV-2 বা নভেল করোনাভাইরাসের পূর্ণাঙ্গ জীবন রহস্য (Whole Genome Sequence) উন্মোচন করা হয়। এতে আফ্রিকান ধরনের উপস্থিতি দেখা গেছে।

মঙ্গলবার (২৫ মে) সিভাসুর উপ-পরিচালক (জনসংযোগ ও প্রটোকল) খলিলুর রহমানের পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, গত ১৫ মে চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে ভারতফেরত ৬ জন বাংলাদেশি নাগরিকের করোনাভাইরাস টেস্টের নমুনা সিভাসুর কোভিড-১৯ শনাক্তকরণ ল্যাবে পাঠানো হয়। এর মধ্যে ৫ জনের কোভিড নেগেটিভ এবং একজনের পজিটিভ রিপোর্ট পাওয়া যায়।

সিভাসুর উপাচার্য প্রফেসর ড. গৌতম বুদ্ধ দাশের সার্বিক নির্দেশনায় এবং পোল্ট্রি রিসার্চ এবং ট্রেনিং সেন্টার (পিআরটিসি), সিভাসুর আর্থিক সহায়তায় কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীর স্বাস্থ্যঝুঁকি মূল্যায়ন বিষয়ে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করেন সিভাসুর প্রফেসর ড. পরিতোষ কুমার বিশ্বাস, প্রফেসর ড. শারমীন চৌধুরী, ডা. ইফতেখার আহমেদ রানা, ডা. ত্রিদীপ দাশ, ডা. প্রনেশ দত্ত, ডা. মো. সিরাজুল ইসলাম ও ডা. তানভীর আহমদ নিজামী।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, ভারত থেকে গত ১৫ মে পর্যন্ত চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে আসেন ৪২ জন। এর মধ্যে ১৭ জন রোগী ও বাকিরা রোগীর স্বজন। তাদের মধ্যে চারজনের করোনা পজিটিভ আসে গত ১৩ মে। তখন নেগেটিভ আসা বাকি ৩৮ জনকে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের মাধ্যমে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়।

ভারত ফেরত চার করোনা রোগী হলেন: খুলশী থানার রেলওয়ে কলোনির ৫০ বছর বয়সী জাহেদা বেগম। সাতকানিয়ার পুরানগড়ের ৩০ বছর বয়সী মিজানুর রহমান। পটিয়ার মালিয়ারারের ২৪ বছর বয়সী সুলতান আহমেদ। হালিশহর বসুন্ধরা আবাসিকের ৩২ বছর বয়সী সাজেদা আক্তার।

চট্টগ্রামে সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বী বলেন, গত ১৫ মে ভারত ফেরত চার করোনা পজিটিভ রোগীর নমুনা সিভাসুর ল্যাবে পাঠিয়েছিলাম। এখনও অফিসিয়াল চিঠি পাইনি। তবে শুনেছি চারজনের মধ্যে তিনজনের রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছিল আর একজনের পজিটিভ ছিল। যার পজিটিভ তার শরীরে ভারতীয় নয়, আফ্রিকান ভ্যারিয়েন্টের (বি.১.৩৫১) অস্তিত্ব মিলেছে।

তিনি বলেন, এরআগেও চট্টগ্রামে আফ্রিকান ভ্যারিয়েন্টের অস্তিত্ব মিলেছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে ভয়ঙ্কর ভারতীয় ভেরিয়েন্টের অস্তিত্ব না মেলায় তা স্বস্তিদায়ক।

এর আগে গত ২ মে চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ইউনিভার্সিটি (সিভাসু) উপাচার্যের নেতৃত্বে একদল শিক্ষক চট্টগ্রামের করোনার ধরন নিয়ে পরীক্ষা করেন। এসব পরীক্ষায় যুক্তরাজ্য, দক্ষিণ আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ভারতের করোনার ধরন মিলছে। কিন্তু ভারতীয় কোনো ধরন নমুনা পরীক্ষায় পাওয়া যায় নি।

চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ইউনিভার্সিটির (সিভাসু) গবেষকরা জানিয়েছেন, যুক্তরাজ্য ও আফ্রিকান ভ্যারিয়েন্ট বা বৈশিষ্ট্যের করোনাভাইরাস এখন চট্টগ্রামে ঘুরছে। সীমিত আকারে মিলেছে অস্ট্রেলিয়া-আইসল্যান্ড-সুইজারল্যান্ড অঞ্চলভিত্তিক করোনার ধরনও।

নতুন বৈশিষ্ট্যের করোনার উপস্থিতি পাওয়া গেছে যাদের শরীরে, তারা চট্টগ্রামের মেহেদিবাগ, জামালখান, রহমতগঞ্জ, শুলকবহর, মুরাদপুর, কাজির দেউড়ি, বন্দর, কুঞ্জছায়া আবাসিক এলাকা এবং চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ছাত্রী হোস্টেলের বাসিন্দা।

গবেষণায় করোনাভাইরাসের যুক্তরাজ্য ভ্যারিয়েন্টের (B.1.1.7) উপস্থিতি পাওয়া গেছে চট্টগ্রামের মেহেদিবাগের ৩২ বছর বয়সী এক পুরুষ, জামালখান এলাকার ৬৪ বছর বয়সী এক পুরুষ, রহমতগঞ্জ এলাকার ৬৩ বছর বয়সী এক পুরুষ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ছাত্রী হোস্টেলের ২৪ বছর বয়সী এক তরুণী, শুলকবহর এলাকার ৩২ বছর বয়সী এক পুরুষ এবং মুরাদপুরের ৬০ বছর বয়সী এক পুরুষের শরীরে।

অন্যদিকে আফ্রিকান ভ্যারিয়েন্টের (B.1.351) উপস্থিতি মিলেছে জামালখান এলাকার ২২ বছর বয়সী এক তরুণ, বন্দর এলাকার ৬৫ বছর বয়সী এক পুরুষ এবং কাজির দেউড়ি এলাকার ৩২ বছর বয়সী এক পুরুষের মধ্যে। এছাড়া অস্ট্রেলিয়া-আইসল্যান্ড-সুইজারল্যান্ড অঞ্চলভিত্তিক করোনার ধরনে মিল পাওয়া গেছে চট্টগ্রামের কুঞ্জছায়া আবাসিক এলাকার ৩১ বছর বয়সী এক পুরুষের শরীরে।

২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে করোনা ভাইরাসের প্রথম রোগী শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যু হয়। এরপর ৩ এপ্রিল চট্টগ্রামে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় এবং ১১ এপ্রিল প্রথম করোনা রোগীর মৃত্যু হয়। এরপর ধীরে ধীরে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে থাকে। এখন পর্যন্ত চট্টগ্রামে করোনাভাইরাসে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৫২ হাজার ৭৩৬ জন। এরমধ্যে ৪২ হাজার ১১৬ শহরের ও ১০ হাজার ৬২০ জন গ্রামের। এছাড়া এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে এখন ৬০২ জন হয়েছে। এতে শহরের বাসিন্দা ৪৩৪ জন ও গ্রামের ১৬৮ জন।

বিএনএনিউজ/মনির

Loading


শিরোনাম বিএনএ