37 C
আবহাওয়া
৮:৫৫ অপরাহ্ণ - এপ্রিল ১৯, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » চীনা ল্যাবের তিন গবেষকই কী প্রথম কোভিড-১৯ রোগী!

চীনা ল্যাবের তিন গবেষকই কী প্রথম কোভিড-১৯ রোগী!

লি মেং ইয়ান

বিএনএ, বিশ্ব ডেস্ক: চীনের উহান ইনস্টিটিউট অফ ভাইরোলজি (ডাব্লুআইভি) -এর তিন গবেষক ২০১৯সালের নভেম্বরে কোভিড -১৯ মহামারী ছড়িয়ে পড়ার কয়েক মাস আগে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছিলেন। রোববার (২৩ মে) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অপ্রকাশিত গোয়েন্দা প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে মার্কিন গণমাধ্যম ওয়ালস্ট্রিট জার্নাল জানিয়েছে।

ওয়াশিংটন থেকে রয়টার্স এই খবর জানায়। পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়,গোয়েন্দা প্রতিবেদনে ককতজন গবেষক কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন,কতদিন ধরে তারা কোন হাসাপাতালে চিকিৎসা নেন এবং কিভাবে গবেষণাগার থেকে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে ছিল তা উল্লেখ করা হয়।

এমন এক সময়ে মার্কিন গোয়েন্দা প্রতিবেদনটি প্রকাশ হয়েছে যে সময়, জাতিসংঘ এর সহযোগি সংগঠন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা(হু)প্রথম কিভাবে কোভিড-১৯ বিস্তার শুরু করে তা নিয়ে তদন্তদলের প্রতিতবেদন নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছে।

মার্কিন নিরাপত্তা কাউন্সিলের মুখপাত্র প্রতিবেদনটির ওপর কোন মন্তব্য না করে শুধু বলেছেন,বাইডেন প্রশাসন এর কাছে গুরুতর প্রশ্ন হল, প্রথম কিভাবে চীনের উহানে মহামারী করোনাভাইরাস ছড়িয়েছে?

মুথপাত্র বলেন, কোন রকম হস্তক্ষেপ বা রাজনীতিকরণ ছাড়াই বিষয়টি উদঘাটনে মার্কিন সরকার হু এবং তদন্তকারীদের সাথে কাজ করছে।

আমরা চাই করোনাভাইরাসের উৎপত্তির বিষয়টি আন্তর্জাতিক সঠিক ও অভিজ্ঞ তদন্তকারীদের মাধ্যমে বেরিয়ে আসুক।

অন্যদিকে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রাণালয়ের মুখপাত্র অবশ্য প্রকাশিত মার্কিন গোয়েন্দা প্রতিবেদনকে নাকচ করে দিয়ে বলেছে, গত ফ্রেবুয়ারিতে উহান ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজি পরিদর্শন করে হু তদন্ত শেষ করেছে।পরিদর্শন শেষে তদন্ত দল এ মর্মে সিদ্ধান্তে পৌঁছে যে, ল্যাব থেকে করোনা ছড়ানোর সম্ভাবনা মোটেই নেই।

সাবেক ট্রাম্প প্রশাসন বার বার বলেছে, উহানের ল্যাবি থেকে করোনাভাইরাস ছড়িয়েছে।যা চীন বরাবরই অস্বীকার করেছে।

ট্রাম্প প্রশাসনের শেষ দিকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রাণালয় জানিয়েছিল, তাদের সরকারের এই বিশ্বাস জম্মেছে যে,চীনের উহান ইনস্টিটিউট অফ ভাইরোলজি (ডাব্লুআইভি)থেকেই করোনা মহামারী ছড়ায়।সেখানকার গবেষকরাও আক্রান্ত ছিলেন।তাদের সাধারণ সিজনাল ইলনেস হিসেবে চিকিৎসা দেয়া হয় যদিও তারা সকলে কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত ছিলেন।

ওয়ালস্ট্রিটের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ফেব্রুয়ারিতে হু’র নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটিকে চীনা কর্তৃপক্ষ এর আগে করোনার প্রাথমিক তথ্যসমূহ দিতে অপারগতা জানায়, যার ফলে হু’র কমিটি কিভাবে মহামারী করোনাভাইরাস প্রথম ছড়িয়েছে সে সম্পর্কে সঠিক কোন সিদ্ধান্তে পৌঁছোতে পারে নি।

২০২০ সালের ৩১শে ডিসেম্বর চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহান শহরে নিউমোনিয়ার মতো একটি রোগ ছড়াতে দেখে প্রথম চীন কর্তৃপক্ষ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা(হু) কে সতর্ক করে। এর পর ১১ই জানুয়ারি সে দেশে প্রথম একজনের মৃত্যু হয়। প্রথমে আক্রান্ত ভাইরাসের নাম দেয়া হয় করোনাভাইরাস এবং এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ হলে বলা হয়, কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত।

করোনায় সোমবার ২৪মে পর্যন্ত বিশ্বের ১৬ কোটি ৭৫ লাখের বেশি মানুষ সংক্রমিত হয়েছে।মৃতের সংখ্যা প্রায় ৩৪ লাখ ৭৮ হাজার মানুষ। করোনাভাইরাসের উৎপত্তির পর প্রায় দেড় বছর পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত এর উৎস সম্পর্কে স্পষ্ট কোনো তথ্য দেয় নি চীন।

এর আগের খবর : 

করোনাভাইরাস যখন উহানে ছড়িয়ে পড়ে, তখন সেটিকে ‘নতুন নিউমোনিয়া’ হিসেবে মনে করা হচ্ছিল। সেটা তদন্তের দায়িত্বে ছিলেন ভাইরাস বিশেষজ্ঞ  লি মেং ইয়ান।

 লি মেং ইয়ান বলেন, করোনাভাইরাসের বিষয়ে তদন্তের সময় এই গুপ্ত কার্যক্রমের বিষয়টি তিনি খুঁজে পান। চিকিৎসক লি মেং ইয়ান হংকং স্কুল অব পাবলিক হেলথের ভাইরোলজি ও ইমিনোলজি বিশেষজ্ঞ ছিলেন। তিনি বলেন, চীনে ‘নতুন নিউমোনিয়ার’ ওপর দুটি গবেষণা করেন তিনি। প্রথমটি হয় গত ডিসেম্বরে আর দ্বিতীয়টি জানুয়ারির শুরুর দিকে। এরপর তিনি পালিয়ে হংকং থেকে যুক্তরাষ্ট্রে এসে আশ্রয় নেন।

 লি মেং ইয়ান জানান, ‘আমি আমার গবেষণায় পাওয়া তথ্য আমার তত্ত্বাবধানকারী কর্মকর্তার কাছে জমা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। তিনি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) একজন পরামর্শক ছিলেন। এ বিষয়ে ডব্লিউএইচও ও আমার তত্ত্বাবধানকারী কর্মকর্তার কাছ থেকে কোনো সাড়া পাইনি। প্রত্যেকে আমাকে সতর্ক করেছিলেন, সীমা অতিক্রম করবেন না, চুপ থাকুন।’

চীনা গবেষক ইয়ান জানান, গবেষণার জন্য তিনি যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত চীনের এক বিখ্যাত ইউটিউবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তখন তিনি জানান, প্রথম দিকে চীনের কমিউনিস্ট পার্টি কোভিড-১৯ সংকট লুকাচ্ছিল। কিন্তু ভাইরাসটি মানুষ থেকে মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। ওই সময় চিকিৎসক ইয়ান আরও বিস্ময়কর তথ্য প্রকাশ করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ভাইরাসটি অনেক বেশি সংক্রামক। শিগগিরই এটি সারা দেশে ছড়িয়ে পড়তে পারে। তিনি আরও বলেন, ‘ভাইরাসটি আদতে প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্টি হয়নি। এটা উহানে চীনের সরকারনিয়ন্ত্রিত একটি গবেষণাগার থেকে এটি সৃষ্টি, যেটি সেনাবাহিনী পরিচালনা করে।’

বিএনএনিউজ২৪/এসজিএন

Loading


শিরোনাম বিএনএ