34 C
আবহাওয়া
১১:০৫ পূর্বাহ্ণ - মে ২, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » ‘সাংবাদিকদের জানালে তোর অবস্থাও আবরারের মতোই হবে’

‘সাংবাদিকদের জানালে তোর অবস্থাও আবরারের মতোই হবে’


বিএনএ, রাবি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মতিহার হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ভাস্কর সাহার বিরুদ্ধে একই হলের আবাসিক শিক্ষার্থী— সামছুল ইসলামকে নিজ কক্ষে ডেকে নিয়ে শারীরিক নির্যাতন ও ২০ হাজার টাকা চাঁদা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। নির্যাতনের ঘটনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও সাংবাদিকদের জানালে বুয়েট শিক্ষার্থী আবরারের মতো পরিণতি হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়েছে এই শিক্ষার্থীকে। সামছুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের চতুর্থ বর্ষে অধ্যয়নরত এবং মতিহার হলের ১৫৯ নম্বর কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী।

শুক্রবার (১৯ আগস্ট ) বিকালে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতার নিজের রুমে এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন ভুক্তোভোগী এই শিক্ষার্থী। পরবর্তীতে রাত ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা এম তারেক নূরের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করেন তিনি।

অভিযুক্ত ভাস্কর রাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনুর অনুসারী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী এবং মতিহার হলের ১৩২ নম্বর কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী।

লিখিত অভিযোগে সামছুল ইসলাম জানান, তিনি মতিহার হলের ১৫৯ নম্বর রুমের একজন আবাসিক শিক্ষার্থী।পড়াশোনার পাশাপাশি মোবাইল সার্ভিসিং করে জীবিকা নির্বাহ করেন এবং পরিবার চালান। গত ১৫ আগস্ট মতিহার হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ভাস্কর সাহা তাকে ফোন দিয়ে দেখা করার কথা বলেন। পরে দেখা করলে ভাস্কর চাঁদা দাবি করেন। এরপর টাকার জন্য প্রতিনিয়ত ফোন দেন এবং মানসিকভাবে টর্চার করতে থাকেন। টাকা দিতে না পারায় বিকাল ৩টায় ভাস্কর সাহা সামছুলকে রুমে ডেকে নেন। সেখানে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত আটকে রেখে রড ও স্ট্যাম্প দিয়ে মারধর করেন।

নির্যাতনের বিষয়ে সামছুল সাংবাদিককদের বলেন, ‌’ভাস্কর আমাকে চাকু ঠেকিয়ে আমার মানিব্যাগে থাকা আনুমানিক ২০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। টাকাগুলো সার্ভিসিংয়ের জন্য কাস্টমারদের কাছ থেকে এডভান্স হিসেবে নিয়েছিলাম আমি। বিষয়টি সাংবাদিকদের জানালে বুয়েটে নিহত আবরারের মতোই আমার পরিণতি হবে বলে হুমকি দেয়। আমি চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।’

নির্যাতনের বিষয়টি সম্পূর্ণ অস্বীকার করে মতিহার হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ভাস্কর সাহা বলেন, ‘সামছুলের সঙ্গে এমন কিছু হয়নি। আমি শুনেছি সে আমার হলে মোবাইল সার্ভিসিং করে। মোবাইল ঠিক করার জন্যই আমার দুই ছোট ভাইয়ের সঙ্গে তার কথা হয়। আমাকে ফাঁসানোর কোনো পরিকল্পনা হচ্ছে।বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাচ্ছি।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, ‘অভিযোগের বিষয়টি আমরা জেনেছি। এরকম কিছু হয়ে থাকলে অবশ্যই সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা এম তারেক নূর বলেন, ‘একজন ছাত্র লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। তাকে শারিরীকভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। আমি তার শরীরের আঘাতের চিহ্নও দেখেছি। অভিযুক্ত শিক্ষার্থী একটি ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে জানতে পেরেছি। আমি লিখিত অভিযোগটি ইতোমধ্যেই প্রক্টর দপ্তরে প্রেরণ করেছি।’

এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের মতিহার হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের হলের এক ছাত্রকে নির্যাতনের বিষয়টি প্রক্টর দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে৷ ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন

শুক্রবার রাতেই ছাত্র নির্যাতনের ঘটনায় তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর আরিফুর রহমানের নেতৃত্বে এই কমিটিতে আছেন-সহকারী প্রক্টর ও ফার্মেসি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আল মামুন এবং ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জহুরুল আনিস

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, অভিযোগটির ভিত্তিতে আমাদের প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যদের নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট সাপেক্ষে দ্রুত সময়ের মধ্যে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা হবে।

বিএনএ/সাকিব, এমএফ

Loading


শিরোনাম বিএনএ