বিএনএ,চট্টগ্রাম: দেশের স্বনামধন্য শিল্প প্রতিষ্ঠান এস আলম গ্রুপে চেয়ারম্যান-পরিচালক পরিচয়ে চাকরি দেয়ার নামে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৫ মার্চ) ভোররাতে খাগড়াছড়ির দিঘীনালা এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। বিষয়টি জানিয়েছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কাউন্টার টেরোরিজম বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার আসিফ মহিউদ্দীন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মো. হানিফ ওরফে ডিপজল (৫০) এবং তার সহযোগী মো. শামসুল আলম (৪২)। এর আগে বেঙ্গল গ্রুপের পরিচালক পরিচয়ে প্রতারণার অভিযোগে হানিফের বিরুদ্ধে ঢাকার গুলশান থানায় মামলা হয়, ওই মামলায় তিনি গ্রেপ্তারও হন।
পুলিশ জানায়, একটি স্বনামধন্য সিমেন্ট কোম্পানীতে কর্মরত ডিজিএম পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তাকে ফোন করে নিজেকে অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এবং এস আলম গ্রুপের পরিচালক বলে পরিচয় প্রদান করেন হানিফ। পরবর্তীতে উক্ত ব্যক্তি ভিকটিমকে এস আলম গ্রুপের জেনারেল ম্যানেজার পদে চাকরি দেওয়ার প্রস্তাব করেন।
ভিকটিম উল্লেখিত পদে চাকরি করবে বললে প্রতারক হানিফ তাকে ঢাকায় ইন্টারভিউ দিতে হবে বলে জানায়। পরবর্তীতে হানিফ কৌশলে কণ্ঠস্বর পরিবর্তন করে নিজেই এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান পরিচয়ে ভিকটিমের সাথে কথা বলেন।
কয়েকদিন পর উক্ত প্রতারক ভিকটিমের মোবাইলে কল করে এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যানের মেয়ে ও মেয়ের জামাই এবং দুইজন ইঞ্জিনিয়ারের সাথে বিমানযোগে ঢাকায় যাওয়ার জন্য বলে। প্রতারক ঢাকায় যাওয়ার জন্য বিমান ভাড়া বাবদ বিমান বাহিনীর একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার মোবাইল নাম্বার প্রদান করে টাকা বিকাশ করতে বললে তিনি তা করেন।
এর কিছুক্ষণ পর এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মাসুদ পরিচয়দানকারী প্রতারক ব্যক্তি ভিকটিমকে কোম্পানীর জিএম পদের জন্য নির্ধারিত গাড়ি বন্দরে আছে উল্লেখ করে তা ছাড়াতে বিকাশে টাকা প্রদান করতে বললে তিনি বিকাশে টাকা প্রদান করেন। ভিকটিম বিমান ভাড়া এবং গাড়ি ছাড়ানো বাবদ মোট ৮০ হাজার ৭০০ টাকা বিকাশে প্রদান করেন। পরে প্রতারণার শিকার হওয়ার বিষয়টি বুঝতে পেরে ভিকটিম গত ২৩ মার্চ চট্টগ্রামের কোতোয়ালী থানায় একটি মামলা করলে সিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম বিভাগ তদন্তে নামে।
কাউন্টার টেরোরিজমের এডিসি আসিফ মহিউদ্দীন বলেন, প্রতারক ডিপজলকে গত বছর গ্রেপ্তার হয়েছিল ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের হাতে। ওই সময়ে বেঙ্গল গ্রুপের চেয়্যারম্যানের কণ্ঠ নকল করেছিলেন তিনি। পরে জামিনে বের হয়ে একই কাজে নেমে পড়ে ডিপজল।
এ প্রতারক চক্রটির একটি সক্রিয় চক্রকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যহত রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, মানুষকে বড় চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা হাতিয়ে নিত চক্রটি। আমরা দুজনকে গ্রেপ্তারের পর বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছি। তাদের ধরতে অভিযান অব্যহত আছে।
উপ-কমিশনার হাসান মো. শওকত আলী আরও বলেন, কোতোয়ালী থানায় অভিযোগ আসার পর আমরা পর্যবেক্ষণ করে জানতে পেরেছি অভিযুক্তের অবস্থান খাগড়াছড়ির দিঘীনালায়। পরে সেখানে অভিযান চালায় কাউন্টার টেরোরিজমের একটি চৌকস টিম।
বিএনএনিউজ/মনির