32 C
আবহাওয়া
৩:০৫ অপরাহ্ণ - সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২৩
Bnanews24.com
Home » জলাবদ্ধতার দায় সিডিএকে নিতে হবে : চসিক মেয়র

জলাবদ্ধতার দায় সিডিএকে নিতে হবে : চসিক মেয়র

নিজস্ব আয়বর্ধক প্রকল্প গ্রহণ সময়ের দাবি : চসিক মেয়র

বিএনএ,চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, চলমান জলাবদ্ধতা প্রকল্প বাস্তবায়নকালে নগরীতে সৃষ্ট জলজটে নগরবাসীর দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এটি দুখের। এর দায় সিডিএকে নিতে হবে। কারণ পুরো প্রকল্পটি তাদের হাতে। বাস্তবায়ন করছে সেনা বাহিনীর তত্ত্বাবধানে। আমরা সিডিএকে অনুরোধ করেছিলাম, বর্ষার আগেই খালগুলোর যে অংশে বাঁধ দিয়ে পানি প্রবাহ পথ আটকানো হয়েছে তা অপসারণ করতে। কিন্তু কথা দিয়েও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) কথা রাখেনি।

বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ষষ্ঠ পরিষদের পঞ্চম সাধারণ সভায় মেয়র ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ কালে এসব কথা বলেন। মেয়র রেজাউল করিম বলেন, সিডিএ খালের দু’পাশের যে অংশে রিটার্নিং ওয়াল তুলেছে সেখানে খালের মাঝেই মাটির স্তূপ করা হয়েছে এবং এই মাটি না সরিয়ে দিয়ে স্ক্যাভেটর দিয়ে সমান করায় খালের মধ্যে রাস্তা হয়ে গেছে। সিডিএ বলেছে তারা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। ব্যবস্থাপনা চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের। কিন্তু প্রকল্পই যখন বাস্তবায়ন হয়নি তখন ব্যবস্থাপনার কথা আসে কেন? সম্পূর্ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করে বুঝিয়ে না দেয়ার আগে ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব নিতে পারি না।

‘প্রকল্প বাস্তবায়নের মেয়াদ আরও তিন বছর বাড়ানো হলেও প্রকল্প চলাকালীন সময়ে নগরীকে জলাবদ্ধতামুক্ত রাখার কোনো পদক্ষেপ কি সিডিএ নিয়েছে?’— প্রশ্ন রাখেন মেয়র রেজাউল।

এর আগে গত ১৪ জুন চসিক-সিডিএসহ বিভিন্ন সেবা সংস্থার যৌথ বৈঠক হয়েছিল মেয়রের কার্যালয়ে। সেখানে যৌথ সিদ্ধান্ত হয়েছিল, চলমান জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের কাজের আওতায় চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন খালে দেওয়া অস্থায়ী বাঁধ ৩০ জুনের মধ্যে অপসারণ করা হবে।

সভায় মেয়র রেজাউল করিম চলমান প্রকল্পের কাজ শেষ হলে জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি মিলবে বলে আশা করেছিলেন। আর সিডিএ চেয়ারম্যান এম জহিরুল আলম দোভাষ ‘একে অন্যকে দোষারোপ’ বাদ দিয়ে সব সেবা সংস্থা মিলেমিশে কাজ করার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিলেন।

এদিকে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন কর বৃদ্ধি করেছে বলে গণমাধ্যমের আলোচনা-সমালোচনা প্রত্যাখ্যান করে মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, নতুন করের হার বৃদ্ধি হবে না। কর আদায়ের আওতা ও পরিধি বাড়ানো হবে। তবে কোন ভবন দুইতলা থাকা অবস্থায় যে কর দিত এখন যদি তিনতলা, চারতলা বা বহুতল হয়ে যায় তা হলে বর্ধিত অংশের জন্য কর ধার্য কোনভাবে অযৌক্তিক হয় না।

মেয়র বলেন, চসিককে নগরবাসীর কর দিয়ে চলতে হয় কিন্তু এই আয় দিয়ে সেবার পরিধি বাড়ানো কিছুতেই সম্ভব নয়। তাই নিজস্ব ভূ-সম্পত্তিতে আয়বর্ধক প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। কোন এলাকায় কি ধরনের আয়বর্ধক প্রকল্প করা যায় সেজন্য কাউন্সিলরদের মতামতকে প্রাধান্য দেয়া হবে।

চসিকের অব্যবহৃত ভূ-সম্পত্তিতে একাধিক বিনিয়োগ প্রস্তাবনা এসেছে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই প্রস্তাবনা যথাযথ কিনা তা বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে যাচাই-বাচাই করে সুনির্দিষ্ট নীতিমালার মাধ্যমে প্রকল্প বাস্তবায়নের অনুমতি দেয়া হবে। চট্টগ্রামে আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ও বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎসহ নিত্য ব্যবহার্য পণ্য রূপান্তরেও কয়েকটি প্রতিষ্ঠান আগ্রহ দেখিয়েছে, তাদের প্রস্তাব বিবেচনাধীন। চসিকের দু’টি টেন্সিং গ্রাউন্ড আছে। এগুলো এখন পাহাড়সমান স্তূপে পরিণত হয়েছে। ফলে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। এখানকার স্তুূপ অপসারণে উদ্যোগী একাধিক প্রতিষ্ঠান প্রস্তাব দিয়েছে। এগুলোও বিবেচনাধীন।

তিনি বলেন, পলিথিন সভ্যতার অভিশাপ, কর্ণফুলীতে পলিথিনের জমাট ও ভারী আবরণে ড্রেজিং করা যাচ্ছে না। শহরের নদী নালায় ও পলিথিনের স্তূপ পড়ে আছে। এই পলিথিন জলাবদ্ধতার বড় কারণ। পলিথিনমুক্ত নগর গড়তে আইন চাই। ফুটপাত দখলমুক্ত ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ চলমান থাকবে। নগরে যেখানে সেখানে আবর্জনা ফেলা অবৈধ স্থাপনা ও অসামাজিক কার্যকলাপ রোধে আইনি ক্ষমতাসম্পন্ন সিটি আদালত চাই। নালা-নর্দমা থেকে মাটি উত্তোলন ও তা সরিয়ে ফেলতে ৪১টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলরকে ৮ লাখ টাকা করে মোট ৩ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়।

চসিকের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খালেদ মাহমুদের পরিচালনায় বক্তব্য দেন প্যানেল মেয়র গিয়াস উদ্দিন, আফরোজা কালাম, ওয়ার্ড কাউন্সিলর ছালে আহম্মদ চৌধুরী, মো. সাহেদ ইকবাল বাবু, অধ্যাপক মোহাম্মদ ইসমাইল, মোহাম্মদ আবদুল মান্নান, নাজমুল হক ডিউক, ড. নিছার আহমদ মঞ্জু, মো. মোবরক আলী, আবদুল বারেক, হাসান মুরাদ বিপ্লব, আবদুস সালাম মাসুম, মো. শহিদুল আলম, মো. নুরুল আমিন, গাজী মো. সফিউল আজিম, শেখ মো. জাফরুল হায়দার চৌধুরী, মো. কাজী নুরুল আমিন, সংরক্ষিত কাউন্সিলর নিলু নাগ, আঞ্জুমান আরা, শাহিন আক্তার রোজী, রূমকি সেনগুপ্ত, প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক, অতিরিক্ত প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মোর্শেদুল আলম চৌধুরী।

বিএনএনিউজ/মনির

Total Viewed and Shared : 133 


শিরোনাম বিএনএ